সম্প্রতি একটি সাক্ষাতকারের পর সাকিব ইস্যুতে সরগরম ক্রিকেট পাড়া। তবে ঘটনার সূত্রপাত আরো মাসখানেক আগে।
হঠাত এক শুক্রবার সকালে জানা যায় আইপিএল খেলতে যাওয়ার জন্য সাকিব ছুটি চেয়েছেন এবং সেই ছুটি মঞ্জুর করেছে বিসিবি। তবে এরপর বিসিবি সভাপতি সহ অনেক বিসিবি পরিচালককেও সাকিবের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করতে শোনা যায়। বিসিবি সভাপতি পাপন তো খানিকটা রাগান্বিত হয়ে এও বলেছিলেন যে চাইলে সবাইকেই ছুটি দেবে বোর্ড।
যাইহোক, মাসখানেক পরেও এই ইস্যুর উত্তাপ একটুও কমেনি বরং আরো বেড়েছে। এতদিন শোনা গেছে সাকিব টেস্ট খেলতে চান না, আইপিএল খেলতে চান। তবে সাকিব আবার এক ইন্টার্ভিউতে বলেছেন তিনি টেস্ট খেলতে চাননা এমন কিছু চিঠিতে লিখেননি। আসলেই কী তাই? সাকিব আসলে ঠিক কী কারণে ছুটি চেয়েছিলেন এবং কী ছিল সেটিতে আসুন তা একটু বোঝার চেষ্টা করি।
এই চিঠি প্রকাশ করেছে উৎপল শুভ্র ডট কম। সাকিব তাঁর চিঠিতে লিখেছিলেন যেহেতু এবছরই ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেক্ষেত্রে আইপিএলে খেলতে গেলেই তাঁর সেরা প্রতুতি নেয়া সম্ভব। তাই তিনি আইপিএল খেলার জন্য ছুটি চেয়েছেন। তবে সেই চিঠিতে তিনি বলেননি কতদিনের ছুটি চান । এমনকি শ্রীলঙ্কা সফরের কথা চিঠিতে থাকলেও তিনি টেস্টের ব্যাপারে কোনো কথাই সেই চিঠিতে ছিল না।
চিঠির একটি অংশে তিনি লিখেন, ‘আমরা ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছি। এটি আমাদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। আমি বিশ্বাস করি, আসন্ন আইপিএলে অংশ নেওয়া আমাকে এই মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্টের প্রস্তুতির সেরা সুযোগ দেবে। আমি অবহিত আছি যে, আইপিএল যখন হবে, বিসিবি একই সময়ে শ্রীলঙ্কায় একটি সফর আয়োজন করার পরিকল্পনা করছে।’
বিসিবি সাকিবের চিঠি পেয়ে এই ছুটি মঞ্জুর করেছেন তবে পুরো আইপিএলের জন্য নয়। কেননা আইপিএল হবে ৯ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত। কিন্তু বিসিবি সাকিবকে ছুটি দিয়েছে ১ এপ্রিল থেকে ১৮ মে পর্যন্ত। অর্থাৎ আইপিএলের শেষ অংশটি খেলতে পারবেন না তিনি। এই যে ছুটির সময়সীমা সেটি কিন্তু বিসিবিই বেঁধে দিয়েছে। কেননা সাকিব তাঁর চিঠির কোথাও লিখেননি তিনি কতদিন বা কত তারিখ ছুটি চান। ধারনা করা হচ্ছে ১৮ তারিখে পর শ্রীলংকা বাংলাদেশে যেই ওয়ানডে সিরিজ খেলতে আসবে তাঁর জন্যই সাকিবকে পুরো আইপিএল খেলার অনুমতি দেয়নি বিসিবি।
আবার এটাও ঠিক সাকিব নিশ্চই জানতেন যে এই সময়ে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কায় টেস্ট সিরিজ খেলতে যাবে। তাহলে সরাসরি চিঠিতে না লিখলেও তিনি তো টেস্ট সিরিজের না খেলারই অনুমতি চেয়েছেন। এদিকে আবার সাকিব বলেছেন তিনি বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি সবই খেলতে চান। কিন্তু যেহেতু বিশ্বকাপ ভারতে বিশ্বকাপ হচ্ছে তাই তিনি আইপিএল খেলতেই আগ্রহী।
এখন পরিস্থিতি আসলে এমন যে সাকিব টেস্ট খেলতে চান না সেটি বলা ঠিক হবেন না। আবার সাকিব বাংলাদেশের হয়ে সব ফরম্যাটেই খেলতে চান সেটিও বলা যাচ্ছে না। এই নিয়েই নিয়েই এখন যোগাযোগ মাধ্যমে তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই। অবশ্য তিনি নিজেই তো বলেছেন তিনি ছাড়া আমাদের জীবন বোরিং হয়ে যায়। তাই সাকিবকে নিয়েই গল্প হোক।