টেস্ট দলে হঠাৎই এক নতুন মুখ। ঘরোয়া ক্রিকেটে যে খুব নাম ডাক করে ফেলেছেন তেমনও না। ক্রিকেটের খোঁজ খবর যারা খুব কাছ থেকে রাখেন তাঁদের কেউ কেউ হয়তো মনে করতে পারেন নামটা। এতটাই অপরিচিত এক পেসার জায়গা করে নিয়েছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে। মুস্তাফিজ ও শরিফুলের ইনজুরিতে প্রথমবারের মত জাতীয় দলে রেজাউর রহমান রাজা।
রাজাকে দলে নেয়ার ব্যাখ্যা হিসেবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানিয়েছেন তাঁর উইকেট নেয়ার ক্ষমতার কথা। ঘরোয়া ক্রিকেটে যেই অল্প কিছু ম্যাচ খেলেছেন সেখানেও তাঁর প্রমাণ মিলেছে। এখন পর্যন্ত ১০ টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে পেসাররা একাদশে জায়গা পেলেও খুব বেশি বল পাননা এমন অভিযোগ আছে। তবে এই ১০ ম্যাচেও রাজার ঝুলিতে আছে ৩৩ উইকেট। ফলে উইকেট তুলে নিতে পারার যেই ক্ষমতার কথা শোনা গিয়েছিল তা পুরোপুরিই সত্যিই।
অথচ রাজার ক্রিকেট শুরোটা হয়েছিল আর দশটা ছেলের মত টেনিস বল দিয়েই। তারপরই সিলেটের বড় ভাইদের নজর কেড়ে চলে এসেছিলেন ঢাকায়। ক্রিকেটে আসার গল্প জানাতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে রাজা বলেন,’আসলে টেপ টেনিস খেলা থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া। এলাকায় টেপ টেনিস খেলার পর একটা ক্রিকেট বলের টুর্নামেন্ট হয়েছিল। আমি সেখানে খেলতে যাই। তখন বড় ভাইরা বোলিং দেখে বলছিলেন, তোর বোলিং ভালো হচ্ছে, তুই চাইলে স্টেডিয়ামে গিয়ে ক্রিকেট প্র্যাকটিস করতে পারিস। তো আমি বড় ভাইদের কথা শুনে প্র্যাকটিসে গেলাম। প্র্যাকটিসে গিয়ে আমার মনে হইলো যে, ইনশাআল্লাহ্ আমি পারবো। তো এভাবেই আসলে আমার ক্রিকেটে আসা।’
রাজাকে সরাসরি যারা বল করতে দেখেছেন তাঁদের মতে বাংলাদেশের বাস্তবতায় রাজা স্পেশাল। রাজা একই জায়গায় বল করে যেতে পারেন। কখনো কখনো উইকেট থেকে বাউন্সও আদায় করে নিতে পারেন। সেগুলো ব্যাটসম্যানদের জন্য খেলা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া পাঁচ দিনের ক্রিকেট খেলার মত শারীরিক সক্ষমতাটা তাঁর মধ্যে আছে।
টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে এই পেসার বলছিলেন,’টেস্ট খেলা আমি উপভোগ করি। আলহামদুলিল্লাহ্ ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম শ্রেণিতে ভালো করেছি। চারদিনের খেলায় ডে বাই ডে কয়েকটা স্পেলে বোলিং করতে পারি। আমার স্ট্রেন্থটা ধরে রাখতে পারি, এটাই আমার স্ট্রেন্থ। আমার নিজের যেটা মনে হয় যে, এক জায়গায় টানা বল করতে পারি। বলে কিছু মুভমেন্ট করাইতে পারি। এক রিদমে টানা বল করতে পারি। দিনের শুরুতে যেই পেসে বোলিং করি, দিনের শেষে আলহামদুলিল্লাহ তার চেয়ে একটু বেশি পেসে বল করতে পারি।‘
ওদিকে এবারের টেস্ট দলে জায়গা করে নিয়েছেন সিলেটের তিন পেসার। আবু জায়েদ রাহি, এবাদত হোসেন ও রাজা তিনজনই উঠে এসেছেন সিলেট থেকে। টেস্ট বোলিং লাইন আপের বড় শক্তি যেন এখন সিলেট। ফলে সেখান থেকে জাতীয় দল পর্যন্ত উঠে আস্টাও ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। রাজা বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং কি না… আসলে চ্যালেঞ্জ নেওয়া পছন্দ করি। আমাদের বড় ভাইদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া। আমাদের সিলেটে যেমন রাহি ভাই, এবাদত ভাই, খালেদ ভাইদের কাছ থেকে মোটিভেশন পাওয়া। এই থেকেই আসলে পেস বোলার হওয়ার একটা উৎসাহ জেগেছে।’