বাঁ-হাতে আঁকা ট্যাটু। নানা রকম আঁকিবুকি। ট্যাটুতে লেখা ‘পরিবার’। হাফ-সেঞ্চুরি করে সেই ট্যাটুটাই দেখিয়ে স্মরণ করলেন সৃষ্টিকর্তাকে। রিঙ্ক সিং বলেন, ‘এই ট্যাটু আমাকে সংগ্রামের দিন গুলোকে মনে করিয়ে দেয়।’
এই দিনটা দেখার জন্য তো তিনি সংগ্রাম কম করেননি। ধার-দেনায় ডুবে গিয়েছিলেন। পরিবার নিয়ে চলাটাও ছিল কঠিন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) নিলামে কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে নাম লেখান। নিলামের মঞ্চে পান আশি লাখ রুপি।
রিঙ্কুর জীবন পাল্টে যায় সেদিন থেকে। নিজের পরিবারের বিপদ আসান করার জন্য তিনি যুক্ত হন নতুন এক পরিবারে। পরিবারের নাম কেকেআর। সেখান থেকে ভারতের জাতীয় দল। এটাই এখন রিঙ্কু সিংয়ের পরিবার।
তাঁর জন্য মাঠের এই লড়াই তো খুবই তুচ্ছ। তানজিম হাসান সাকিবের ফুলটসটা দেখলেন কেবল। উইকেটরক্ষকের পেছন দিয়ে প্যাডেল করে ছক্কা। মানুষটা ওই একজনই, রিঙ্কু সিং। ২৬ বলে তিনি পৌঁছে গেলেন রিঙ্কু সিং।
যিনি পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতাতে জানেন তিনি আসলে সবই পারেন। বিশ্বের কোনো বোলিং আক্রমণ তাঁর সামনে কোনো ঘটনা নয়। বোলারদের মোমেন্টাম নষ্ট করতে জুড়ি নেই।
আর ব্যাকফুটে থাকা বাংলাদেশ দলের বোলারদের মোমেন্টাম তো এই রিঙ্কুর সামনে নষ্ট হতে বাধ্য। ক্রিজে যখন আসেন, তখন ষষ্ঠ ওভারেই ভারত তিন উইকেট হারিয়ে ফেলেছে। বোর্ডে যোগ হয়েছে মাত্র ৪১ রান।
সেখান থেকে শুরু হল নতুন এক সংগ্রাম। নতুন এক বিপ্লব। রিঙ্কুর জন্য সংগ্রাম মানেই বিপ্লব, ছোট করে তিনি ভাবতেই পারেন না। এবারও পারলেন না। নিতিশ রেড্ডির সাথে চতুর্থ উইকেট জুটিতে যোগ করলেন ১০৮ রান। এর মধ্যে খেললেন মোটে আটটা ওভার। বদলে গেল ভারতের ভবিষ্যৎ।
এই ভবিষ্যৎ পাল্টাতেই তো অনন্য রিঙ্কু, নিজের কিংবা দলের। শেষ অবধি আউট হলেন ২৯ বলে ৫৩ রান করে। নামের পাশে লেখা থাকল পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কা। এই সবগুলো ছক্কাই তাঁর সংগ্রামী বিপ্লবের বুকে একেকটি প্রতিরোধ। ভারতীয় ক্রিকেটের ময়দানে এই রিঙ্কুই তো সেরা বিপ্লবী!