যেমন হতে পারে একাদশ

যদিও সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মুমিনুল হক বললেন, তিনি এশিয়ান দল পাকিস্তানের বিপক্ষে ফ্লাট উইকেট পছন্দ করবেন। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে যে, চট্টগ্রামে হারের পর বাংলাদেশ স্পিন উইকেটেই ঝুকবে। তার তেমন হলে কোন এগারো জন খেলছেন আগামীকাল?

প্রথম কথা হলো, মুমিনুল পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, চার জন বোলার খেলবেন। তার মানে স্পিন সহায়ক উইকেট হলে সাকিবসহ তিন স্পিনার খেলবেন। আর সাকিবসহ ৮ ব্যাটসম্যান থাকবেন দলে। একমাত্র পেসার হিসেবে খেলবেন তাসকিন বা রাহি। আর দ্বিধা থাকে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নিয়ে।

সাইফ বাদ পড়লে সে জায়গায় জয়, নাকি শান্ত? মুমিনুল বলেছেন, তিনি ডান হাতি ও বাহাতি কম্বিনেশন রাখতে চান। তার মানে জয়ই আসছেন বিবেচনায়।

১. সাদমান ইসলাম

যদিও পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে তার পারফরম্যান্স খুব সুখকর নয়। তারপরও এতো দ্রুত ম্যানেজমেন্ট সাদমানের ওপর আস্থা হারাবে না। এই একটা টেস্ট বাদ দিলে তার পারফরম্যান্স টেস্টে আশাব্যঞ্জক।

সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও ভালো খেলে এসেছেন সাদমান। তারওপর আবার তামিম দলে নেই। এ অবস্থায় সাদমানকে এক নম্বর ওপেনার হিসেবে নিশ্চিত বলেই মনে করা যায়।

২. মাহমুদুল হাসান জয়

গত টেস্টেই জয়ের অভিষেক হয়ে যেতে পারতো। সেটা হয়নি। সাইফ আরেকটা সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সুযোগটা সাইফ কাজে লাগাতে পারেননি। বাউন্স ও পেসে একদম নাকাল হয়েছেন শাহীন ও হাসান আলীর বল খেলতে গিয়ে। দুই ইনিংসেই বাউন্স খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন। ফলে সাইফ এই টেস্টে বাদ পড়ছেন, এটা মোটামুটি নিশ্চিত।

জয়ের যদিও লংগার ভার্শন খেলার অভিজ্ঞতাও খুব বেশি নন। কিন্তু যুব বিশ্বকাপজয়ী এই ব্যাটসম্যান আছেন দারুন ছন্দে। নেটে তাকে নিয়ে প্রচুর কাজ হচ্ছে। ফলে আগামী কাল তার অভিষেক হয়ে যাওয়াটা একরকম নিশ্চিত।

৩. নাজমুল হোসেন শান্ত

শান্তর অভিজ্ঞতা ও অতীতে আরও একবার ভরসা রাখবে ম্যানেজমেন্ট।

যদিও পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো করতে পারেননি। তারপরও শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বড় দুটো ইনিংস খেলার অভিজ্ঞতাকে ফিরে পেতে চাইবে ম্যানেজমেন্ট। হয়তো খুব বেশীদিন এভাবে চালিয়ে যেতে পারবেন না শান্ত। রানে না ফিরলে তার জায়গা ধরে রাখা কঠিন হবে। তারপরও এই টেস্টে আরেকটা সুযোগ পাবেন তিনি।

৪. মুমিনুল হক

এই পজিশন নিয়ে খুব বেশি আলোচনার সুযোগ নেই। তিনি অধিনায়ক। দেশের সেরা ব্যাটসম্যান। দলে তিনি তো থাকবেনই। তবে মুমিনুলের নিজেকে করার মতো কিছু প্রশ্ন তৈরী হয়ে গেছে বলে মনে হয়।

খুব কোয়ালিটি বোলিংয়ের বিপক্ষে অনেকদিন হলো ভালো ইনিংস খেলতে পারছেন না। এখন তার জেগে ওঠার সময় হয়েছে। তিনি পারফরম না করলে মিডল অর্ডারের ওপর খুব চাপ হয়ে যায়। তাই তাকে পারফরম করতে হবে।

