ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দারুণ ছন্দে থাকলেও বিস্তর সমালোচনা হচ্ছে বিশ্বকাপের আগে এমন উইকেটে খেলা নিয়ে। তবে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন মনে করেন এখানে জয়টাই আসল; অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সিরিজের অভিজ্ঞতা কাজে না দিলেও আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপে যেতে চায় বাংলাদেশ।
মন্থর এবং টার্নিং উইকেট বানিয়ে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দেওয়ার পর পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকেও বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে মাত্র ৬০ রান অলআউট হয় কিউইরা। যেটা টি-টোয়েন্টিতে যৌথ ভাবে তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ।
৬১ রান তাড়া করতে নেমে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় পায় স্বাগতিকরা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় সাইফউদ্দিন জানিয়েছেন তাঁরা প্রতিটা ম্যাচ জেতার জন্যই খেলেন। কত রান তাড়া করে জয় আসলো এটা বড় বিষয় নয়। সমালোচনা হলেও এই অলরাউন্ডার মনে করেন এখানে জয়টাই আসল।
তিনি বলেন, ‘যখন আমরা ম্যাচ জিতি তখন শুধু ক্রিকেটার না সারা বাংলাদেশের মানুষ খুশি হয়। দিন শেষে আসলে সবাই বাংলাদেশের জয়টা দেখতে চাই। হয়তো কন্ডিশন একটু কঠিন বা কম রান হচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। আমরা প্রতিটা ম্যাচ জেতার জন্যই খেলি সেটা ১৯০ রান তাড়া করে হোক আর শুধু ৯০ রান তাড়া করেই হোক। জয়টাই আসল।’
দেশের মাটিতে বাংলাদেশ যে কন্ডিশনে খেলছে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে খেলতে হবে সম্পূর্ন ভিন্ন কন্ডিশনে। সাইফউদ্দিন মানছেন এরকম কন্ডিশনে খেলে গিয়ে বিশ্বকাপে আলাদা কন্ডিশনে খেলা চ্যালেঞ্জিং হবে বাংলাদেশের জন্য। এরপরেও সাইফউদ্দিন মনে করেন দেশের মাটিতে এই দুই সিরিজের অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে কাজে না লাগলেও আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়াটাই আসল।
তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ অবশ্যই, আমাদের যারা বোলার আছে তাঁরা জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকেই ভালো করে আসছে। সামনে বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার আছে, দুবাইতে খেলা হবে, আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। এখানে ভালো কিছু করে যদি আত্মবিশ্বাসটা নিয়ে যেতে পারি। ওটা বড় বিষয়।’
বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব শুরু হবে ১৭ অক্টোবর থেকে। কিন্তু অনুশীলন ক্যাম্প করতে ও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ দেশ ছাড়বে তিন অক্টোবর এবং ওমানে পৌছাবে চার অক্টোবর। এরপর শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড ও ওমান ‘এ’ দলের সাথে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। সাইফউদ্দিন মনে করেন চ্যালেঞ্জিং হলেও মানিয়ে নিতে চেষ্টা করবেন তাঁরা।
এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘বাংলাদেশ শেষ কয়েকটা সিরিজ দুর্দান্ত খেলেছে। যদিও বিশ্বকাপে কন্ডিশন আলাদা হবে, যেহেতু ওমানে গিয়ে অনুশীলনের সুযোগ পাবো। তখন মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবো। এখানকার অভিজ্ঞতা হয়তো কাজে আসবে না। ওখানে অনুশীলনের সুযোগ পাবো। আমরা উইকেটের সাথে যত মানিয়ে নিতে পারবো ততো ভালো হবে। অনেক কন্ডিশনে আমরা ম্যাচ খেলেছি, মানিয়ে নিতে পারবো আশাকরি।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্পিনারদের সাথে দাপট দেখিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররাও। দুই পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ও সাইফউদ্দিন শিকার করেছিলেন পাঁচটি উইকেট। সাইফউদ্দিন জানিয়েছেন স্পিনারদের বলে রান নিতে না পেরে তাদের উপর নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা চওড়া হওয়াতেই উইকেট পেয়েছেন তাঁরা।
তিনি বলেন, ‘মিরপুর আমার চেনা কন্ডিশন। আমার ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ ম্যাচই আমি এই উইকেটে খেলেছি। স্পিন উইকেট হওয়াতে পেস বোলারদেরও সুবিধা হয়েছে। কাটারটা বেশি ধরতেছে অন্যন্য উইকেটের তুলনায়। যার কারণে আমরা সুবিধা পাচ্ছি। স্পিন বলে রান নিতে পারছিলো না, আমাদের বিপক্ষে রান করার চেষ্টা করাতে আমরা উইকেট গুলো পেয়েছি।’
মিরপুরের মন্থর ও টার্নিং উইকেটে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকেই কাটার দিয়ে সফল হচ্ছেন বাংলাদেশের পেসাররা। সাইফউদ্দিন জানিয়েছেন উইকেটের আচারণ যদি পরিবর্তন হয় বা ব্যাটিং সহায়ক উইকেট করা হয় তারাও তাদের পরিকল্পনাতে পরিবর্তন আনবেন। তখন পেস, বাউন্সার ও ইয়র্কর করার চেষ্টা করবেন তারা। কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত রয়েছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ অবশ্যই, যেহেতু পেস বোলার আমাকে সব কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। যেহেতু আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করি। উইকেট অনুযায়ী বল করার চেষ্টা করি। উইকেটের আচারণ যদি পরিবর্তন হয় তখন হয়তো পেস, বাউন্সার বা স্লোয়ারের দিকে যাবো। যেহেতু এখানে কাটার বেশ কার্যকরি তাই সেটাই করতেছি। পরের ম্যাচ গুলো যদি ব্যাটিং সহায়ক হয় তাহলে জোরে বল ও ইয়র্কার দেওয়ার চেষ্টা করবো।’
জানিয়ে রাখা ভালো, আগামীকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বিকাল চারটায়।