ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক সময়ই। সবচেয়ে বেশী বিভ্রান্তি রয়েছে আম্পায়ার্স কল নিয়ে। মাঠে ও মাঠের বাইরে আম্পায়ার্স কল নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করতে দেখা যায় অনেক ক্রিকেটারকে। বিভিন্ন সময় আম্পায়ার্স কলের নিয়মের পরিবর্তন, সংস্কার ও বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।
প্রবল আলোচনা সমালোচনার মুখে তাই এবার আম্পায়ার্স কলের নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। ডিআরএসে আম্পায়ার্স কল বাদ দেওয়া হবে কিনা এটা নিয়ে সিদ্বান্ত নিতে আলোচনায় বসেছিলো ক্রিকেটের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)।
সভা শেষে জানানো হয়েছে আম্পায়ার্স কল বহাল থাকছে তবে এলবিডব্লুউ রিভিউয়ের ক্ষেত্রে স্টাম্পের উচ্চতার সীমা তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে বেলের যে কোন প্রান্তে বল লাগলে বা স্ট্যাম্পের যে কোন জায়গাতে বল লাগলেই ব্যাটসম্যানকে আউট দেওয়া হবে।
আগের নিয়মে অনেক সময় দেখা যেত ফিল্ডিং দলের আবেদনের প্রেক্ষিতে আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর ব্যাটসম্যান রিভিউ নিলে টিভি আম্পায়ার সিদ্বান্ত না দিয়ে আম্পায়ার্স কল ঘোষণা করলে মাঠের আম্পায়ার তাঁর আগের সিদ্বান্তই বহাল রাখে। আবার ঐ একই বলে,সব কিছু এক থাকার পরেও আম্পায়ার যদি আউট না দেয়, তবে ফিল্ডিং দল রিভিউ নিলে আম্পায়ার্স কল হলে আগের সিদ্বান্তই থেকে যাচ্ছে।
মানে একই নিয়মে কখনো আউট হচ্ছে, আবার কখনো হচ্ছে না। সব কিছু নির্ভর করে আম্পায়ারের পূর্বের সিদ্বান্তের উপরেই। আরো সহজ ভাবে বললে মাঠের আম্পায়ার যে সিদ্বান্ত দিচ্ছে সেটা টিভি আম্পায়ারের কাছে গিয়ে পরিবর্তন খুব কমই হয়। যেটা সরাসরি ব্যাটে লাগছে, স্ট্যাম্প মিস করছে। ইমপ্যাক্ট লাইন এই সিদ্বান্ত গুলোই শুধু টিভি আম্পায়ার দিচ্ছে।
কিন্তু নতুন সিদ্বান্ত অনুযায়ী বলের সর্বনিম্ন ৫০ শতাংশ যদি তিনটি স্টাম্পের কোন একটিতে আঘাত করে তাহলে অন ফিল্ড আম্পায়ারের নট আউটের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কোনও দল যদি রিভিউ নেয় তবে সেটা আউট বলে ঘোষণা করা হবে।
একই বলে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আউট বা নট আউট দুটিই হতে পারে এটা দেখে বিভ্রান্ত হচ্ছে সমর্থকরাও। তাঁদের ধারণা, মাঠের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব না দিয়ে সরাসরি আউট বা নট আউট দিয়ে দিলেই সবার জন্য ভালো। কোনো আম্পায়ার্স কল নয়। কিন্তু আইসিসি জানিয়েছে স্পষ্ট ভুল গুলো সংশোধন করার জন্য আম্পায়ার্স কল রাখা জরুরি।
এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে আইসিসি জানায়, ‘ক্রিকেটে নির্ভুল সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্যই ডিআরএস প্রক্রিয়া আনা হয়েছে। একই সঙ্গে মাঠের আম্পায়ারের ক্ষমতাও যেন খর্ব না হয় সেই বিষয়টিও আমরা মাথায় রেখেছি। আম্পায়ার্স কল নিয়ে আইসিসি ক্রিকেট কমিটি বিস্তারিত আলোচনা করেছে ও বিশ্লেষণ করেছে।‘
আইসিসি আরো জানায়, ‘প্রযুক্তির সঙ্গে অনুমানের বিষয়টি মাথায় রেখে খেলার মাঠে আম্পায়ারের ভূমিকা নিশ্চিত করার জন্য ডিআরএসের উদ্দেশ্য ছিল খেলার স্পষ্ট ভুল গুলো সংশোধন করা। আম্পায়ার্স কল সেটাকে সিলমোহর প্রদান করেছে। আর সে কারণেই এটা বহাল থাকা খুব জরুরি।‘
মিটিংয়ের অনিল কুম্বলের নেতৃত্বে আরো অংশ নিয়েছিলো রাহুল দ্রাবিড়, মহেলা জয়াবর্ধনে, অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। ম্যাচ রেফারি রঞ্জন মাডুগালে, আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ এবং শ্রীলঙ্কার কোচ মিকি আর্থার। এদের সবাই আইসিসির ক্রিকেট কমিটির সদস্য।