ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ( আইপিএল) বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স। রিটেনশন লিস্ট থেকে ৬ জন তারকা খেলোয়াড়কে ধরে রাখতে গিয়েই তাদের খরচ হয়ে গিয়েছে ৫৭ কোটি রুপি। নির্ধারিত ১২০ কোটি টাকার মধ্যে বাকি আছে মাত্র ৬৩ কোটি রুপি।
সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের অনেকেই এবার ভিড়বেন নতুন দলে। এই সুযোগটাই লুফে নিতে চাইবে গত মৌসুমে নাস্তানাবুদ হওয়া চেন্নাই সুপার কিংস ও দিল্লী ক্যাপিটালস। মেগা অকশনে কলকাতার ছেড়ে দেওয়া ৫ খেলোয়াড় নিয়ে রীতিমত ‘নিলাম যুদ্ধ’ হতে পারে চেন্নাই ও দিল্লীর মধ্যে। সেই পাঁচজন তারকা কারা? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
* রহমানউল্লাহ গুরবাজ (আফগানিস্তান)
পাওয়ার হিটিং এবং দ্রুত রান তোলায় বেশ নামডাক আছে আফগান ওপেনার গুরবাজের। গত মৌসুমে কলকাতা তাকে ৫০ লাখে কিনলেও, প্রায় পুরোটা মৌসুম বেঞ্চেই ছিলেন গুরবাজ। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য সল্ট ইংল্যান্ড ফিরে গেলে ভাগ্য খোলে তার। ফাইনালে ৫ চার ও ২ ছক্কায় তার ৩২ বলে ৩৯ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসটি কলকাতাকে শিরোপা জিততে সহায়তা করে।
তিনি বহু আগে থেকেই ধোনির প্রতি ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণার কথা জানিয়ে আসছেন। ব্যাটিং অর্ডারে স্থিতিশীলতা আনতে তাই তাকে নিজেদের ডেরাতেই ভেড়াতে চাইবে দলটি। এদিকে ঋষাভ পান্তকে হারানো দিল্লীও চাইবে একজন মারকাটারি স্টাইলিশ উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে তাদের দলে নিতে।
* নিতিশ রানা (ভারত)
সাবেক কলকাতার অধিনায়ক নিতিশ রানা গত মৌসুমে ম্যাচ খেলেছিলেন মাত্র দু’টি। আঙুলের ইনজুরি থেকে ফিরে আসলেও পরবর্তীতে দলে জায়গা হয়নি তার। কারণ, উইনিং কম্বিনেশন ভাঙতে চাইনি কলকাতা।
তবে ২০২৪ আইপিএলেও ৮ কোটিতে বিক্রি হওয়া রানা এ আসরেও থাকবেন অনেক দলের নজরে। বিশেষ করে দিল্লীতে এই মুহূর্তে অধিনায়ক সংকট। কলকাতা, মুম্বাইয়ের হয়ে খেলা অভিজ্ঞ রানাকেই হয়ত সেই মুকুট পরাতে পারে তারা। অপরদিকে, শিভাম দুবের পার্টনার হিসেবে মিডল অর্ডারটা মজবুত করতে চেন্নাইও হয়ত তাকে পেতে মরিয়া হবে।
* ভেঙ্কটেশ আইয়ার (ভারত)
২০২১ থেকেই কলকাতার অন্যতম অস্ত্র ছিল ভেঙ্কটেশ আইয়ার। গত সিজনেও ১৪ ম্যাচে ৩৭০ রান করেছিলেন তিনি। গড় ৪৬.২৫, স্ট্রাইকরেট টাও নজর কাঁড়া ১৫৮.৮০। ফাইনালে খেলেছিলেন ২৬ বলে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস।
আইয়ার যেমন ওপেনিং করেন, তেমনি মিডিল অর্ডারেও ব্যাট করতে পারেন। মাঝেমধ্যে মিডিয়াম পেসার হিসেবে বেশ কার্যকরীও হয়ে ওঠেন। ফ্লেক্সেবিলিটির জন্য চেন্নাইয়ের রাডারেই থাকবেন তিনি। এদিকে গত সিজনের দুই ওপেনার পৃথ্বী শ ও জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক কে ছেড়ে দেওয়া দিল্লিও তাই চাইবে তাকে চড়া দামে হলেও ঘরে তুলতে।
* ফিল সল্ট (ইংল্যান্ড)
গত সিজনে ১২ ম্যাচে ৩৯.৫৫ গড়ে ৪৩৫ রান করেছিল সল্ট, স্ট্রাইক রেটটা ১৮২। ধুমধাড়াক্কা টি-টোয়ান্টি স্পেশালিষ্ট বলতে যা বুঝায় তিনি তাই। পাওয়ার প্লে তে দ্রুত রান তুলতে পারে এমন ওপেনারই খুঁজছে দিল্লি আর চেন্নাই। সুতরাং সল্ট নিয়ে বেশ কাড়াকাড়িই বাধবে হয়ত দিল্লি আর চেন্নাইয়ের মাঝে।
* শ্রেয়াস আইয়ার (ভারত)
গত সিজনে ১৪ ম্যাচে ৩৯ গড় আর প্রায় ১৪৭ স্ট্রাইক রেট ব্যাট করেছিলেন আইয়ার। সাড়ে তিনশোর উপরে রান করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে কলকাতাকে জিতিয়েছিল শিরোপা। তবে তাকে ছেড়ে দিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে কলকাতা। আইয়ার দিল্লীকেও ফাইনালে তুলেছিল ২০২০ আইপিএলে। সুতরাং ‘ঘরের ছেলে’ আবারও ডেরায় ফেরাতে চাইবে দিল্লী। অন্যদিকে, ধোনি পরবর্তী যুগে একজন একজন চ্যাম্পিয়ান অধিনায়কই হয়ত খুঁজছে চেন্নাই।