গেলো গেলো রব উঠেছে।
সত্যিই কি তবে শেষ হয়ে গেলো সব? তাহলে কি আগামী ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে দেখা মিলবে না ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো আর লিওনেল মেসির মহাদ্বৈরথ? গত প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলা দ্বৈরথের আন্তর্জাতিক ইতি হয়ত হতে চলেছিল ২০২২ এর ফুটবল বিশ্বকাপেই। সম্ভাবনা কিংবা অনুমান অন্তত তাই বলে।
দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব থেকে সরাসরি বিশ্বকাপের মূলমঞ্চে জায়গা করে নিয়েছেন রোনালদোর চির প্রতিদ্বন্দী মেসির দল আর্জেন্টিনা। ব্যর্থ পর্তুগাল। এতেই যেন সোরগোল উঠেছিল দেখা হবে না রোনালদোকে বিশ্বকাপের সেই ইতিহাসের মোড়া মহামঞ্চে। এখনই ঠিক উপসংহার টেনে নেওয়া যাচ্ছে না। প্লে-অফ খেলে বিশ্বকাপে যাওয়ার একটি সুযোগ তো এখনও বাকি রোনালদোর পর্তুগালে কাছে।
তবে পথটা যে খুব সহজ হবে তা নয়। সে বিষয়ে রোনালদো নিজেও জানেন এবং তাঁর সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি এ বিষয় সম্পর্কে লেখেন, ‘ফুটবল আমাদেরকে বহুবার দেখিয়েছে যে মাঝেমাঝে অত্যাচারে ভরা পথে করা যাত্রা আমাদেরকে নিয়ে যায় কাঙ্খিত ফলাফলের দিকে।’
পথটা ঠিক কথটা কঠিন তাঁর হিসেব-নিকেশ করাটা জরুরী। নিজেদের গ্রুপের শেষ ম্যাচে যেখানে সার্বিয়ার বিপক্ষে একটা ড্র ছিল যথেষ্ট পর্তুগালের জন্যে বিশ্বকাপে নিজেদের জায়গা করে নিতে। কিন্তু সার্বিয়ার আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড় আলেকজান্দ্রার মিত্রোভিচের ৯০ মিনিটের গোল আশার ইতি ঘটিয়ে বাজিয়ে দেয় শঙ্কার ঘন্টা। সেই শঙ্কায় পর্তুগাল এখন প্লে-অফে।
ইউরোপিয় ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের প্লে-অফের গ্রুপ নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে। মোট ১২টি দল অংশ নিচ্ছে এই প্লে-অফে। বাছাইপর্বের দশ রানার্স-আপ দল ও নেসন্স লিগ থেকে আসা দুই দল এই মোট ১২ দল বিভক্ত হচ্ছে তিন গ্রুপে। প্রতিটা গ্রুপেই অনুষ্ঠিত হবে দুইটি সেমিফাইনাল ও একটি করে ফাইনাল। সেখানের প্রতি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দল চলে যাবে বিশ্বকাপে।
পর্তুগালের খুব সহজেই হয়ত হয়ে যাওয়ার কথা এই প্লে-অফের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। কিছুটা হলেও স্বস্তির ব্যাপার এই প্লে-অফের সেমিফাইনাল খেলা হবে পর্তুগালের ঘরের মাঠে। বাছাইপর্বের পয়েন্ট তালিকা বিবেচনায় সেরা ছয় দল পেয়েছে ঘরের মাঠে সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ। সেক্ষেত্রে পর্তুগালের সেমিফাইনাল প্রতিপক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তুরস্ক, পোল্যান্ড, উওর মেসাডনিয়া, ইউক্রেন কিংবা অস্ট্রিয়া অথবা চেক রিপাব্লিক।
প্লে-অফের সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনাল পেরিয়ে শেষমেশ কোয়ালিফাই করে ফেলবে পর্তুগাল এমনটাই হয়ত প্রত্যাশা রোনালদো সমর্থক থেকে শুরু করে ফুটবল দর্শক সমর্থকদের। সার্বিয়ার বিপক্ষে হেরে রোনালদো তাঁর আশাবাদ ব্যক্ত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, ‘শেষ ম্যাচের ফলাফল দুঃখজনক কিন্তু ঠিক ততটাও নয় যে আমরা ভেঙ্গে পড়বো। আমাদের লক্ষ্য ২০২২ বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া এবং আমরা জানি আমাদের সেখানে যেতে হলে কি করতে হবে, আমাদের সামনে এখনো পথ খোলা রয়েছে।’
নিজের প্রতি, দলের প্রতি আস্থা থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস থেকে রোনালদো জানিয়েছেন পর্তুগাল যাবে ২০২২ বিশ্বকাপে। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ কিংবা প্রশ্নের অবকাশ নেই।
মেসি-রোনালদোর হয়ত ২০২২ শেষ বিশ্বকাপ। এরপর আর বয়সের ভারে শরীর আর জোগাবে না সাহস বিশ্বমঞ্চে আলো ছড়াতে। পর্তুগাল তবে আসুক বিশ্বকাপে। মেসি-রোনালদোর হোক তবে দেখা আবার ফুটবলের ওই মহাকাব্যে।