পা দিয়ে নয়, হৃদয় দিয়ে খেলে আর্জেন্টিনা

গত কয়েক বছরে দুইটা কোপা আমেরিকা এবং একটা বিশ্বকাপ জিতেছে দলটি - আর সর্বকালের সেরা ফুটবলার তো তাঁদের হয়েই খেলে যাচ্ছেন। আক্ষেপ করার জায়গাটুকুও নেই এখন আর। কিন্তু আর্জেন্টিনার এমন সোনালী সময়ের রহস্য কি?

একটা ঘোর অমানিশা নেমে এসেছিল আর্জেন্টাইন ফুটবলের আকাশে, কতগুলো বছর ফুটবল বিধাতার কাছে হাতজোড় করে প্রার্থনা করেছিল সমর্থকেরা তবু মেলেনি এক ফোঁটা স্বস্তি। তবে একবার যখন ভাগ্য মুখ তুলে তাকিয়েছে এরপর আর থামাথামির বালাই নেই।

গত কয়েক বছরে দুইটা কোপা আমেরিকা এবং একটা বিশ্বকাপ জিতেছে দলটি – আর সর্বকালের সেরা ফুটবলার তো তাঁদের হয়েই খেলে যাচ্ছেন। আক্ষেপ করার জায়গাটুকুও নেই এখন আর। কিন্তু আর্জেন্টিনার এমন সোনালী সময়ের রহস্য কি?

দেশটাতে ফুটবল স্রেফ একটা খেলার চেয়ে অনেক বেশি কিছু। পাড়ার মাঠ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম ফুটবল পায়ে পেলেই প্রতিটা আর্জেন্টাইনের রক্তে নাচন উঠে। তাঁরা কেবল পা দিয়েই খেলে না, আত্মা দিয়ে খেলে – প্যাশন, ক্রিয়েটিভিটি আর ডেডিকেশন একবিন্দুতে এসে মিলে যায়। সম্ভবত এই একটা কারণে তাঁরা বাকিদের চেয়ে অনন্য।

আলবিসেলেস্তারা ফুটবলকে নিজেদের মত করে ব্যাখ্যা করতে জানে। বল নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে পাসিং, ড্রিবলিং, শুটিং – প্রতিটা ক্ষেত্রে তাঁদের নিজস্ব একটা শিল্প আছে। দিয়েগো ম্যারাডোনা কিংবা লিওনেল মেসি সেই শিল্পের সবচেয়ে সেরা শিল্পী।

লাতিন আমেরিকার এই ভুখন্ডে একটা ইকোসিস্টেম গড়ে উঠেছে ফুটবলকে ঘিরে। ছোটবেলা থেকেই প্রতিভা আর শৃঙ্খলার সমন্বয়ে তৈরি হন এক একজন ক্ষুদে তারকা। সেই সাথে পুরো সমাজ এক হয়ে এসব তারকাদের সাহায্যে আবির্ভূত হয়।

ফুটবল আর্জেন্টাইনদের জন্য একটা ভাষা বটে; প্রতিটা পরিবারে, প্রতিটা প্রজন্মে ফুটবল হয়ে উঠেছে যোগাযোগের মাধ্যম। নিজেদের আবেগ, অনুভূতি, সৃজনশীলতা তাঁরা ছড়িয়ে দিচ্ছেন এই একটা খেলার মাধ্যমেই। আর সেই সাথে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সম্ভাবনার স্ফূলিঙ্গ।

লিওনেল মেসির রাজ্যে প্রতিটা শিশুই একজন একজন ভবিষ্যৎ; প্রতিটা ম্যাচ, প্রতিটা ফুটবলার, এমনকি ডাগআউটে থাকা কোচ সবকিছুই এই শিশুদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। এভাবেই ম্যারাডোনা থেকে মেসি হয়ে আর্জেন্টিনার শ্রেষ্ঠত্ব টিকে আছে যুগের পর যুগ।

Share via
Copy link