আজ অনুষ্টিত হচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের শেষ রাউন্ডের খেলা। নিয়ম অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক ফাইনাল না থাকলেও এবারের লিগে অঘোষিত ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল আবাহনী লিমিটেড ও প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। আর এই ম্যাচে প্রাইম ব্যাংককে ৮ রানে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নিশ্চিত করেছে আবাহনী।
আজকের ম্যাচের আগে ১৫ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ছিল এই দুই দল। তবে রানরেটে এগিয়ে ছিল আবাহনী। শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগের মুকুটও পড়েছে তারাই। আবাহনীর জয়ে ব্যাট হাতে অবদান রেখেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং বল হাতে অনবদ্য পারফরম্যান্স করেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
এর আগের দুই আসরেও চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল আকাশী নীল জার্সিধারীরা। আবাহনীর এটা হ্যাটট্রিক শিরোপা। সব মিলিয়ে ৪২ আসরে অংশ নিয়ে ২১তম বারের মতো শিরোপার স্বাদ পেল আবাহনী। যেখানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান নয় বার প্রিমিয়ার লিগের ট্রফি জিতেছে। আর আজকের ম্যাচ হেরে রানার্স আপ হওয়া প্রাইম ব্যাংক শিরোপা জিতেছিল একবার।
আজ প্রাইম ব্যাংকের সামনে সুযোগ এসেছিল দ্বিতীয় বারের মত শিরোপার স্বাদ নেওয়ার। আবাহনীর দেওয়া লক্ষ্যটাও খুব একটা বড় ছিলোনা। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় হারতে হয়েছে প্রাইম ব্যাংককে। ১৫১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের জোড়া আঘাতে শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে প্রাইম ব্যাংক।
ইনিংসের প্রথম ওভারে ২ বলে ১ রান করে রনি তালুকদার ফিরে যাওয়ার পর তৃতীয় ওভারে ১২ বলে ১৩ রান করে ফিরে যান এনামুল হক বিজয়। ২০ রানে ২ উইকেট হারানোর পর এক প্রান্ত রুবেল মিয়া আগলে রাখলেও অন্য প্রান্তে নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে প্রাইম ব্যাংক। একে একে ফিরে যান রাকিবুল হাসান (৪), মোহাম্মদ মিঠুন (৬) ও নাহিদুল ইসলাম (১০)।
৬৬ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর আর ঘুঁড়ে দাঁড়াতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। শেষের দিকে অলক কাপালী ১৭ বলে ৩৪ রান করলেও সেটা শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে। ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান সংগ্রহ করে প্রাইম ব্যাংক। আবহানীর পক্ষে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন চারটি ও মেহেদী হাসান রানা দুটি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা আবাহনীর শুরুটা ভালো হয়নি। রানের খাতা খোলার আগেই ইনিংসের প্রথম বলে নাঈম শেখকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। এর পরের ওভারে রুবেল হোসেনের প্রথম শিকার হয়ে ছন্দে থাকা মুনিম শাহরিয়ার ৫ বলে ৩ রান করে ফিরে গেলে চাপে পড়ে আবাহনী।
দলীয় ১২ রানে দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর লিটন দাসের ব্যাটে ঘুঁড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আবাহনী। কিন্তু উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন। এনামুল হক বিজয়ের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে ফিরে যান ১৩ বলে ১৯ রান করে। ৩১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আবাহনীর হাল ধরেণ নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
চতুর্থ উইকেটে দুই জন যোগ করেন ৭০ রান। দারুণ খেলতে থাকা শান্তকে ফিরিয়ে দিয়ে এই জুটি ভাঙেন নাহিদুল ইসলাম। ৪০ বলে ৪৫ রান করে শান্ত ফিরে যাওয়ার পর দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন মোসাদ্দেক ও আফিফ হোসেন। কিন্তু ৭ বলে ১২ রান করে আফিফ ফিরে যাওয়ার পর ৩৯ বলে ৪০ রান করে ফিরে যান মোসাদ্দেকও।
১৩০ রানে ৬ উইকেট হারালেও শেষ দুই ওভারে ঝড় তোলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সাইফের ১৩ বলে ২১ রানের ছোট ঝড়েই লড়াই করার পুঁজি পায় আবাহনী। ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান সংগ্রহ করে আবাহনী। প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে দুটি উইকেট শিকার করেন রুবেল হোসেন।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী লিমিটেড: ১৫০/৭ (ওভার: ২০; লিটন- ১৯, শান্ত- ৪৫, মোসাদ্দেক- ৪০, সাইফউদ্দিন- ২১*) (রুবেল- ৪-০-২২-২)
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ১৪২/৯ (ওভার: ২০; রুবেল- ৪১, নাঈম- ২১, কাপালী- ৩৪*) (সাইফউদ্দিন- ৪-০-৩৬-৪)
ফলাফল: আবাহনী লিমিটেড ৮ রানে জয়ী।