ডেড বল মেনে নিয়েছেন রিয়াদ!

পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর মুহূর্ত দেখা গেল আজ। তৃতীয় ম্যাচের শেষ ওভারে পাকিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজ ছিল আট রান। হাতে ছিল আট উইকেট। শেষ ওভার কে করবেন এমন প্রশ্ন পুরো মিরপুর জুড়ে। তখনই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে দেখা গেল বল হাতে বাইশ গজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এই কাজটি আগেও করেছেন তিনি, সফলও হয়েছেন, আজও সেই পথটা তৈরি করে ফেলেছিলেন।

২০ তম ওভারের প্রথম বলেই ডট দিয়ে খেলায় উত্তেজনা ফিরিয়ে আনেন রিয়াদ। তারপরের বলেই ফেরান সারফারাজ আহমেদকে। পরের বলে আউট হন হায়দার আলীও। শেষ তিন বলে পাকিস্তানের প্রয়োজন ৮ রান। তবে চতুর্থ বলে ছয় খেয়ে বসেন তিনি। অবশ্য পরের বলে আবার উইকেট নিয়েছিলেন তবে শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন নেওয়াজ। ঘরের মাঠে পাকিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ দল।

তবে তাঁর আগের বল নিয়ে বিতর্কের সুযোগও আছে। রিয়াদের করা সেই বলটা শেষ মুহূর্তে ছেড়ে দেন নেওয়াজ। বোল্ড হয়েছিলেন তিনি তবে শেষ পর্যন্ত সেটাকে ডট বল ঘোষণা করা হয়। সেই বল নিয়ে রিয়াদ বলেন, ‘আম্পায়রকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কারণ ও (নওয়াজ) অনেক দেরিতে সড়েছিল। তাই আমি জিজ্ঞেস করেছি যে এটা কী বল হবে নাকি হবেনা, এতটুকুই।’

তবে সেই ডেড বল নিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনো হতাশা কাজ করছে কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে রিয়াদ জানান, ‘না, আম্পায়ারের কলই ফাইনাল এবং আমরা আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি।’

এছাড়া আজ ৫০ বলে ৪৭ রানের এক মন্থর ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই ধরনের ব্যাটিং কতটা কার্যকর সেই প্রশ্নও উঠে। পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মেজাজটা ঠিক ধরতে পারছেন না এই ওপেনার। ফলে পাওয়ার প্লেতে ভালো শুরু করতে পারছে না বাংলাদেশ। তবে অধিনায়ক রিয়াদ অবশ্য তেমনটা মনে করেন না। তিনি মনে করেন নাঈমের সেই ইনিংস ছিল গুরুত্বপূর্ন।

নাঈমের এই ইনিংস নিয়ে রিয়াদ বলেন, ‘আমার মনে হয় নাঈম ভালো ব্যাটিং করেছে। ওই সময় পার্টনারশিপটা ইম্পর্টেন্ট ছিল। নাঈম আর আফিফের পার্টনারশিপটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

ওদিকে দুই ম্যাচ খেলার পর হঠাৎই সাইফকে পাঠিয়ে দেয়া হয় চট্টগ্রাম। তাঁর বদলে দলে ডাকা হয় পারভেজ হোসেন ইমনকে। তাই ভাবা হচ্ছিল তৃতীয় ম্যাচে ওপেন করবেন ইমনই। তবে সেটা দেখা যায়নি মাঠে। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে রিয়াদ অবশ্য জানিয়েছেন তাঁদের পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন।

সাইফের হঠাৎ দল থেকে চলে যাওয়া নিয়ে রিয়াদ বলেন, ‘সাইফের ব্যাপারটা টিম ম্যানেজম্যান্ট ভালো বলতে পারবে। তবে আমরা শামীমকে উপরের দিকে একটা সুযোগ দিতে চাচ্ছিলাম। আমার মনে হয় শামীম আজকে ভালো ব্যাটিং করেছে।’

ওদিকে এবার এক তারুণ্য নির্ভর দল নিয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যর্থতার পর টি-টোয়েন্টি দলে যোগ হয়েছেন বেশ কয়েকজন নতুন মুখ। মাঠেও অনেকের অভিষেক হতে দেখা গিয়েছে। একমাত্র ছিলেন না তামিম, মুশফিক কিংবা সাকিবও। দল হিসেবে পাকিস্তান সিরিজটা ভালো না হলেও কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটার নিজেদের প্রমাণ করেছেন।

তরুণ এই দলটা নিয়ে রিয়াদ বলেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের এই দলটায় বেশ কয়েকজন নতুন ছেলে ছিল। যারা এই সিরিজেই অভিষিক্ত হয়েছে। আজকে শহিদুল ভালো বোলিং করেছে। সবমিলিয়ে ওদের জন্য এটা ভালো সুযোগ ছিল। তবে আমার মনে হয় ওদের একটু সময় লাগবে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা অতটা সহজ না। আমি আশা করি সময় গেলে ওরাও পারফর্ম করবে।’

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link