যেমন ফুটবল বাংলাদেশ খেলেছে, তাতে জিতে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। পাসিং ফুটবলে আক্রমণগুলো জমলেও ফরোয়ার্ড লাইনের ব্যর্থতায় সহজ কয়েকটা সুযোগ ম্যাচ হয়েছে বাংলাদেশ দলের। শেষ অবধি ১০ জনের দল নিয়ে ১-১ গোলের ড্র নিয়েই ভারতের বিপক্ষে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে জামাল ভূঁইয়ার দলকে।
দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের মঞ্চ সাফ ফুটবল টুর্নামেন্টের তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও ভারত। সাফের সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ ম্যাচ বললে খুব একটা ভুল হবে না। তাছাড়া ম্যাচের আগেই উত্তাপ ছড়িয়েছে দুই দলের কোচের প্রেস কনফারেন্স থেকে।
তাই স্বভাবতই এই দুই দেশের ফুটবল সমর্থকদের চোখ ছিল মালদ্বীপের জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ সময় বিকাল পাঁচটায় শুরু হয় ম্যাচ। টুর্নামেন্টের এবং নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১-০ গোলে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়েই ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ।
খেলার শুরুতে আক্রমণ পালটা আক্রমণে খেলা চলতে থাকে খেলা। অস্কার ব্রুজোনের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশের খেলার ধরণে বেশ পরিবর্তন দেখা গেছে আগের ম্যচেই। তাই ভারতের বিপক্ষে একরাশ আশা নিয়ে অপেক্ষায় থাকে বাংলাদেশের সমর্থকেরা। কিন্তু ম্যাচের ২৬ মিনিটে সুনীল ছেত্রী আঘাত হানেন বাংলাদেশের গোল বারে।
উদান্তা সিং এর কাটব্যাক করা বলে, ডান পায়ে শট চালিয়ে নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ৭৬ তম গোল আদায় করে নেন ছেত্রী। বাংলাদেশও বেশ কিছু আক্রমণ সাজায়। কিন্তু সমতা ফেরাতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। ম্যাচের ৪০ মিনিটে সবচেয়ে সেরা সুযোগ পায় বাংলাদেশ। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে মাঠের ডি-বক্সের বাম সাইড থেকে ফার পোস্টে করা বিপলু আহমেদের করা শট ঠেকিয়ে দেন ভারতের দীর্ঘকায় গোলরক্ষক গুরপ্রিত সিং।
১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় অস্কার ব্রুজনের শীর্ষরা। বিরতি থেকে ফিরেই গোলের জন্যে মরিয়া হয়ে থাকা রাকিব, সাদরা চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। সাদের করা ক্রস, গোলবারে রাখতে ব্যর্থ হয় রাকিব। ব্যর্থ রাকিব গোলের আশায় ফাউল করে বসেন এবং ম্যাচের ৫২ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন তিনি।
তার ঠিক দুই মিনিট বাদেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বিশ্বনাথ ঘোষ। ভারতের আক্রমন ভাগের খেলোয়াড় লিস্টন কোলাকোকে বাজেভাবে ট্যাকেল করেন। কারণ তিনিই ছিলেন শেষ ডিফেন্ডার। রেফারি কোন টালবাহানা না করে তাঁকে মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশের এ ম্যাচ থেকে পয়েন্ট পাবার আশা ক্ষীন হতে থাকে। কিন্তু খেলার তখনও বাকি। ভারতের একের পর এক আক্রমণ প্রতিহত করে কাউন্টার অ্যাটাকে উঠতে থাকে জামাল, ইয়াসিন, বিপলুরা। দলে পরিবর্তন আনেন ব্রুজোন। মতিন মিয়া ও বিপলুর পরিবর্তে মাঠে নামান সুমন রেজা ও সোহেল রানাকে। ফ্রেশ লেগ ইনপুটে আক্রমণের ধার কিছুটা বৃদ্ধি পায় বাংলাদেশের।
ম্যাচের ৭৩ মিনিটের মাথায় কর্নার কিক পায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক জামালের কাঁধে আসে গুরুত্বপূর্ণ কর্নারের দায়িত্ব। মাঠের বাম কর্নার থেকে তিনি বল বাড়িয়ে দেন নিকটবর্তী পোস্টের দিকে। সেখান থেকে রাকিব হোসেন বলে হেড দিয়ে বলকে ডি-বক্সের আরেকটু ভিতরে ঢুকিয়ে দেন। সেখানে বিনা পাহারায় থাকা বাংলাদেশের লেফট ব্যাক ইয়াসিন আরাফাত হেড করে বল জালে জড়িয়ে নিয়ে আসেন সমতা।
শেষ অবদি সেই ১-১ সমতা নিয়েই মাঠ ছাড়ে দু’দল। এই ম্যাচ থেকে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে টেবিলের প্রথম স্থানেই অবস্থান করছে বাংলাদেশ।