সিমিং কন্ডিশন আর হাসান, বেটার লাভস্টোরি দ্যান টোয়াইলাইট

খানিক ওভারকাস্ট কন্ডিশন। উইকেটেও রয়েছে ময়েশ্চার। তাতে করে বলে মুভমেন্ট হওয়া অবধারিত। কিন্তু সে জন্যে প্রয়োজন ছিল সুশৃঙ্খল লাইন ও লেন্থ। হাসান রেডচেরি হাতে সে কাজটা করে গেছেন একেবারে শুরু থেকেই।

সিমিং কন্ডিশন আর হাসান মাহমুদ, এই সময়ের অন্যতম সেরা ‘লাভ স্টোরি’। চিপকে প্রথমে বোলিং নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ১৯৮২ সালের পর এবারই প্রথম। আর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনই করলেন হাসান মাহমুদ। ভারতের তুখোড় টপ অর্ডারকে মুহূর্তের মধ্যেই ধূলিসাৎ করে দিলেন।

খানিক ওভারকাস্ট কন্ডিশন। উইকেটেও রয়েছে ময়েশ্চার। তাতে করে বলে মুভমেন্ট হওয়া অবধারিত। কিন্তু সে জন্যে প্রয়োজন ছিল সুশৃঙ্খল লাইন ও লেন্থ। হাসান রেডচেরি হাতে সে কাজটা করে গেছেন একেবারে শুরু থেকেই। আর তাতে করে রোহিত শর্মার পর, বিরাট কোহলিও তার শিকারে পরিণত হয়েছেন। মাঝে অবশ্য শুভমান গিল হাসানকে একটা উইকেট উপহার হিসেবেই দিয়ে গেছেন। ভাল বোলিংয়ের উপহার তো তার প্রাপ্য।

ভারতীয় ব্যাটারদের দারুণ দ্বিধাগ্রস্ত করে রেখেছিলেন হাসান মাহমুদ। কখনও বল আসছে স্ট্যাম্প চ্যানেলে। কখনও আবার অফ স্ট্যাম্পের বাইরে ব্যাটারের ব্যাট ঘেঁষে বল চলে যাচ্ছে লিটন দাসের দস্তানায়। কখন কোন বল কোন দিকে অগ্রসর হবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না রোহিত। একদফা তো প্যাডেও বল লাগল। আবেদন করেও সারা পাওয়া গেল না আম্পায়ারের।

রিভিউ নিয়ে জানা গেল, অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন রোহিত শর্মা, তাও আবার আম্পায়ারের কলে। যদিও শেষ রক্ষা তার হয়নি। দ্বিধাগ্রস্ত রোহিতের ব্যাটের খোঁচা লেগে বল চলে যায় স্লিপ কর্ডোনে। অধিনায়ক শান্ত কি আর ভুল করতে পারেন! তিনি লুফে নিলেন ক্যাচ। প্রথম উইকেটের পতন হাসানের হাত ধরে।

এরপর শুভমান গিল এলেন, তাকেও সেটআপ করতে চাইলেন। তবে লেগ সাইড দিয়ে বেড়িয়ে যাওয়া বলে ফ্লিক করতে চাইলেন শুভমান। তখনও ব্যাট থেকে তার রান আসেনি। একটু অধৈর্য হয়ে গিয়েছিলেন সম্ভবত। আর তাতেই ভাল বল করবার উপহার চলে যায় হাসানের পকেটে। শুভমান ফেরেন শূন্য রানে।

তার বিদায়ে অবশ্য চেন্নাইয়ের সমর্থকরা খুশিই হয়েছিল। কেননা মাঠে নেমেছিলেন বিরাট কোহলি। বিষয়টাকে হাসান খানিক পার্সোনালি নিয়ে ফেলেন যেন। বিরাটের উইকেটও নিজের করে নিতে চাইলেন। চেন্নাইকে স্তব্ধ করতে চাওয়ার মত সুযোগ হাতছাড়া কেনই বা করতে চাইবেন হাসান।

বিরাটের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের দুর্বলতা তো আর নতুন কিছু নয়। কাভার ড্রাইভটা যেমন দুর্দান্ত খেলেন বিরাট, তেমনই পঞ্চম অথবা ষষ্ঠ স্ট্যাম্পের বলে বেশ ধুঁকেছেন তিনি তার পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে। হাসান সে বিষয়টি জানতেন। তাই তো আবারও কখনও ভেতরে, কখনও বাইরে বলের মুভমেন্ট করাতে লাগলেন। শেষতক, বিরাট ফাঁদে পা দিলেন।

গুড লেন্থের অফ স্ট্যাম্পের বহু বাইরের বলে ড্রাইভ করতে চাইলেন। কিন্তু বলের নাগাল ঠিকমত পেলেন না বিরাট। ব্যাটের আলতো ছোঁয়া পেয়ে বল বন্দী লিটনের দস্তানায়। এদফা এম চিদাম্বারা স্টেডিয়ামে শুনশান নিরবতা। বাইশ গজের সামনে উচ্ছ্বাসে মেতেছে শুধু বাংলাদেশ দল। শেষ টেস্ট ইনিংসেও পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন হাসান, ভারতের বিপক্ষেও সেদিকে আগাচ্ছেন তিনি। আরও একটি ফাইফার হয়ত যুক্ত হতে চলেছে তার নামের পাশে।

Share via
Copy link