৫. মুশফিকুর রহিম

যথারীতি মিডল অর্ডারের সেরা ভরসা। পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসেও রান পেয়েছেন।

মজাটা হলো, মুশফিক রান না পেলে বাংলাদেশের ব্যর্থতার হার অনেক বেড়ে যায়। ফলে দলীয় ভালো ইনিংস পেতে হলে সাবেক অধিনায়ককে রান পেতে হবে। তার দিকে দলই চেয়ে থাকবে।

৬. সাকিব আল হাসান

বাংলাদেশের এই টেস্টে সবচেয়ে বড় সুখবর। সাকিব আল হাসান ফিরেছেন। ফলে মিডল অর্ডারের অন্যতম সেরা একজন ব্যাটসম্যানকে পাচ্ছে বাংলাদেশ। আবার দলের সেরা স্পিনারটিকেও পাচ্ছে।

সাকিব থাকার ফলে বাংলাদেশ ৮ জন সলিড ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলার একটা চিন্তা করতে পারছে। তার কারণেই বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার অনেক লম্বা হয়ে যাবে।

৭. ইয়াসির আলী রাব্বি

দীর্ঘদিন বেঞ্চে কাটানোর পর চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষেক হয়েছে। অভিষেকেই যে লড়াকু মেজাজ দেখিয়েছেন, তাতে বাদ পড়ার কোনো কারণ নেই। যদি না ইনজুরি বা ফিটনেস জনিত কোনো সমস্যা না থাকে, তাহলে নিশ্চিত ভাবেই তিনি দলে থাকছেন।

রাব্বি ইতিমধ্যে বলেছেন যে, তিনি চট্টগ্রামের ওই ফর্ম ধরে রাখতে প্রস্তুত। ফলে তার ওপর ভরসা করাই যায়।

৮. লিটন দাস

লিটন সাতে, নাকি আটে খেলবেন, এটা আসলে ম্যাচের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। রাব্বি ও লিটনের অবস্থানে অদল বদল হতে পারে। তবে তার খেলা নিয়ে তো প্রশ্ন নেই। এখন দলের এক নম্বর কিপার তিনি। সেই সাথে দলের সবচেয়ে ইনফর্ম খেলোয়াড়ও তিনি।

চট্টগ্রামে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করেছেন। তার কাছ থেকে ওই ধারাবাহিকতাটা দেখতে চাইবে দল। অন্তত বড় ইনিংস পাওয়ার জন্য লিটনকে ওই ফর্মেই থাকতে হবে।

৯. মেহেদী হাসান মিরাজ

এরকম একটা একাদশের সুবিধা হলো মিরাজের মত একজন ব্যাটসম্যানকে নয় নম্বরে পাচ্ছে দল। তিনি যদিও ফ্রন্টলাইন বোলার। তারপরও তার ব্যাটে রান আছে।

তবে মিরপুরে সম্ভবত খুবই নিজু বাউন্স, ধীরগতির স্পিন সহায়ক উইকেট হবে। সে ক্ষেত্রে বোলার মিরাজকেও বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।

১০. তাইজুল ইসলাম

যথারীতি ঘরের মাটিতে টেস্টে দলের প্রধাণ ভরসা তিনি। সাকিব ফেরায় হয়তো চাপটা একটু কমবে। তারপরও তার ওপরই ফোকাসটা থাকবে।

তাইজুল মিরপুরের উইকেটে চট্টগ্রামের চেয়েও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। চট্টগ্রামে ৭ উইকেট নিয়ে রেকর্ড করেছেন। আবার তেমন কিছু চাইবে দল।

১১. তাসকিন আহমেদ/আবু জায়েদ রাহি

পেসার যে একজন খেলবেন, সেটা বোঝাই যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো তাসকিন, নাকি রাহি?

তাসকিন আজও অনেকটা সময় ব্যাটিং করেছেন। তবে হাতে এখনও ব্যান্ডেজ আছে। জানা গেলো যে, ক্ষত এখনও পুরো শুকায়নি। সামনে নিউজিল্যান্ড সফর আছে। তাই এ অবস্থায় তাসকিনকে নিয়ে ঝুকি নেওয়ার কথা নয়।

তাসকিন না খেললে একমাত্র পেসার হিসেবে রাহিরই খেলার কথা। রাহির ধারাবাহিকতা তাকে এই জায়গাটা এনে দেওয়ার কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link