এ বছরের শুরুতেও একবার নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেই সফরে কোন টেস্ট ম্যাচ ছিল না। এবার শুধু টেস্ট সিরিজ খেলতেই আবার নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ দল। এ বছরটা খুব একটা ভালো যায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য। ফলে আগামীকাল নতুন বছরের প্রথম দিনেই শুরু হওয়া টেস্ট ম্যাচ নিয়ে থাকবে অনেক আশা ও প্রত্যাশা।
তবে খেলাটা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বলেই কপালে ভাঁজ বাংলাদেশের দর্শকদের। এই দেশে যে এখনো কোন ম্যাচে জয়ের স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। ফলে কিউই কন্ডিশনে দেশটির পেস বোলারদের সামলেন কী পরিকল্পনা করছেন মুমিনুলরা সেটা জানিয়েছেন ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে।
নিউজিল্যান্ডের উইকেট নিয়ে মুমিনুল বলেন, `আমার কাছে যেটা মনে হয় আপনি নিউজিল্যান্ডে আসার আগে যেভাবে চিন্তা করবেন উইকেট এমনই হবে। নিউজিল্যান্ডে বিশেষ করে বিদেশি খেলার সময় মানইন্ডসেট গুরুত্বপূর্ণ। আগে যদি চিন্তা করেন বল খেলা চ্যালেঞ্জিং হবে, তাহলে খেলাটা আসলেই কঠিন হবে। আমার কাছে মনে হয় যেহেতু ব্যাটিং করে ব্যাটাররা উপভোগ করবে, বোলাররাতো ভালো অনুভব করবেই। সুন্দর উইকেট। প্রথম এক দেড়ঘন্টা হয়তো চ্যালেঞ্জটা বেশি থাকবে। নিউজিল্যান্ডের উইকেট যেমনটা হয় আর কি। নিউজিল্যান্ড সব সময় আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং।ওদের যেহেতু স্পিনার যেহেতু নেই। আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ হবে পেস বোলিং আক্রমণ। এটা আপনারা আমরা সবাই জানি। নিউজিল্যান্ডে আসলে আমাদের জন্য পেস বোলিং আক্রমণই সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে থাকে। এই চ্যালেঞ্জটা আমাদের নেওয়া উচিত।‘
ওদিকে বাংলাদেশের মূল শক্তি স্পিন হলেও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে স্পিনাররা কতটুকু কাজে লাগবে সেই প্রশ্নও জাগে। অবশ্য পেস বোলিং আক্রমণে আছে তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলামের মত পেসাররা। একাদশ নিয়ে কী ভাবছেন এমন প্রশ্ন করা হলে একটা রহস্য মধ্যে থেকে উত্তর দিয়েছেন মুমিনিল হক।
একাদশ নিয়ে বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক বলেন, `দল ঠিক হয়ে গেছে। কালকে সকালে আরেকবার হয়তো রিভিউ করা হবে। ১২ জনের দল আমরা দিয়ে দিয়েছি। হয়তো আপনারা এটা পেয়ে যেতে পারেন। তারপর সকালে আরেকবার দেখে হয়তো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।‘
তবে মুমিনুল একদশ নিয়ে দোলাচলে রাখলেও বোলিং আক্রমণ নিয়ে বাংলাদেশ দলের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গ। তিনি চান পেস বোলারদের দিয়ে আক্রমণ সাজাতে। তবে একাদশে একজন স্পিনার রাখার কথাও জানিয়েছেন এই কোচ।
বোলিং আক্রমণ নিয়ে তিনি বলেন, `উইকেট এখনও দেখিনি, অপেক্ষা করছি কিউরেটর এসে আমাদের দেখাবেন। ধারণা করছি, ভালো উইকেট হবে। প্রথম দিনে একটু ঘাসের ছোঁয়া থাকবে। আমাদের হয়তো এরকম একটি দল বাছাই করতে হবে যা দুই দিকই কাভার করবে, কিছুটা পেস ও কিছুটা স্পিন। কারণ, আমার মনে হয়, এখানে চতুর্থ ও পঞ্চম দিনে উইকেটে স্পিন ধরে। এমনিতে আমাদের শক্তির জায়গা ম্পিন। তবে এখানে আমাদের বেশ কিছু ভালো সিমার আছে, যাদেরকে নিয়ে আমরা রোমাঞ্চিত। সত্যি বলতে, সম্ভবত তিন সিমার ও একজন স্পিনার নিয়ে খেলব আমরা।”
নিজের পেসারদের নিয়ে আশাবাদী অধিনায়ক মুমিনুলও। তিনি বলেন, `আপনি যদি দেখেন আমাদের য়ে কয়টা পেস আক্রমণ আছে। তাসকিন কিন্তু শেষ কয়েকটা টেস্টে খুব ভালো বোলিং করেছে। এবাদত শেষ দুই টেস্টে ভালো করেছে। রাহীও ভালো অবস্থায় আছে। শরিফুল, খালেদ, শহিদুল সবাই ভালো অবস্থায় আছে। আমার কাছে মনে হয় এক দেড় বছরে আমাদের পেস আক্রমণ অনেক উন্নতি করেছে। নিউজিল্যান্ড সিরিজে ওদরে দেখতে আমি রোমাঞ্চ অনুভব করছি। এই সিরিজে ওদের কাজটা একটু বেশি। আমি ওদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। আপনারা ভালো কিছু দেখতে পারবেন আমাদের পেস বোলারদের কাছ থেকে।‘
তবে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা ফিল্ডিং। নিউজিল্যান্ড গেলেই যেনো শুরু হয় ক্যাচ মিসের মহড়া। ফিল্ডিং নিয়ে অধিনায়ক মুমিনুল বলেন, `নিউজিল্যান্ডে চারদিক খুব বাতাস থাকে। ওই অ্যাডজাস্টম্যান্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ আপনি যখন ফিল্ডিং করবেন। আমরা ফিল্ডিং নিয়ে ফিল্ডিং কোচের সঙ্গে টেকনিক্যালি কাজ করেছি। ভালো ফিল্ডিং করতে আত্মবিশ্বাসী আমরা। স্লিপ ক্যাচ নিয়ে প্রফেশনাল দল হিসেবে সব সময় আপনাকে কাজ করতে হবে। যারা স্লিপে দাঁড়ায়, যারা ইনআর সার্কেল, আউটার সার্কেলে দাঁড়ায়, তারা তাদের মতো অনুশীলন করে নিবে। আমাদের দলে এই জিনিসটা কন্টিনিউ হচ্ছে। আমি প্রসেসটা নিয়ে এগুতে পারি, রেজাল্ট হয়তো পরে দেখা যাবে। এমন করার পর হয়তো ক্যাচ মিস হতেও পারে। তবে প্রসেস মানা হচ্ছে কিনা সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’