ম্যাড়ম্যাড়ে দিন, ম্যাড়ম্যাড়ে সংবাদ সম্মেলন

মিরপুরের আকাশ আজ সকাল থেকেই কেমন একটা অন্ধকারে আচ্ছন্ন ছিল। হালকা শীতের আমেজে ঘুমকাতুরে এক দিন। ফলে সকাল থেকেই জ্বলে উঠেছিল মিরপুরের ফ্লাড লাইট। মাঠের ক্রিকেটেও দেখা গেল একই আমেজ। ঢাকার টেস্টে আজ কাটলো ম্যাড়ম্যাড়ে প্রথম দিন। শুধুমাত্র প্রথম সেশনের শেষ দিকে তাইজুলের দুই উইকেট পাওয়াটা যা একটা বলার মত ঘটনা।

সকালে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ভালোই শুরু করেছিল পাকিস্তানের দুই ওপেনার। সকালবেলা নতুন বল ব্যবহার করে কোন ফায়দা তুলতে পারেননি দুই পেসার এবাদত হোসেন ও খালেদ আহমেদ। তবে সাকিব ও তাইজুলের মাপা বোলিং একটু চাপে ফেলেছিল পাকিস্তানকে। চট্টগ্রামের দুর্দান্ত ফর্ম ঢাকায়ও নিয়ে এসেছেন তাইজুল। পাকিস্তানের দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে একট ভালো দিনের আভাষই দিচ্ছিলেন  তাইজুল।

তবে সকালের কাল মেঘ আর আর সরলো না। দুপুরে হয়ে গেল খানিক বৃষ্টিও। এরপর আবার খেলা মাঠে গড়িয়েছে কিছুক্ষণের জন্য। তবে সেখানে ছিলনা তেমন কোন উত্তেজনা। শেষে আলোক স্বল্পতার কারণে খেলাই বন্ধ হয়ে যায়। খেলা দেখতে আশা দর্শকরাও পার করে ম্যাড়ম্যাড়ে এক দিন। আগামী কয়েকদন বৃষ্টির আশঙ্কা নিয়েই দিনের খেলা শেষ করে ক্রিকেটাররা।

ওদিকে আজ সংবাদ সম্মেলনেও দেখা গেল একইরকম চিত্র। নেই ধারালো কথার ছড়াছড়ি, নেই কোন উত্তাপও। আসলে ম্যাচে তেমন কোন ঘটনা নেই বলে মিরাজও সংবাদ সম্মেলনে এসে বলার তেমন কিছু পাচ্ছিলেন না। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনেও দেখা গেল নানারকম বিচিত্র ঘটনা।

অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির নেটে সমস্যা। প্রায়ই শোনা যাচ্ছিল না মিরাজের কথা। কয়েকবার এমন হওয়ার পর আর লম্বা করা হলো না সেটি। দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে মাঝপথেই থেমে গেল সংবাদ সম্মেলন। ফলে ম্যাচ নিয়ে খুব ভালো কোন বিশ্লেষণও শোনা গেল না মিরাজের মুখ থেকে। শুধুই পুরনো কিছু কথা বললেন নতুন করে।

ফলে সকালের আকাশের মতই কালো ছিল আজকের দিন। কালো ছিল মিরাজের মুখও। চট্টগ্রাম টেস্টেও খুব একটা ভালো বল করতে পারেননি। আজও সাকিব, তাইজুলদের সাথে তাল মেলাতে পারেননি। নিজের বোলিং নিয়েও তাই একটু চিন্তিত মনে হলো এই স্পিনারকে। জানালেন সাকিব-তাইজুলদের আর কেউ সাপোর্ট দিতে পারলে বের করা যেত আরো কিছু উইকেট।

সকালে নতুন বলে পেসারদের বোলিং নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘টেস্ট ম্যাচের শুরুতেই পেসারদের উইকেট নেয়াটা আসলে খুব জরুরি। আজ সকালে আমাদের পেসাররা যদি আর ২-১ টা উইকেট নিতে পারতেন তাহলে আমাদের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যেত। তবুও সাকিব ভাই, তাইজুল ভাই ভালো বোলিং করেছেন। তবে সাথে আমরা আরেকটু ভালো চেষ্টা করলে হয়তো আরো সহজ হয়ে যেত।’

তবে পাকিস্তানের জন্য দিনটা একেবারে খারাপ ছিল না। মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান করে বড় সংগ্রহের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। এছাড়া মিরপুরের উইকেটে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করার চ্যালেঞ্জও আছে বাংলাদেশের সামনে। তবে মিরাজ এখনই এতকিছু ভাবছেন না। তাঁর মতে এখনো অনেক সময় বাকি, হতে পারে অনেক কিছুই। যদিও বৃষ্টির কারণে পরের দিন গুলোতেও ম্যাচ বিঘ্নিত হতে পারে।

ম্যাচের পরিস্থিতি নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘আমরা আরো দুইটা উইকেট নিলে হয়তো ভালো হতো। তবে এখনো অনেক সময় আছে। ম্যাচে অনেক কিছুই হতে পারে। আমরা স্পিনাররা চেষ্টা করবো ম্যাচটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে।’

মিরাজের কথা মতো পরের দিনগুলোতে খেলা জমে উঠুক সেই আশাই থাকলো। তবে আজকের দিনটা, মাঠের ক্রিকেট, সংবাদ সম্মেলনে সবই যে ম্যাড়ম্যাড়ে ছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link