তরুণদের শুরু করুণ হারে

বাংলাদেশের ফিল্ডারদের ক্যাচ মিস ও ফিল্ডিং মিস এই সিরিজের সবচেয়ে নিয়মিত ঘটনা গুলোর একটি। ব্যাটিং ব্যর্থতার সাথে প্রতি ম্যাচেই ক্যাচ মিস ও ফিল্ডিং মিসের খেসারত দিয়ে বাজে ভাবে হেরেছে বাংলাদেশ। সফরের শেষ ম্যাচেও দৃশ্যপটের কোন পরিবর্তন হয়নি। একই ঘঠনার পুনরাবৃত্তি করে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচেও ৬৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।

প্রথমে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াটওয়াশ হওয়ার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হোয়াটওয়াশ হয়ে নিউজিল্যান্ড থেকে তাই কোন ম্যাচ না জিতেই দেশে ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। আজকের হার সহ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সব ফরম্যাট মিলিয়ে টানা ৩২ ম্যাচ হারলো বাংলাদেশ।

বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের ২ ঘন্টা পর শুরু হয় বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি। নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে শুরু হওয়ার কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে ১০ ওভার করা হয়।

ম্যাচ ফিটনেস না থাকায় নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পরিবর্তে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টির ইতিহাসের সপ্তম অধিনায়ক হিসাবে এই ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন লিটন দাস। লিটনের প্রথম অধিনায়কত্বের ম্যাচে বাংলাদেশকে ১৪২ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় নিউজিল্যান্ড।

বড় রান তাড়া করতে নেমে যে রকম শুরুর প্রয়োজন ছিলো টিম সাউদির করা ইনিংসের প্রথম ওভারে দুটি বাউন্ডারি মেরে সেরকম শুরুরই আভাস দেন সৌম্য সরকার। কিন্তু সৌম্যর ঝড় বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি টিম সাউদি। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে বাউন্ডারি হজম করলেও পঞ্চম বলে দুর্দান্ত ফিরতি ক্যাচ নিয়ে সৌম্যকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরের বলেই লিটন দাসকে বোল্ড করেন কিউই অধিনায়ক।

৪ বলে ১০ রান করেন সৌম্য সরকার এবং কোন রান না করেই বিদায় নেন লিটন দাস। প্রথম ওভারে লিটন সৌম্য ফিরে যাওয়ার পর আর ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৩ বলে ১৯ রান করে নাঈম শেখ ভালো শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি এই ওপেনার। টড অ্যাশলের প্রথম শিকার হয়ে নাঈম ফিরে যাওয়ার পর ঐ ওভারেই ৬ বলে ৮ রান করে আউট হয়ে যান সিরিজে প্রথম বারের মতো খেলতে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত।

এরপর ঝড় তুলতে ব্যর্থ হয়ে দ্রুত ফিরে যান আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। মেহেদী কোন রান করতে না পারলেএ আফিফের ব্যাট থেকে আসে ৮ রান এবং মোসাদ্দেক করেন ১৩ রান। শেষ পর্যন্ত ৯.৩ ওভারে সব কয়টি উইকেট হারিয়ে ৭৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।

নিউজিল্যান্ডের বোলারদের পক্ষে ৪ টি উইকেট শিকার করেন টড অ্যাশলে। এছাড়া টিম সাউদি ৩টি ও ১টি করে উইকেট শিকার করেন ফার্গুসন, অ্যাডাম মিলনে ও ফিলিপস।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ক্যাচ মিসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিউজিল্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ফিন অ্যালেন। শরিফুল ইসলামের করা ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্রথমে মিড অফে রুবেল হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে জীবন ফিরে পাওয়ার পর ঐ ওভারেই মিড অনে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান অ্যালেন।

দুই বার জীবন পেয়ে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন কিউই এই ওপেনার। উদ্বোধনী জুটিতে  মাত্র ৩৪ বলে ৮৫ রান যোগ করে ১৯ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে গাপটিল আউট হয়ে গেলেও ইনিংসের শেষ ওভার পর্যন্ত তান্ডব চালান ফিন অ্যালেন। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে আউট হওয়ার আগে অ্যালেনের ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৭১ রান।

এছাড়া গ্লেন ফিলিপসের ব্যাট থেকে আসে ৬ বলে ১৪ রান এবং ড্যারিল মিশেল করেন ৬ বলে ১১ রান। বাংলাদেশি বোলারদের ভিতর ১ টি করে উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ, শেখ মেহেদী হাসান ও শরিফুল ইসলাম।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড: ১৪১/৪ (ওভার: ১০; গাপটিল- ৪৪, অ্যালেন- ৭১, ফিলিপস- ১৪, মিশেল- ১১*) (তাসকিন- ২-০-২৪-১, শরিফুল- ২-০-২১-১, মেহেদী- ২-০-৩৪-১, নাসুম- ২-০-২৯-০, রুবেল- ২-০-৩৩-০)

বাংলাদেশ: নাঈম- ১৯, সৌম্য- ১০, লিটন- ০, নাজমুল- ৮, আফিফ- ৮, মোসাদ্দেক- ১৩, মেহেদী- ০, শরিফুল- ৬, তাসকিন- ৫, রুবেল-) (মিলনে- ২-০-২৪-১, ফার্গুসন- ২-০-১৩-১, অ্যাশলে- ২-০-১৩-৪, সাউদি- ২-০-১৫-৩)

ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ৬৫ রানে জয়ী।

সিরিজ: নিউজিল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link