মন-শরীর ও বিরাটের ব্যাটিং

লর্ডস টেস্টে ইংলিশদের ডেরায় এক রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে রয়েছে ভারত। বিরাট কোহলির অধিনায়কত্ব নিয়ে বেশ প্রশংসা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে তাঁর বাজে ফর্ম নিয়েও হচ্ছে বেশ আলোচনা-সমালোচনা। দল ভালো করলেও ব্যক্তিগতভাবে ঠিক নিজের চেনা ফর্মে ফিরতে পারছেন না বিরাট।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করেছিলেন দেড় বছর আগে! সেঞ্চুরি না পেলেও রান পাচ্ছিলেন ব্যাটে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতেও নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না ভারতীয় এই অধিনায়ক। এই সফরে এখন পর্যন্ত ২ টেস্টে তিন ইনিংসে মোটে ৬২ রান করেছেন তিনি!

তবে সাবেক ভারতীয় কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার খেয়াল করেছেন বিরাট ঠিকমতো পা মুভ করতে পারেননি। একই সাথে শরীরের বেশ বাইরের বলগুলো খেলার চেষ্টায় তিনি আউট হয়ে যাচ্ছেন। এক সাক্ষাৎকারে শচীন বলেন, ‘বিরাটের শুরুটা ভালো হয়নি। যদি শুরুটা ভালো না হয় তাহলে অনেক কিছু নিয়েই চিন্তা করতে হয়। আর কোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা বেশি থাকলে সেটা মুভমেন্টের উপরই প্রভাব পড়ে।’

২০১৪ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে ৪ টেস্টে মাত্র ১৩ গড়ে ১৩৪ রান করেছিলেন বিরাট। তবে ২০১৮ সালেই তিনি দুর্দান্ত কামব্যাক করেন। এবং ইংলিশদের ডেরায় ৫৯ গড়ে ৫৯৩ রান করেন তিনি! ২ সেঞ্চুরি আর ৩ ফিফটি করেছিলেন তিনি। সেই সাথে সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও হন তিনি।

শচীন বলেন, ‘যখন একজন ব্যাটসম্যান সেরা ছন্দে থাকে না; তখন হয় আপনি অনেক দূরে সরে যান নয়তো আপনার পা বেশি মুভ করবেন না। এটা সবার সাথেই হয়। ফর্মের সাথে আপনার মন এবং শরীরের একটা সামঞ্জস্য আছে।’

টেন্ডুলকার বর্তমান ইংল্যান্ড দল নিয়ে বলেন, জো রুট ছাড়া এই দলের সবাই প্রায় ভারতের পেস অ্যাটাকের সামনে আতংকে আছে। একমাত্র জো রুটই এই অ্যাটাকের সামনে সেঞ্চুরি করতে সক্ষম।

শচীন বলেন, ‘ইংল্যান্ডের কলাপ্স করার ইতিহাস আছে। আমি মনে করি এই জায়গায় তারা খেই হারিয়ে ফেলেছে। আপনি যদি তাদের ব্যাটিং অর্ডার দেখেন এদের মধ্যে কয়জন মাঠে নেমে সেঞ্চুরি করার মতো? এই দলে, জো রুট ছাড়া তেমন কাউকেই দেখি না আমি। আগে এই দলেই অ্যালিস্টেয়ার কুক, ইয়ান বেল, কেভিন পিটারসেন, জনাথন ট্রট, অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের মতো খেলোয়াড়েরা ছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘হ্যাঁ, তাঁদের একজন সেঞ্চুরি পেতে পারে কিন্তু রুট ছাড়া কেউ আছে যে ধারাবাহিক সেঞ্চুরি করতে পারবে? আমি কাউকেই খুজে পাই না। এটাই তাদের বর্তমান ব্যাটিং অবস্থা। যার কারণেই রুটের কাছে একমাত্র অপশন ছিলো ফিল্ডিং নেওয়া।’

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাজে পারফরম্যান্সের পর প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত বোলিং করেন পেসার জাসপ্রতি বুমরাহ। এরপর দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট শিকার করেন।

তাঁর ব্যাপারে শচীন বলেন, ‘আমি মনে করি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগে বুমরাহ সেভাবে লম্বা স্পেল বল করেনি। সে এমন এক ধরনের বোলার, যত বেশি বল করতে পারবে সে তত ভালো করবে। তাঁর যে শুধু হৃদয়ই আছে সেটা নয়; তার বুদ্ধিও অসাধারণ। আমরা দেখেছি সে কিভাবে বার বার শর্ট বল দেওয়ার পর হটাৎ দারুন এক স্লোয়ারে ওলি রবিনসনকে আউট করেছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link