টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দারুণ এক সময় কাটিয়েছে এ বছর। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ তো পুরো বছরটাকেই একেবারে রাঙিয়ে দিল। এছাড়া এই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে পুরো বছরই নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে দলগুলো। ফলে পুরো বছর বিশ্বের সেরা ক্রিকেটাররা নিজেদের মধ্যে ক্ষুদ্রতম ফরম্যাটে লড়াইটা করেছে বেশ।
এছাড়া বাবর আজম, মোহম্মদ রিজওয়ান, মার্টিন গাপটিল, জশ বাটলারের মত ক্রিকেটাররা এই বছর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে রাঙিয়ে রেখেছিলেন। সবমিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এবছরের সেরা প্রভাবশালী ইনিংস গুলোকে একত্র করেছে খেলা৭১।
- ডেভন কনওয়ে (নিউজিল্যান্ড): ৫৯ বলে ৯৯
এই বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উঠে আসা দারুণ এক ক্রিকেটারের নাম ডেভন কনওয়ে। এবছর নিজের অভিষেক টেস্ট ম্যাচেই লর্ডসে সেঞ্চুরি করেন কনওয়ে। এরপর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও দারুণ সময় পার করেছেন। অজিদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাত্র ১৯ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল নিউজিল্যান্ড।
কনওয়ের কাঁধে তখন পাহাড় সমান দায়িত্ব। তখনই নিজের সেরাটা আরেকবার দেখালেন। মাত্র ৫৯ বলে ৯৯ রানের এক ইনিংস খেলে এই ফরম্যাটেও নিজের ক্লাসটা চেনালেন। তাঁর ১০ চার ও ৩ ছয়ে সাজানো সেই ইনিংসের কারণে ৫৩ রানের জয় পায় নিউজিল্যান্ড।
- বিরাট কোহলি ( ভারত): ৫২ বলে ৮০
ব্যাট হাতে নিজের সেরা সময়ে নেই বিরাট কোহলি। অনেকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বড় ইনিংস খেলতে পারছেন না। এছাড়া দল হিসেবেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খুব একটা ভালো করেনি ভারত। তবে এতকিছুর মধ্যেও এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন কিং কোহলি।
এবছর ভারতের ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে এসেছিল ইংল্যান্ড। সেই সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ওপেন করতে নামেন বিরাট কোহলি। সেই ম্যাচেই ৫২ বলে ৮০ রানের এক ইনিংস খেলেন কোহলি। ৭ চার ও ২ ছয়ের সেই ইনিংসটির স্ট্রাইকরেট ছিল ১৫৩.৮৫।
- কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড): ৪৮ বলে ৮৫
নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল অধিনায়কদের একজনে পরিণত হয়েছেন কেন উইলিয়ামসন। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা দলে পরিণত করেছেন নিউজিল্যান্ডকে। এবছর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপও জয় করেছে তাঁর দ।
এছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও রানার্স হয়েছে তাঁর দল। ফাইনাল ম্যাচে স্মরণীয় এক ইনিংস খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। বিশ্বকাপ ফাইনালে অজিদের বিপক্ষে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৮৫ রান। মাত্র ৪৮ বলের সেই ইনিংসটিতে ছিল ১০ টি চার ও ৩ টি ছয়।
- মোহম্মদ রিজওয়ান (পাকিস্তান): ৫৫ বলে ৭৯
এবছর বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় ম্যাচ ছিল ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল গ্রুপ পর্বে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। বিশ্বকাপে এই দুই দলের ম্যাচ নিয়ে ছিল নানা উত্তেজনা। যদিও মাঠের ক্রিকেটে পুরোপুরি রাজত্ব করেছে পাকিস্তানই।
ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ১৫২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। সেই ম্যাচ পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহম্মদ রিজওয়ানই শেষ করে দেন। দুজন মিলেই দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। ওই ম্যাচে মোহম্মদ রিজওয়ান ৫৫ বলে ৭৯ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলেছিলেন।
- মিশেল মার্শ (অস্ট্রেলিয়া): ৫০ বলে ৭৭
অস্ট্রেলিয়ার এই অলরাউন্ডারই বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের জয়ের স্বপ্ন ধুলোয় মিশিয়ে দেন। ফাইনাল ম্যাচে প্রথম ইনিংসে উইলিয়ামসন দারুণ একটি ইনিংস খেলেছিলেন। তবে মার্শ পরে এসে সবকিছু ছাপিয়ে যান। অস্ট্রেলিয়াকে এনে দেন প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা।
ফাইনাল ম্যাচে অজিদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৭৩ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা ভালো শুরু পায়নি অজিরা। তবে পরে মার্শের ৫০ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে ১৮.৩ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌছে যায় অজিরা।