বায়ার্ন বধ মানেই অ্যাস্টন ভিলা, মাঝে ৪২ টি বছর

বাভারিয়ানদের বিপক্ষে ম্যাচ মানেই বিধ্বংসী একটা আক্রমণভাগ, অথচ সব উত্তাপ জল হয়ে গিয়েছে এমিলিয়ানো মার্টিনেজের দৃঢ়তায়। একের পর এক সেভ দিয়ে বারবার সফরকারীদের হতাশ করেছিলেন তিনি; জিইয়ে রেখেছিলেন বলার মত একটা চিত্রনাট্য লেখার আশা।

ভিলা পার্কে ১৯৮৩ সালে মোহনীয় সুরের ঝড় তুলেছিল ডুরান ডুরান, ব্রিটিশ পপ রক ব্যান্ড, অ্যাস্টন ভিলার ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্ব জয়ের এক বছর পরেই। তাঁদের সুরের জাদুতে এক হয়েছিল পুরো গ্যালারি। ৪১ বছর পর আরো একজন ডুরানের কীর্তি বুনো উল্লাসের জন্ম দিল একই মাঠে। যদিও, দু’টো ঘটনার মধ্যে তেমন কোনো সংযোগ নেই।

ডি বক্সের সামনে দাঁড়িয়েই ছিলেন ম্যানুয়েল নয়্যার, বল তখনো প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে। কিন্তু এরপরই চোখের পলকে ঘটে গেলো অনেক কিছু, পাউ তোরেসের বাঁকানো থ্রু পাস পেয়ে জন ডুরান এক মুহূর্তও নষ্ট করলেন না। বামপায়ের শট নয়্যারের মাথার উপর দিয়ে একেবারে জালে।

১৯৮৩ সালের পর ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ দেখার সুযোগ পেয়েছে ভিলার সমর্থকেরা। বহুল প্রতীক্ষিত নব্বই মিনিট কি দারুণভাবেই রাঙিয়ে রাখলেন ডুরান – তাঁর অবিশ্বাস্য গোলটা চোখে না দেখলে অতৃপ্তি থেকে যাবে আর দেখার পর স্কাই স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকারের মতই মুখ ফুটে অনবরত বের হবে ‘হোয়াট এ গোল, হোয়াট এ গোল’।

ভিলা পার্কে ম্যানুয়েল নয়্যারকে চমকে দেয়া এই গোলেই বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। নিজেদের জাল অক্ষত রেখে ১-০ গোলের রোমাঞ্চকর এক জয় পেলো তাঁরা।

এই বায়ার্নের সাথে অবশ্য সুখস্মৃতি আছে অ্যাস্টন ভিলার। ১৯৮২ সালে ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে জার্মান প্রতিনিধিদের হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল দলটি; সেই রাতের স্পিরিট, সেই রাতের গল্প আবারো ফিরে আসলো। ৪২ বছর আগে যা যা ঘটেছে ঠিক সেটারই পুনরাবৃত্তি ঘটলো যেন; একই সাথে মহাদেশীয় মঞ্চে পুনর্জীবন পেল ইংলিশ ক্লাবটি।

বাভারিয়ানদের বিপক্ষে ম্যাচ মানেই বিধ্বংসী একটা আক্রমণভাগ, অথচ সব উত্তাপ জল হয়ে গিয়েছে এমিলিয়ানো মার্টিনেজের দৃঢ়তায়। একের পর এক সেভ দিয়ে বারবার সফরকারীদের হতাশ করেছিলেন তিনি; জিইয়ে রেখেছিলেন বলার মত একটা চিত্রনাট্য লেখার আশা।

যদিও ম্যাচের দৃশ্যপটে টুইস্ট যোগ হতে পারতো আরো অনেক আগেই। বাইশ মিনিটের মাথায় পাউ তোরেস গোল করেই ফেলেছিলেন কিন্তু অফসাইডে কাটা পড়ে যায় সেই গোল।

তবে শেষ ভাল যার সব ভাল তাঁর – জুভেন্টাসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে হারের প্রায় চার দশক পরে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ফিরেছে অ্যাস্টন ভিলা। দুই ম্যাচের দুইটিতে জিতে লড়াইয়ের শুরুটা দুর্ধর্ষ ভঙ্গিতেই করলো তাঁরা, এখন কেবল এগিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা।

Share via
Copy link