‘বড়’ তারকার বড় চ্যালেঞ্জ

নেপাল ক্রিকেটে চলছে অস্থিরতা। কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরি নিয়ে খেলোয়াড়েরা ও ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন নেপাল (সিএএন) পরস্পর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। কেন্দ্রীয় চুক্তির নতুন তালিকা বাতিল করে ১১ দফা দাবি সিএএনকে জানিয়েছে ক্রিকেটাররা। এদিকে নেপাল ক্রিকেটের দাবি খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করেই ক্যাটাগরি সাজানো হয়েছে। যার কারণে বেশ কিছু সিনিয়র ক্রিকেটার নেমে এসেছে নিচের ক্যাটাগরিতে। আর বোর্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ক্রিকেটারদের সাথে ছিলেন অধিনায়ক জ্ঞ্যানেন্দ্র মাল্লা ও দীপেন্দর সিং।

আর এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অধিনায়কের পদ থেকে মাল্লা ও সহ অধিনায়কের পদ থেকে দীপেন্দরকে অব্যাহতি দেয় নেপাল ক্রিকেট। একই সাথে বেশ কিছু ক্রিকেটারের ৬ মাসের জন্য কেন্দ্রীয় চুক্তি বাতিল করে বোর্ড। নতুন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নেপাল ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা সন্দীপ লামিছানে।

২১ বছর বয়সী এই লেগ স্পিনার দলের এমন অবস্থায় দায়িত্ব নেওয়াটা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছেন। একই সাথে তিনি জানান দলকে একতাবদ্ধ করে মাঠের ক্রিকেটে মনযোগী করতে সেরা চেষ্টা করবেন তিনি। একই সাথে দলের এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়ে বেশ খুশি এই তারকা।

লামিছানে বলেন, ‘এটা আমার জন্য বেশ সম্মানের নিজের দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া। খেলোয়াড় এবং নেপাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের মাঝে বেশ কিছু বিবাদ চলছ। কঠিন সময়ে আমাদেরকে সবাইকে সবার পাশে দাঁড়াতে হবে। সবাইকে সামনে এগিয়ে এসে নেপাল ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে হবে। নেপাল ক্রিকেটের জন্য এটা বেশ কঠিন সময় তবে আমি মুখিয়ে আছি এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে দলকে সামনে এগিয়ে নিতে।’

সাবেক অধিনায়ক সহ বেশ কিছু ক্রিকেটারের কেন্দ্রীয় চুক্তি বাতিলের পর নেপালের সাবেক অধিনায়ক পরশ খাড়কাও পাশে দাঁড়িয়েছেন ক্রিকেটারদের। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ক্রিকেটারদের পাশে আছি। অবশ্যই সুবিচার করা হবে। আশা করি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন তাদের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিবে। এবং খেলোয়াড়েরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবে। এবং আমাদের ওয়ানডে স্ট্যাটাস ধরে রাখবে সামনে।’

পুবুড়ু দাসানায়েকেও নতুন করে দায়িত্বে আনছে নেপাল ক্রিকেট। নেপালের সাবেক এই কোচ ২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। লামিছানের মতে নেপাল ক্রিকেটের উন্নতির পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান দাসানায়েকেরই। নেপালের বর্তমান অধিনায়ক বলেন, ‘নেপাল ক্রিকেটের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান তার। নেপাল ক্রিকেটের সংজ্ঞাই তিনি তৈরি করেছেন। বিশেষভাবে আমার জন্য যেভাবে সে আমাকে শূন্য থেকে জাতীয় দলের ক্যাম্পে নিয়ে আসে। এটা আমার জন্য খুব বড় সুযোগ ছিলো এবং সব খেলোয়াড়দের জন্যই। যখন পুবুদু ফিরে আসলো নেপালে এরপর বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। আমি ভালো সময় নিয়েই ভাবছি এবং দলকে একতাবদ্ধ রাখতে চেষ্টা করছি।’

অধিনায়কত্ব পেয়েছে বেশ উচ্ছ্বসিত লামিছানে। একই সাথে তিনি আশা করেন মাঠে ক্রিকেটে সেরাটা দিয়ে টেস্ট স্ট্যাটাস পেতে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময়ই একটা ব্যাপারে বলেছি আমাদেরকে বিশ্বকাপ খেলতে হবে এবং টেস্ট মর্যাদাও আনতেও হবে। হ্যাঁ, এই দায়িত্ব পাওয়ার পর এটা আমার জন্য একটা নতুন চ্যালেঞ্জ। টেস্ট মর্যাদা পেতে আমরা আমাদের সেরা চেষ্টাই করবো। আমি এখনো দলের সাথে মাঠে যাইনি তবে দেশের হয়ে নেতৃত্ব দিবো এটা খুব বড় ব্যাপার। শুধু খেলোয়াড় এবং বাকি স্টাফদেরই নয় ৩০ মিলিয়ন মানু্ষের জন্য নেতৃত্ব দিবো ভাবতেই ভালো লাগছে। আমি আপাতত শুধু এটা নিয়েই ভাবছি।’

দলের কঠিন অবস্থায় সবার পাশে থেকে যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে মাঠের ক্রিকেটে মনোনিবেশ করাতে চান লামিচানে। খারাপ সময়ে দলের দায়িত্ব নিয়ে সেরাটা দেওয়াকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছেন এই লেগস্পিনার। লামিছানে বলেন, ‘সব দলই ভালো-খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যায়। এর আগেও অনেক কিছু হয়েছে। আমার জন্য এখান থেকে সামনের দিকে দলকে এগিয়ে নেওয়াটাই চ্যালেঞ্জ। যারা দেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখছে, পারফরম করার স্বপ্ন দেখছে এবং আমার জন্য অধিনায়ক হিসেবে সবার সেরাটা বের করে আনাই মূল চ্যালেঞ্জ। আপাতত ম্যাচ জিততে এটাই আমার জন্য সেরা মোটিভেশান।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link