খাজাকে অস্ট্রেলিয়া বাদ দিবে কী করে!

ঠিক ২৮ মাস পর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ফিরলেন তিনি। তাও অ্যাশেজের মত মহাগুরুত্বপূর্ণ এক মঞ্চে। ফিরেই প্রথম ইনিংসে করলেন সেঞ্চুরি। ফিরে আসার কত কাব্য লিখা হলো। তবে উসমান খাজার উপন্যাস তখনো বাকি ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে আবার সেঞ্চুরি। এবার অপরাজিত। ফিরে আসার গল্প বুঝি এভাবেই লিখতে হয়। উসমান খাজা অজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে কড়া নাড়েন সবসময়ই। যখনই দরজাটা খুলে দেয়া হয়, খাজা নামের এক রাজার প্রত্যাবর্তন হয় তখন।

সিডনিতে পরপর দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি। অ্যাশেজ ম্যাচের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়লেন। ফিরে আসলেন আবার। দেখালেন আমি এই জায়গাটার জন্যই তৈরি। তবে আসলেই কি খাজা ফিরে আসতে পারলেন। নাকি আবারো দরজা কড়া নেড়ে যেতে হবে অনন্ত কাল। নাকি খাজা কড়া নেড়ে যাচ্ছেন ভুল কোন দরজায়।

এমনভাবে ফিরে আসার পর, এমন পারফর্মেন্সের পর কোন ব্যাটসম্যানের একাদশে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। কোন ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ এই দুঃসাহস দেখাতে পারে? অস্ট্রেলিয়া বোধহয় পারে। তাইতো পরের সপ্তাহে খাজা একাদশে থাকবেন কিনা তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। এই এক প্রশ্নেই টাল মাটাল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। অজিরা উসমান খাজাকে বাদ দিবে কী করে।

ট্রেভিস হেডের কোভিড পজেটিভ আসায় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। সুযোগ পেয়ে পরপর দুটি সেঞ্চুরি করলেন। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেন। তবুও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে এখন শোনা যায় পরের ম্যাচে খাজা খেলবেন কিনা। খাজাকে অজিরা জায়গা করে দিতে পারবে কিনা।

ট্রেভিস হেডকে তাঁর জায়গা ফিরিয়ে দিতে চায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। প্রথম টেস্টে দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন তিনি। এছাড়া স্কট বোনাল্ডও বল হাতে উইকেট নিয়েছেন। তিনিও পরের ম্যাচে খেলবেন। ফলে টানা দুই সেঞ্চুরি করা খাজাই জায়গা হারাতে চলেছে পরের টেস্টে।

অজিদের এই কঠিন বাস্তবতা নিজেও বুঝতে পারেন খাজা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় নির্বাচকরা যেভাবে ভাবছেন সেটাই ঠিক আছে। এই মুহূর্তে আমিও পরের ম্যাচ খেলার আশা করছিনা। তবে আমি সবসময়ই প্রস্তুত থাকব মাঠে নামার জন্য। হয়তো অন্য কারো কোভিড বা অন্য কিছু হতে পারে। প্রথম ম্যাচে হেড অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন। সেই জায়গায় পরিবর্তন করলে আমি অবাক হবো। স্কটি বোলান্ডও বল হাতে পারফর্ম করেছে। এটাই বাস্তবতা, হয়তো হজম করা কঠিন, তবে এটাই আসলে ক্রিকেট।’

এই ধরনেই বাস্তবতায় খাজা আগেও পড়েছেন। ২০১৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজেও দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। সেই সময় লাবুশে দলে তাঁর জায়গা পাকা করেছিল। পরে স্মিথ ফিরলে খাজাকেই জায়গাটা ছেড়ে দিতে হয়। তবুও খাজা ক্রিকেটের সাথে লড়েছেন। আবার ফিরে এসেছে রাজার মত করে। তবে এবারো একইরকম দুর্ভাগ্য।

তবুও পরের টেস্টে আসলেই কে খেলবেন সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। এই সিদ্ধান্ত নেয়াটাই হয়তো ক্রিকে্ট অস্ট্রেলিয়ার জন্য সবচেয়ে কঠিন হয়ে পড়বে। নির্বাচকরা সবচেয়ে বড় চ্যালঞ্জে বোধহয় এবার পড়লেন। পরের টেস্টের আগে অজিদের ক্রিকেট পাড়ায় শুধু একটিই প্রশ্ন। উসমান খাজাকে অস্ট্রেলিয়া বাদ দিবে কী করে?

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link