পঁচা শামুকে পা কাটা – বহু প্রচলিত প্রবাদটা সত্য হলো রিয়াল মাদ্রিদের জন্য। গত পনেরো মাসের বেশি সময় ধরে অপরাজিত ছিল তাঁরা; বায়ার্ন মিউনিখ, ম্যানচেস্টার সিটির মত দলের বিপক্ষে খেলে ফেলেছিল তাঁরা। অপরাজিত চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল, অথচ এবার পুঁচকে লিলি হারিয়ে দিলো তাঁদের।
১৮ মে, ২০২৩ – চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে সেদিন বিধ্বস্ত হয়েছিল লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। এবার আরো একবার সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটলো। ১-০ গোলে হার, স্কোরবোর্ড অবশ্য ইতিহাদকে মনে করায় না কিন্তু মাঠের হতশ্রী পারফরম্যান্স সে কথাই বলে। নিজেদের চেনা ছন্দের ধারেকাছেও ছিলেন না দানি কারভাহালরা; গোলমুখেও ছিল না তীক্ষ্ণতা।
এদিন বিরতির আগ মুহূর্তে ভাগ্য গুণে পেনাল্টি পেয়েছিল স্বাগতিকরা, সেখান থেকে গোল করেন জোনাথন ডেভিড। ২০২১ সালের এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোল করেছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৬ ম্যাচ পর এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৪ ম্যাচ পর পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেলো রিয়াল মাদ্রিদ।
পুরো ম্যাচ জুড়ে ‘হেডলেস চিকেন’ রূপে ছিল দলটি। মাঠে কখনো বল নিয়ে ছুটেছে তাঁরা, কখনো আবার বলের পিছনে ছুটেছে। কিন্তু একবারও নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে পারেনি তাঁরা। নব্বই মিনিট ধরে ছিন্নভিন্ন ফুটবলীয় প্রদর্শনী দেখিয়েছে তাঁরা। চারজনের মিডফিল্ড বলার মত কিছু করতে পারেনি, ফরোয়ার্ডরাও অবিশ্বাসের জন্ম দেয়নি৷
ট্যাকটিক্যালি এদিন খানিকটা ভুল করেছিলেন কার্লো আনচেলত্তি। ম্যাচের শুরুর দিকে কামাভিঙা আর শুয়েমেনিকে খেলিয়েছেন পিভট হিসেবে, অন্যদিকে বেলিংহ্যাম আর ভালভার্দে ছিলেন ওয়াইড মিডফিল্ডার। এর ফলেই মূলত মাঠের মাঝখানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে রিয়াল মাদ্রিদ, এই অঞ্চলে বলার মত কোন সুযোগ তৈরি তো দূরে থাক ঠিকঠাক পাসিংও করতে পারেনি তাঁরা।
লুকা মদ্রিচ, কিলিয়ান এমবাপ্পে বদলি হিসেবে মাঠে নামার পর চিত্রপটে কিছুটা বদলে এসেছে ঠিকই কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গোলরক্ষক লুকাস সেভালিয়ের প্রশংসা প্রাপ্য অবশ্যই তবে এই ব্যর্থতার দায় মাদ্রিদ ফুটবলারদেরই। সম্ভবত সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন তাঁরা।