বিশ্বের শীর্ষ ধনী ক্রিকেট বোর্ড গুলোর একটি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে এই অর্থ ক্রিকেটের অবকাঠামোর উন্নয়নে কতটুকু ব্যয় করা হয় এই প্রশ্ন ওঠে নিয়মিতই। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বোর্ড পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয় জানিয়েছেন সঞ্চয়ের ধারা থেকে বের হয়ে এসে এই টাকা ক্রিকেটের উন্নয়নে খরচ করা উচিত।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কয়েক দিন আগেই জানিয়েছিলেন বিসিবির নয়শত কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। দুর্জয় মনে করেন আগে বোর্ডের সামর্থ্য না থাকার কারণে ক্রিকেটের উন্নয়নে অনেক কাজ করাই সম্ভব হত না। এখন অর্থের সীমাবদ্ধতা না থাকার কারণে বোর্ডের উচিত ক্রিকেটের সেটআপে উন্নতি করতে টাকা না জমিয়ে খরচ করা।
আজ (২৭ সেপ্টেম্বর) মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এই বোর্ড পরিচালক জানিয়েছেন তাঁরা আঞ্চলিক ক্রিকেট নিয়ে কাজও শুরু করে দিচ্ছেন। খুব দ্রুতই চট্টগ্রাম ক্রিকেট একাডেমী ও সিলেট ক্রিকেট একাডেমীর কাজ শুরু হবে।
দুর্জয় বলেন, ‘আঞ্চলিক ক্রিকেট নিয়ে কাজ শুরু হচ্ছে চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি আগে একটা সময় ছিল যখন বোর্ডের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা ছিল, সেগুলো কিন্তু এখন নাই। আমরা যদি মনে করি টাকা জমিয়ে রাখা বা এফডিআর করা, এই জিনিস গুলো থেকে বের হয়ে এসে টাকা গুলো আঞ্চলিক ক্রিকেটে, অ্যাকাডেমিতে বা ক্রিকেটের সেটআপে উন্নতি করতে আমি মনে করি খরচ করা উচিত।’
এবারের নির্বাচনে পরিচালক পদে ঢাকা বিভাগ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন নাঈমুর রহমান দুর্জয়। ঢাকা বিভাগে দুই পদের জন্য লড়বেন চার জন। মানিকগঞ্জ থেকে দুর্জয়ের সাথে বাকি তিন জন হলেন তানভীর আহমেদ টিটু (নারায়নগঞ্জ), সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু (কিশোরগঞ্জ) ও মোহাম্মদ খালিদ হোসেন (মাদারীপুর)।
কয়েকটা বিভাগে যেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে, সেখানে ঢাকা বিভাগে প্রার্থী চার জন। ঢাকা বিভাগে জেলা বেশি হওয়ার কারণেই মূলত কাউন্সিলর বেশি এবং প্রার্থী বেশি। এজন্য দুর্জয়ের কাছেও এটা স্বাভাবিকই মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘অন্য বিভাগের মত ঢাকা বিভাগ না। ঢাকা বিভাগে জেলার সংখ্যা বেশি। এখানে কাউন্সিলরের সংখ্যা বেশি কিন্তু পরিচালকের পদটা কম থাকে। প্রতি বছর নির্বাচনে এখানে যে প্রতিযোগিতাটা হয় এটা আমার কাছে স্বাভাবিকই মনে হয়। এখানে যদি পদের সংখ্যা আরো কিছু বেশি থাকতো এরকম নাও হতে পারতো। নির্বাচনের মাধ্যমে আসলে সেটার গ্রহণযোগ্যতা একটু বেশি থাকে।’
এর আগের মেয়াদে পরিচালকের পাশাপাশি হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের (এইচপি) দায়িত্ব পালন করেছেন দুর্জয়। সাধারণত নির্বাচন শেষে বোর্ডের সভাপতি এই দায়িত্ব সবার ভিতর ভাগ করে দিয়ে থাকেন। দুর্জয় জানিয়েছেন আবার যদি বোর্ড সভাপতি তাকে এই দায়িত্ব দেয় তবে অবশ্যই নিবেন তিনি। কারণ দুর্জয় মনে করেন ক্রিকেটের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য এখান থেকে কাজ করা যায়।
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে খুবই খুশি যে এইচপির মত একটা ইউনিট নিয়ে কাজ করতে পারছি। কারণ এই জায়গাকে অবহেলা করার কোন সুযোগ নাই। অন্যন্য কমিটির যে রকম প্রয়োজনীয়তা আছে, এইচপিও সেরকম জায়গা যেখান থেকে ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করা যায়। এই ভাবে চিন্তা করলে আমি অন্য কোন বিভাগে চোখ রাখি না। আবার দায়িত্ব দিলে অবশ্যই নেব।’
এর আগে ক্রিকেট অপারেশন্সে কাজ করেছেন দুর্জয়। তাঁর সময়েই ২০১৫ বিশ্বকাপে সাফল্য পেয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর এইচপির দায়িত্ব নেওয়ার পর সেখানেও সাফল্য পেয়েছেন তিনি। বর্তমান জাতীয় দলে এইচপি থেকে আসা বেশ কয়েক ক্রিকেটার খেলছেন। দুর্জয় জানিয়েছেন এটাও তৃপ্তিদায়ক তাঁর কাছে।
দুর্জয় বলেন, ‘আমি দুটো জায়গাতে কাজ করেছি। ২০১৫ সালে আমি ক্রিকেট অপারেশন্সে ছিলাম। আমি ওখানে সফলই ছিলাম। আমাদের ভালো খেলার শুরু ওখান থেকেই। এরপরে ধরেণ এইচপির ছয় সাত জন ক্রিকেটার জাতীয় দলে আছে। এটা আমার জন্য তৃপ্তিদায়ক।’