রাইফেলের অব্যর্থ নিশানা

তাঁর খেলা মাত্র ৩৫ টেস্টের পরিসংখ্যান বলে তিনি ছিলেন যথেষ্ট ঈর্ষণীয়। অস্ট্রেলিয়া সেভাবে কখনো ব্যবহার না করলেও ব্যাটিংটাও তিনি বেশ ভালোই জানতেন। তবুও যখনই দলে সুযোগ পেয়েছেন ব্যাটে-বলে নিজের ক্যারিশমা দেখিয়েছেন।

নিখুঁত লাইন লেন্থের উপর এই পেসারের দখলটা বেশ পাকা পোক্তই ছিল। তবে জাতীয় দলে ধারবাহিক ভাবে জায়গা দখল করতে পারেননি কখনো। যদিও প্রায় আট বছরের ক্যারিয়ার শেষ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বিশ্বকাপ জয় করে।

তাঁর খেলা মাত্র ৩৫ টেস্টের পরিসংখ্যান বলে তিনি ছিলেন যথেষ্ট ঈর্ষণীয়। অস্ট্রেলিয়া সেভাবে কখনো ব্যবহার না করলেও ব্যাটিংটাও তিনি বেশ ভালোই জানতেন। তবুও যখনই দলে সুযোগ পেয়েছেন ব্যাটে-বলে নিজের ক্যারিশমা দেখিয়েছেন।

ব্যাটিং-বোলিংয়ের জীবন পার করে ফেলেছেন সেই পল রাইফেল। এখন তিনি আইসিসির আম্পায়ার।

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে সেই সময় উঠে আসছে একের পর এক ক্রিকেট তারকা। সেই তারকাদের ভিড়ে এসেছিলেন পল রাইফেলও। ১৯৯২ সালে পার্থে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তার। অভিষেক ম্যাচেই তাঁর লাইন-লেন্থে মেপে বল করে যাওয়াটা চোখে পরেছিল সবারই।

তবে এরপরেও তিনি দল থেকে বাদ পড়েন প্রায় এক বছরের জন্য। ১৯৯৩ সালে অ্যাশেজ সিরিজে আবার দলে ডাক পান তিনি। যদিও সিরিজের প্রথম তিন টেস্টে একাদশে সুযোগ হয়নি তাঁর। চতুর্থ ম্যাচে ফিরে এসে প্রথম বারের মত নিজেকে চিনিয়েছিলেন এই পেসার। প্রথম ইনিংসে ৬৫ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। সেই ম্যাচে তিনি ১৫২ রান দিয়ে নিয়েছিলেন মোট ৮ টি উইকেট।

১৯৯৩ অ্যাশেজে তিন ম্যাচ খেলে মোট ১৯ উইকেট নিয়েছিলেন পল রাইফেল। ওই সিরিজে তাঁর বোলিং গড় ছিল মাত্র ২০.৮৪। তাঁর মধ্যে নিজের ক্যারিয়ার সেরা ৭১ রানে ৬ উইকেট নেয়া বোলিং ফিগারও ছিল। এরপর প্রায় বছরখানেক অস্ট্রেলিয়ার হয়ে নিয়মিত খেলেছেন এই পেসার।

তবে অ্যাশেজের সেই ধারাবাহিকতা ছিল না পরবর্তী ম্যাচ গুলোতে। ফলে আবার দল থেকে ছিটকে পড়েন লম্বা সময়ের জন্য। দুই বছর পর ১৯৯৫ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আবার ফিরে আসেন তিনি।

সেই সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ঘরে মাঠে ছিল এক অপ্রতিরোধ্য দল। প্রায় টানা ১৫ বছর ঘরের মাঠে কোনো সিরিজ না হারা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয় পল রাইফেলরা। সেখানে চার ম্যাচের সিরিজের প্রথমটাতেই জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।

দ্বিতীয় টেস্টে ড্র ও পরের ম্যাচে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজের শেষ ম্যাচে সিরিজ জয়ের আশা নিয়ে খেলতে নামে অস্ট্রেলিয়া। সেই ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে দলকে ম্যাচ ও সিরিজ জয় এনে দিয়েছিলেন পল।

তবুও দলে নিয়মিত হতে পারেননি কখনোই। বারবার বাদ পড়েছেন আবার ফিরেও এসেছেন। ব্যাট হাতেও সুযোগ পেলেই জানান দিয়েছেন তাঁর প্রতিভার কথা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর ৭৭ রানের ইনিংসটি সেই সাক্ষীই দেয়।

এছাড়া ইংল্যান্ডের সাথেও স্টিভ ওয়াহর সাথে জুটি গড়ে দলকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। সেখানে ৮৪ বলে ৩১ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এছাড়া লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করেও টেস্টে মোট ছয়টি হাফ সেঞ্চুরি আছে তাঁর।

সবমিলিয়ে মাত্র ৩৫ টেস্ট খেললেও ১০৪ উইকেটের মালিক তিনি। টেস্টে তাঁর বোলিং গড় মাত্র ২৬.৯৬। ব্যাট হাতেও প্রায় ২৭ গড়ে ৯৫৫ রান আছে তাঁর ঝুলিতে। তাছাড়া ৯২ ওয়ানডে ম্যাচেও নিয়েছেন ১০৬ উইকেট। হয়তো এই সংখ্যাগুলো আরো সমৃদ্ধ হতে পারতো অস্ট্রেলিয়ার সেই সোনালী যুগের ক্রিকেটার না হলে। তবুও ১৯৯৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন পল রাইফেল।

অবসরের পর তিনি মনোযোগ দেন আম্পায়ারিংয়ে। এখন তিনি আইসিসির এলিট আম্পায়ার প্যানেলের সদস্য। ২০০৯ সালে ওয়ানডে ম্যাচের মাধ্যমে আম্পায়ার হিসেবে অভিষিক্ত হন তিনি। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও তিনি আম্পায়ারের ভূমিকা পালন করেন। এখন পর্যন্ত মোট ৭৫ টি টেস্ট ও ১২৩ টি ওয়ানডে ম্যাচে আম্পায়ার ছিলেন পল রাইফেল।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...