আক্রমণাত্মক মানসিকতা রাখতে চান রিয়াদ

করোনা ভাইরাসের প্রকোপের ভিতর প্রথম বারের মতো দেশের বাইরে সিরিজ খেলতে গিয়ে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। সিরিজ চলাকালীন জৈব সুরক্ষা বাবো বাবলে থাকা না লাগলেও সফরের শুরুতে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে সফরকারী ক্রিকেটারদের। কঠিন করোনা প্রটোকল মেনে চলেও নিউজিল্যান্ডের সুযোগ সুবিধা নিয়ে সন্তুষ্ঠ বাংলাদেশ দল।

নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ডের প্রথম তিন দিন হোটেলে নিজ নিজ কক্ষে বন্দি থাকতে হয়েছে ক্রিকেটারদের। এরপর দুই দফা করোনা টেস্টে সবাই নেগেটিভ আসার পর অষ্টম দিন থেকে শিথিল করা হয়েছে কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম। নিয়ম শিথিলের পর অনুশীলন করার সুযোগ দিলেও সেখানে বেঁধে দেওয়া হয়েছে নিয়ম।

হোটেল থেকে ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে অনুশীলনে যেতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। আর অনুশীলনের জন্য প্রতিদিন ২ ঘন্টা সময় দেওয়া হচ্ছে মাহমুদউল্লাহ-তামিমদের। এতো সীমাবদ্ধতার পরেও অনুশীলন করার সুযোগ পাচ্ছেন এটা নিয়েই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

ক্রাইস্টচার্চ থেকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আমরা যে অনুশীলন চালিয়ে যেতে পারছি। দারুণ সুযোগ-সুবিধা এখানে। উইকেটগুলোও খুব ভালো। ভালোভাবে অনুশীলন করতে পারছি। যে দুই ঘণ্টা রোজ সময় পাচ্ছি নিশ্চিত করছি এই সময়ে যেন ঠিকমত অনুশীলন করতে পারি। রানিং, ফিটনেস, ফিল্ডিং নিয়ে কাজ করছি; উপভোগ করছি। কোয়ারেন্টাইনের আর এক দিন আছে। করোনা পরীক্ষায় সবাই নেগেটিভ হলে বাইরে যাওয়ার অনুমতি পাব।

দেশের মাটিতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স যে রকম আশা জাগানিয়া; বিদেশের মাটিতে ঠিক তার উল্টো। সেটা আরো স্পষ্ঠ হয়ে ওঠে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান দেখলে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এর আগে ৯ টেস্ট, ১৩ ওয়ানডে ও ৪ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে সব গুলো ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। তবে মাহমুদউল্লাহ জানিয়েছেন এসব বিষয় না ভেবে এবার আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে ভালো করতে চান তাঁরা।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হয়তো বা নিউজিল্যান্ড দল এখন খুব ভালো ফর্মে আছে। তারা টি-টোয়েন্টি সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে। এ জিনিসগুলো মাথায় না এনে বরং আমরা আমাদের শক্তির এবং দুর্বল বিষয়গুলোর দিকে ফোকাস করতে পারি তাহলে আমাদের খেলার জন্যও ভালো হবে এবং আমি মনে করি আমাদের আক্রমণাত্বক ক্রিকেট খেলার মনমানসিকতা থাকলে ইনশাআল্লাহ্‌ আমরা ভালো করব।’

উপমহাদেশের উইকেট থেকে নিউজিল্যান্ডের উইকেট গুলোতে একটু বেশি বাউন্স থাকে এবং মাঠে দেখা যায় প্রচন্ড বাতাস। তাই কিউই কন্ডিশনে তুলনামূলক বোলারদের জন্য কম সুবিধা থাকে। তবে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বিশ্বাস করেন লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে পরিকল্পনা কার্যকর করতে পারলে এরকম কন্ডিশনেও ভালো করা সম্ভব।

মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘বোলারদের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং আমার মতে, ওদের কার্যকর লেভেলটা কোন জায়গায় আছে ওটা নিশ্চিত করা এবং তাদের মানসিকতা কেমন তা নিশ্চিত করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ এখানে লেন্থের বিষয়টা খুবই জরুরি। লেন্থে একটু বেখেয়াল হলেই বাউন্ডারি অপশনগুলো বেড়ে যায়। তো এ জিনিসগুলা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যেন আমরা সহজে বাউন্ডারি অপশন না দেই এবং ঠিক লাইন-লেন্থ ধারাবাহিকভাবে কার্যকর করতে পারি অইটা ফোকাস রাখতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সবাই জানি যে, নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনটা সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং এবং আমাদের জন্য কোনোকিছুই এত সহজ হবে না। সব মিলিয়ে আমার মনে হয় দল হিসেবে আমাদের ভালো পারফর্ম করতে হবে। ব্যাটিং, বোলিং ফিল্ডিং- তিন বিভাগেই।’

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে গত মাসের ২৩ তারিখে নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার পর থেকেই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। আর একদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তৃতীয় দফা করোনা টেস্টে সবাই নেগেটিভ হলে কুইন্সটাউনে সাত দিনের ট্রেনিং ক্যাম্প করবে সফরকারীরা।

২০ মার্চ ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে শুরু হবে সিরিজ। ২৩ মার্চ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে হ্যাগলি ওভাল, ক্রাইস্টচার্চে এবং ২৬ মার্চ শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে বেসিন রিজার্ভ, ওয়েলিংটনে।

ওয়ানডে সিরিজ শেষে ২৮ মার্চ সেডন পার্ক, হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি। ৩০ মার্চ ম্যাকলিন পার্ক, নেপিয়ারে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শেষে ইডেন পার্ক, অকল্যান্ডে ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে শেষ টি-টোয়েন্টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link