‘শরিফুল বারবার বলছিল যে একটা সেলিব্রেশন করা দরকার’

বিশ্বকাপ মানেই তাসকিন আহমেদের কাছে যেন দুঃসহ সব স্মৃতি। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্স করলেও ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে এই পেসার খেলতে পারেননি অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে অভিযুক্ত হওয়াতে। আর ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ছিলেন না চোটের কারণে।

২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের সাথে গিয়েও প্রথম পর্বে মাত্র দু’টি ম্যাচ খেলে মূল পর্ব না খেলেই দেশে ফিরতে হয়েছিল তাকে। আর তিন বছর পর চোটের কারণে ওয়ানডে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা না পেয়ে তাসকিনের কান্নায় ভারি হয়েছিল মিরপুরের আকাশ। দুই বছর পর আরো একটি বিশ্বকাপ দুয়ারে। তবে এবার স্কোয়াডে রয়েছেন তিনি।

আজ (১৫ সেপ্টেম্বর) মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়ার পর তাসকিনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল এবার স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার পর আগের দুই বিশ্বকাপের দু:সহ স্মৃতিগুলো তাকে তাড়া করছে কিনা। এই পেসার জানিয়েছেন অতীত স্মরণ করতে চাননা তিনি। এখন তাঁর চিন্তা শুধুই ভবিষ্যৎ নিয়ে।

তাসকিন বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে দুটো স্মৃতিই আলাদা আলাদা। তবে সেগুলো এখন অতীত। দেখেন আমি অতীতকে স্মরণ করতে চাই না। আমি সামনের দিকে তাকাতে চাই। সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখে আর আমি যেন ভালো করতে পারি।’

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমানে। ওমানে এবং দুবাইয়ে এখনো কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তাসকিনের। তাই এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে উচ্ছ্বাসিত এই পেসার। তিনি জানিয়েছেন সুযোগ পেলে চেষ্টা করবেন দলকে জেতানোর।

তিনি বলেন, ‘আমি খুবই উচ্ছ্বসিত, কারণ ওমানে এর আগে আমার কখনো খেলতে যাওয়া হয়নি। এমনকি দুবাইতেও যে ইভেন্ট গুলো হয়েছে আমি এখন পর্যন্ত ম্যাচ খেলিনি। আমার জন্য ওমান ও দুবাইতে খেলাটা একদম নতুন হবে। যদি সুযোগ হয়, আমি চাই ভালো কিছু উপহার দিয়ে ম্যাচ জেতাতে।’

মন্থর এবং টার্নিং উইকেট বানিয়ে ঘরের মাঠের সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। তবে দুই সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও প্রশ্ন উঠেছে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এরকম উইকেটে খেলার যৌক্তিকতা নিয়ে।

কারণ মন্থর উইকেটে খেলে গিয়ে বিশ্বকাপের ফ্ল্যাট উইকেটে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হতে পারে বাংলাদেশের বোলারদের কাছে। তাসকিন জানিয়েছেন কন্ডিশন ভিন্ন হলে তাদেরও ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনা ও তাঁর প্রয়োগ করতে হবে। তিনি মনে করেন কাজটা চ্যালেঞ্জিং হলেও বাস্তবায়ন করতে পারলে ভালো করার সম্ভবনা থাকবে।

তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি খেলাটাই এমন কন্ডিশন অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনা ও তাঁর প্রয়োগ করতে হবে। যে উইকেটে কাটার দেওয়া যায় না সেখানে লেন্থ বল এবং ইয়র্কার খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যেহেতু আইসিসির ইভেন্ট তাই আমাদের মনে রাখতে হবে যে ফ্ল্যাট উইকেট হবে। এখানে বোলারদের কাজটা চ্যালেঞ্জিং হবে। কিন্তু আমরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে আমাদের সম্ভবনা থাকবে।’

ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেলেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন তাসকিন। শেষ ম্যাচে উইকেট পাওয়ার পর শরিফুল ইসলামের সাথে বুকে বুক মিলিয়ে উৎযাপনও করতে দেখা গেছে তাঁকে।

যে উৎযাপন এর আগে ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে মাশরাফি বিন মর্তুজার সাথে এক বার করেছিলেন তিনি। তাসকিন জানিয়েছেন বিশ্বকাপের দলে দু’জনই জায়গা পাওয়ার কারণে শরিফুলই তাকে বলেছিল উৎযাপন করার জন।

তিনি বলেন, ‘এটা শরিফুল বারবার বলছিল যে একটা সেলিব্রেশন করা দরকার। বিশ্বকাপে আমরা দু’জনই আছি। আমি বললাম দেখ ওই ভাবে তো কখনো সেলিব্রেশন করা হয়নি। এক বারই করা হয়েছে মাশরাফি ভাইয়ের সাথে, করলে ওটাই করতে পারিস। ও বলল যে ঠিক আছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link