গুরুর সাথে নতুনের সন্ধানে মুশফিক

ওয়ানডে ও টেস্টে ব্যাট হাতে মুশফিকুর রহিমের সামর্থ্য ও সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নেই। তবে ফরম্যাটটা যখন টি-টোয়েন্টি তখন মুশফিকের ব্যাটিং নিয়ে ও ব্যাটিংয়ের ধরণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে নিয়মিতই। গত দুই বছর ধরেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান টি-টোয়েন্টিতে সর্বশেষ ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেছেন প্রায় দুই বছর আগে।

২০১৯ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করার পর এই ফরম্যাটে আর বড় কোন ইনিংস আসেনি মুশফিকের ব্যাট হাতে। বিশেষ করে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট হাতে একদমই বাজে সময় পার করেছেন তিনি। কোন ম্যাচেই মুশফিককে আত্মবিশ্বাসী মনে হয়নি। প্রতিটা ম্যাচেই দলের প্রয়োজনের সময় বাজে শটে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।

আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের ব্যাটিংয়ের এমন হাল নিয়ে চিন্তিত সবাই। মুশফিক নিজেও মরিয়া হয়ে আছেন বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে রানে ফিরতে। সেই চেষ্টা থেকেই অভিজ্ঞ কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের শরনাপন্ন হয়েছিলেন তিনি। নিজের ব্যাটিং নিয়ে শৈশবের কোচের সাথে কয়েক দিন কাজও করেছেন নিবিড় ভাবে।

অনুশীলনে মুশফিককে দেখা গেছে নতুন নতুন কিছু শট খেলতেও। নিজের পুরোনো শট গুলোও বারবার ঝালিয়ে নিয়েছেন তিনি। রানে ফিরতে মরিয়া মুশফিক নিজের ব্যাটিং নিয়ে কী ধরণের কাজ করছেন এটাই জানতে চাওয়া হয়েছিল নাজমুল আবেদীন ফাহিমের কাছে। স্বনামধন্য এই কোচ খেলা ৭১ – কে জানিয়েছেন মুশফিকের স্টাইকরেট ও শটের রেঞ্জ বাড়াতেই মূলত কাজ করেছেন তিনি।

তিনি বলেন,  ‘যে কোন ব্যাটসম্যানেরই কোন না কোন জায়গাতে উন্নতির সুযোগ থাকে। সামনে যেহেতু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, একটা ভিন্ন ফরম্যাট। যেখানে খুব ভালো স্টাইকরেটে খেলতে হবে। সেখানে যার শটের রেঞ্জ বেশি থাকবে, পাওয়ার ক্রিকেট যারা খেলতে পারবে, স্টাইকরোটেট যে বেশি করতে পারবে তাঁর জন্য খেলাটা সহজ হয়ে যাবে। আমরা কয়েক দিন এটা নিয়েই চেষ্টা করেছি একটু উন্নতি আনার জন্য।’

দেশের হয়ে ৯১ টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। এই ৯১ ম্যাচের ৮২ ইনিংসে ১৯.৪৩ গড়ে ও ১১৫.৪৭ স্টাইকরেটে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১৩২১ রান। কোন সেঞ্চুরি নেই; হাফ সেঞ্চুরি পাঁচটি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে পাঁচ ম্যাচে ৫২ স্টাইকরেট ৯.৭৫ গড়ে করেছেন মাত্র ৩৯ রান। শূন্য রানেই ফিরেছিলেন দুই বার।

সর্বশেষ সিরিজে নিজের প্রিয় সুইপ শট খেলতে গিয়েও উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি। এছাড়া অন্য কোন শটেও মুশফিককে তেমন আত্মবিশ্বাসী মনে হয়নি। নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সাথে মুশফিক কাজ করেছেন নতুন কিছু শট নিয়েও। এই কোচ জানিয়েছেন নতুন কিছু শটের কারণে এখন ভিন্ন কিছু জায়গা থেকে রান বের করতে পারবেন তিনি। যার ফলে স্টাইকরেটও বাড়বে তাঁর।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নতুন কিছু করার চেষ্টা বলতে, যেটা বললাম কিছু কিছু শটের রেঞ্জ বাড়াতে কাজ করেছে। অনেক শট আগে খেলতো না সেগুলো খেলতে পারবে। যে শট গুলো আগে খেলতো ঐগুলো যেন আরো ভালো হয় সেটা নিয়ে কাজ করেছি। কিছু কিছু নতুন জায়গাতে রান বের করতে কাজ করা হয়েছে, তাতে ওর স্ট্রাইক রেট বাড়বে। এই তো, এই গুলো নিয়েই কাজ করেছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link