বারো বছর, এক যুগ ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা অভেদ্য দূর্গ ভেঙে পড়লো এবার। ঘরের মাঠে অজেয় ভারতকে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ উপহার দিলো নিউজিল্যান্ড। নিজেদের ইতিহাসে আগে কখনোই ভারতের মাটিতে সিরিজ জেতেনি তাঁরা, কিন্তু এবার ইতিহাস রচিত হলো পুনেতে। আর এই ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের নায়ক মিশেল স্যান্টনার।
দ্বিতীয় টেস্টের ফলাফল স্রেফ বাম হাতেই লিখে ফেলেছেন তিনি। প্রথম ইনিংসে শিকার করেছেন সাত উইকেট; শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, সরফরাজ খানদের উইকেট এক তুড়িতেই ঝুলিতে পুরে নিয়েছেন। তাঁর অবিশ্বাস্য তাণ্ডবে মাত্র ১৫৬ রানে অলআউট হয় টিম ইন্ডিয়া, পিছিয়ে যায় ১০৩ রানে।
দ্বিতীয় ইনিংসেও অতিমানবীয় রূপে আবির্ভূত হন এই স্পিনার, ৩৫৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ভারতকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন নিমিষে। আরও একবার আউট করেছেন কোহলি, সরফরাজদের। সবমিলিয়ে নিয়েছেন ছয় উইকেট। তাতেই ১১৩ রানের জয় পেয়েছে কিউইরা।
মজার ব্যাপার, স্যান্টনার একাদশে ফিরেছিলেন ম্যাট হেনরির পরিবর্তে। এই হেনরি-ই মূলত প্রথম টেস্টে হারিয়ে দিয়েছিলেন ভারতকে। ব্যাঙ্গালুরুর মেঘলা কন্ডিশন পেয়ে রীতিমতো আগুনের গোলা ছুঁড়েছিলেন তিনি। স্রেফ ১৫ রান খরচ করেই শিকার করেছিলেন পাঁচ উইকেট; তাঁর বিরুদ্ধে আসলে জবাব জানা ছিল না টিম ইন্ডিয়ার। ফলাফল – ৪৬ রানে অলআউট।
দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকরা দারুণভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, কিন্তু সেখানেও এই পেসার বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। পর পর তিন উইকেট তুলে নিয়ে ভারতীয় লোয়ার অর্ডারকে কোন প্রভাব রাখতেই দেননি। কঠিন উইকেটে লোয়ার অর্ডার থেকে কিছু রান আসলে হয়তো ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারতো ভারত।
তবে টিম ম্যানেজম্যান্টের প্রশংসাও করতে হয়, দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স সত্ত্বেও হেনরিকে বাদ দেয়ার সাহস দেখিয়েছে তাঁরা। আর সেটাই দ্বিতীয় ম্যাচ জয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে – স্বয়ং ক্রিকেট বিধাতাও বোধহয় ব্ল্যাকক্যাপসদের পাশে ছিলেন।