১.
২২ অক্টোবর ১৯৯৪ সালের ঘটনা, উইলস ট্রায়াঙ্গুলার সিরিজে অস্ট্রেলিয়া বনাম পাকিস্তানের ম্যাচ। সময়টা তখন শেন ওয়ার্নের, কারণ অজি দলের লিডিং স্পিনার হিসেবে জায়গা পাকা করে নিয়েছেন। চাপে পড়ে গেছেন আরেক অজি স্পিনার টিম মে।
সাঈদ আনোয়ারের প্যাডে বল আঘাত হানতেই শরীরের সমস্ত শক্তি জড়ো করে আপিল করলেন টিম। প্রায় দশ সেকেন্ড ব্যাপী আবেদনে তবুও সাড়া দিলেন না আম্পায়ার। এদিকে ঘটে গেছে অদ্ভুত কাণ্ড! আবেদনের আতিশয্যে প্যান্টের ভেতরই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে ফেলেছেন টিম!
যতক্ষনে তিনি এবং দলের অন্যান্যরা বুঝতে পারলেন ততক্ষণে পেড়িয়ে গেছে অনেকটা সময়। টিম বলে উঠলেন, ‘ওহ গড, সরি বয়েজ! আমি কয়েক ওভার আগে একটু বেশিই জোরে আবেদন করে ফেলেছি। তাই, প্যান্টের মধ্যেই হয়ে গেছে। অবশ্য এটা এখন শুকিয়ে গেছে!’
সারাদিন সেভাবেই ক্রিকেট খেলে গিয়েছিলেন টিম। বুঝুন অবস্থা!
২.
ডব্লিউ জি গ্রেসের ক্রিকেট মাঠে আচরণ ছিল অনেকটা মাফিয়া ডনের মত। একবার গ্রেস ক্লিন বোল্ড হয়ে গেলেন, কিন্তু নির্বিকার চিত্তে তিনি স্ট্যাম্পের উপর বেল সাজিয়ে নিয়ে আবারও ব্যাট হাতে পজিশন নিয়ে নিলেন। মাঠের কেউই উচ্চবাচ্য করতে সাহস করলো না। আরেকবার, আম্পায়ার তাঁকে এলবিডব্লিউ দেবার পর তিনি বলে উঠলেন, ‘তাঁরা আমার ব্যাটিং দেখতে এসেছে আম্পায়ার, তোমার আম্পায়ারিং দেখতে নয়।’
এই ঘটনাগুলোকে মিথ মনে হলে, এবার যে ঘটনাটির কথা বলবো তাঁর প্রমাণ রয়েছে। বেশ কয়েকবার নিশ্চিত এলবিডব্লিউ আবেদনে সাড়া দিলেন না আম্পায়ার শুধু মাত্র গ্রেসের রক্তচক্ষুর দিকে তাকিয়ে। সবাই জানতো, গ্রেস পিচ ছেড়ে বের হয়ে যাবার পাত্র নন। এমন যখন অবস্থা, তখনই চার্লস কোর্টরাইট গ্রেসের দুটো স্ট্যাম্প উপড়ে ফেললেন এবং বলে বসলেন, ‘তুমি নিশ্চয়ই পিচ ছেড়ে চলে যাবার কথা ভাবছ না ডক্টর, একটা স্ট্যাম্প তো এখনও দাঁড়িয়েই আছে!’
৩.
কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের একটি তিন দিনের টেস্ট ম্যাচের প্রথম দিন বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়। দ্বিতীয় দিন টসে জিতে মিডলসেক্সের অধিনায়ক মাইক ব্রিয়ারলি সারেকে ব্যাটিংয়ে পাঠান, কিন্তু আবারও বৃষ্টির কারণে খেলায় বাঁধা পড়ে এবং দিন শেষে সারের স্কোর দাঁড়ায় ৮/১। পরের দিন অর্থাৎ শেষ দিন সারে প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ৪৯ রানে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, মিডলসেক্স তাদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে মাত্র এক বল মোকাবেলা করে। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৮৯ রানে অলআউট হয় সারে! মিডলসেক্সের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ১৩৯ রান। মাত্র এক উইকেট হারিয়েই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা, অপরাজিত হাফ-সেঞ্চুরি করে জয়ে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক মাইক ব্রিয়ারলি।
৪.
১৯৭০-৭১ সিজনে অজিত ওয়াদেকারের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায় ভারতীয় ক্রিকেট দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এক তারকা ব্যাটসম্যানের তখন অফ ফর্ম যাচ্ছে। অবস্থা এমন যদি ভারতের বিপক্ষে ব্যর্থ হন তাহলে দল থেকে বাদ পড়ে যাবেন। খেলা চলছে তাঁর হোম গ্রাউন্ডে, কিন্তু হিট করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে বল আকাশে!
বলের দিকে ছুটছেন তখনকার ভারতীয় দলের সেরা ফিল্ডার একনাথ সোলকার (ডাকনাম ইকি)। দর্শকদের ভেতর থেকে কেউ চিৎকার করে বলে উঠল – ‘ইকি, এই ক্যাচটি ছেড়ে দিলে, আমার বোনকে তোমায় দিয়ে দেব!’
ইকি ক্যাচটি ধরলেন, ওয়াদেকার এগিয়ে এসে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কি শুনেছিলে কেউ একজন তোমাকে কি অফার করেছে?’ ইকির নির্বীকার জবাব, ‘আমি তার বোনকে না দেখেই কি করে প্রস্তাব মেনে নেই!’
৫.
সাবেক উইন্ডিজ ফাস্ট বোলার মার্ভিন ডিলনের হাতে সেদিন নতুন বল। টেস্ট ম্যাচের প্রথম ওভার! পরপর তিনটি বল ব্যাটসম্যানের ব্যাট পরাস্ত করে উইকেট রক্ষকের হাতে! দর্শকদের ভেতর থেকে একজন নারী উঠে দাঁড়িয়ে বলে উঠলেন, ‘ডিলন, ফোর প্লে তো অনেক হল, এবার সত্যিকারের কিছু হোক।’