নোমান আলী, সবচেয়ে দেরিতে ফোটা ফুল

অবশ্য এই তারকা কলি থেকে ফুল হয়ে ফুটেছেন দেরীতেই, ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয় তাঁর। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারফর্ম করতে সমস্যায় পড়তে হয়নি তাঁকে, বাদ পড়ার আগ পর্যন্ত ১৫ ম্যাচে ৪৭ উইকেট শিকার করেছিলেন তবু কেন যেন ভাবনার বাইরে চলে গিয়েছিলেন।

৩৮ বছর বয়সে কোন ক্রিকেটারের অবস্থা ঠিক কেমন হয় – যত বড় পারফর্মারই হোন, তিনি তখন নির্ঘাত অবসরের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু নোমান আলী যেন ভিন্ন গ্রহের কেউ, ভিন্ন পথে হেঁটে নিজের একটা সোনালী অধ্যায় রচনা করে চলছেন তিনি। বাকিরা যে জায়গায় দাঁড়িয়ে বিদায়ের কথা ভাবে, ঠিক সে জায়গায় দাঁড়িয়ে তিনি জিতলেন আইসিসির ম্যাচ সেরা ক্রিকেটারের পুরষ্কার।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে এই স্পিনার একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন ইংলিশ দম্ভ। বাজবল অসহায় হয়ে পড়েছিল তাঁর ঘূর্ণির সামনে, তাঁর ঘূর্ণির সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল বেন ডাকেট, হ্যারি ব্রুকরা। তাই তো ইনফর্ম কাগিসো রাবাদা আর ভারত বধের নায়ক মিচেল স্যান্টনারকে টপকে ম্যাচ সেরা বনে গেলেন তিনি – এ যেন তাঁর বয়সকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর স্বীকৃতি।

এই বাঁ-হাতি অবশ্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছিলেন ইংলিশদের বিপক্ষেই, দীর্ঘ সময় দলের বাইরে থাকার পর ডাক আসে তাঁর দরজায়। আকস্মিক সুযোগ সর্বোচ্চ সেরা উপায়েই কাজে লাগালেন তিনি।

প্রথম ম্যাচে সুযোগ পাননি, দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে জায়গা পান নোমান। এরপর কেবল তাঁর জয়গান শোনা গিয়েছে ক্রিকেটের বাইশ গজে, দুই ম্যাচ মিলিয়ে বিশ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি। বোলিং গড় ছিল স্রেফ ১৩.৮৫ আর স্ট্রাইক রেট ২৭.২৫ – দুই দিক দিয়েই পুরো সিরিজের বাকি সব বোলারের ওপরে অবস্থান তাঁর।

অবশ্য এই তারকা কলি থেকে ফুল হয়ে ফুটেছেন দেরীতেই, ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয় তাঁর। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারফর্ম করতে সমস্যায় পড়তে হয়নি তাঁকে, বাদ পড়ার আগ পর্যন্ত ১৫ ম্যাচে ৪৭ উইকেট শিকার করেছিলেন তবু কেন যেন ভাবনার বাইরে চলে গিয়েছিলেন।

হয়তো এটাই ছিল আরো একটা ‘গ্র্যান্ড রিডেম্পশন’ এর উপলক্ষ। বাদ পড়ে আরো তীব্র হয়েছে তাঁর ফেরার ইচ্ছে, আরো তীব্র হয়েছে নিজের সাথে নিজের লড়াইয়ের জেদ – নোমান আলী আসলে বাগানের দেরিতে ফোটা ফুল, মালির দীর্ঘ অপেক্ষার পুরষ্কার। এখন তাঁর কেবল সৌরভ ছড়ানোর পালা।

 

Share via
Copy link