নেদারল্যান্ডসের জন্য ডু অর ডাই ম্যাচ। টিকে থাকার লড়াইয়ে মুখোমুখি নামিবিয়ার বিপক্ষে। হারলেই ডাচরা ছিটকে যাবে টুর্নামেন্ট থেকে! জয় ছাড়া বিকল্প পথও নেই যে। প্রথম ম্যাচে ব্যাটারদের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের মাঝেও উজ্জ্বল ছিলেন ম্যাক্স ও’ডাউড।
তাই বাঁচা-মরার লড়াইয়ে দলের আস্থাও যে ছিল ২৭ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ ব্যাটারের উপর। আর সেই আস্থার প্রতিদান দিয়ে দলকে দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দিলেন তিনি। দলের ইনিংসের অক্সিজেন হয়ে রইলেন, তাতে দলের বিশ্বকাপ স্বপ্ন বাঁচাতে না পারলেও নিজে হয়ে রইলেন কীর্তিমান।
ব্যাট হাতে যেনো ভিন্ন পথে হাটছেন নেদারল্যান্ডসের ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আইরিশ বোলারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে ডাচ ব্যাটাররা। কিন্তু সেই ম্যাচেও দলের পক্ষে ওডাউড করেছিলেন সেরা পারফরম্যান্স।
১০৬ রানে অলআউট হওয়া নেদারল্যান্ডসের পক্ষে দলের প্রায় অর্ধেক রানই আসে ও’ডাউডের ব্যাট থেকে। খেলেছিলেন ৫১ রানের দায়িত্বশীল এক ইনিংস। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে পরের ম্যাচেও নামিবিয়ার বিপক্ষে আবারো ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন এই ডাচ ওপেনার। ৪২ বলে তুলে নেন দুর্দান্ত এক হাফ সেঞ্চুরি। পরবর্তীতে ৫৬ বলে ৭০ রানের দারুন এক ইনিংস শেষে ফেরত যান তিনি। তাঁর ব্যাটে ১৬৪ রান করতে সক্ষম হয় ডাচরা! আগের ম্যাচের মতোই প্রায় ৫০ শতাংশ রান আসে ওডাউড ব্যাটে।
বিশ্বকাপের এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটা ওডাউড। একই সাথে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তিনি আছেন সবার ওপরে। দুই ম্যাচে দুই ফিফটিতে ১২১ রান নিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে নিজেকে রেখেছেন শীর্ষে।
বিশ্বকাপের আগেই মালোয়শিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন ক্যারিয়ার সেরা ৭৩ বলে ১৩৩ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। নেদারল্যান্ডসের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে একমাত্র সেঞ্চুরির মালিক বনে যান এই ওপেনার। বিশ্বকাপের আগেই তাঁর প্রতি ছিলো বিশেষ নজর। নেদারল্যান্ডসের ওপেনিংয়ে তিনি যে খেলবেন সেটা অনেকটাই প্রত্যাশিত ছিলো।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আইসিসির এক বিশ্লেষণে নেদারল্যান্ডসের স্কোয়াডে ‘প্লেয়ার টু ওয়াচ আউট’ হিসেবে রাখা হয়েছিলো এই ও’ডাউডকে! ৬ বছরের ক্যারিয়ারে খেলেছেন ৪১ ম্যাচ। ২৯ গড়ে ১২৪ স্ট্রাইক রেটে করেছেন প্রায় ১১০০ রান।
খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে অকল্যান্ডের হয়ে! বাবা অ্যালেক্স নব্বইর দশকে অকল্যান্ড ও নর্দান ডিস্ট্রিক্টের হয়ে খেলেছিলেন। তবে মা ডাচ নাগরিক হওয়ায় ওডাউড সহজেই খেলার সুযোগ পান নেদারল্যান্ডসের হয়ে। নিজের টুইটারে একবার লিখেছিলেন তিনি, ‘হাফ নিউজিল্যান্ড, হাফ নেদারল্যান্ডস।’
নামিবিয়ার বিপক্ষে হার দিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল ডাচরা। ওডাউড এক অধিপত্য ছাড়া গেলো দুই ম্যাচে খুব ভালো পারফরম করতে পারেননি কেউই। যোগ্য সঙ্গী পেল নিশ্চয়ই নেদারল্যান্ডসের যাত্রাটা হতে পারতো অন্যরবম!