পেস আক্রমণ ও সিনিয়র-জুনিয়র

এই টেস্টে যেকোনও ফল আসতে পারে, যেকোনও দিকেই যেতে পারে। প্রথম দিনের খেলায় কিছুই ডিসাইড হয় না। তবে একটা জিনিস খুব খারাপ লাগসে প্রথম টেস্ট জয়ের পর, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে অযথা ফায়ারিং লাইনে দাঁড় করানো।

বিদেশের মাটিতে সাকিব নিয়মিত ভালো খেলসে, নিয়মিত বলসে ফুল নিয়মিত- প্রথম তিন ইনিংসেই ১১ উইকেট, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েই ৫ আর ৬ উইকেট। এছাড়াও, ম্যানচেস্টার, সেন্ট জর্জ, কিংস্টনে সাকিবের ৫/৬ উইকেট আছে ইনিংসে।

নিউজিল্যান্ডে প্রথম সফরের প্রথম ম্যাচেই ওয়েলিংটনে ৪১, পরের সফরে দুই ইনিংসে হ্যামিলটনে ৮৭ আর ১০০। তামিমও, ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টেই ডানেডিনে দুই ইনিংসেই ফিফটি, ৫৩ , ৮১।

এখন আসি আসল কথায়।

বিদেশে মানে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ায় আপনাকে ব্যাটসম্যানরা টেস্ট ড্র করতে সাহায্য করতে পারে, একটা ভালো জায়গায় নিয়ে আপনাকে দাঁড় করাতে পারে। স্পিনাররা ব্রেক থ্রু এনে দিতে পারে। তবে এখানে মোমেন্টামটা জিতে নেয় ফাস্ট বোলারদের স্পেলগুলোই, বাংলাদেশের একজন ফাস্ট বোলার পেরেছে, এবাদত হোসেন।

ওই টেস্টে দিনের শুরুর ষোল আনা সুফল নিতে, দিন শেষের রিভার্সের সুফল নিতে, এজন্যই টেস্টে নতুন বল পুরাতন বল নিয়ে এতো আলোচনা হয়।

এবং এই খেলাতে জিতেই বাংলাদেশ টেস্টটা জিতে গেছে, একটা সেশনে পেসাররা ব্যর্থ হলেই নিউজিল্যান্ড এই ম্যাচকেই অন্যদিকে নিয়ে যেতে পারতো, তখন আর জয়ের ইনিংস, মুমিনুলের ইনিংস, লিটনের ইনিংস কোনও কাজে আসতো না।

এটা ফ্যাক্টরির মেশিনের মতো, আপনার প্রোডাক্ট এক জায়গা থেকে প্রডিউসিং শুরু হবে সেটা প্যাকেজিং পর্যন্ত ব্যাক এন্ডে মানুষ কাজ করে, এই কাজটা এমন, যে আপনি একে অপরের কাজকেই কমপ্লিমেন্ট দিচ্ছেন। আসল জায়গাও এইটাই যে কারণে ২০০৯ সালে শেষবার টেস্ট খেলা মাশরাফি বিন মুর্তজা এখনো টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট নেয়া ফাস্ট বোলার।

অথচ, কামরুল ইসলাম রাব্বির হাতে সুইং ছিল, তিনি দেখিয়েছেনও ঝলক, দরকার ছিল বিশ্বাস রেখে, দলের সামগ্রিক কাঠামোর সাথে একাত্ম রাখা। সাথে তাসকিন আহমেদ, নতুন এবাদত হোসেন, এর আগের মধ্যে মোহাম্মদ শহীদ যদি আরেকটু ডিসিপ্লিন্ড থাকতো।

আবু জায়েদ রাহী সেখানে, পাকিস্তানের আব্বাসের মতো ভূমিকা পালন করতে পারতেন! মানে এই হিসেবগুলো একেকটা মেইজের রাস্তার মতো। মিলে গেলে আরও দুই তিনটা টেস্ট বাংলাদেশের হাতে আসতে পারতো।

টেস্ট ক্রিকেট যে ওই সব দেশে পেস বোলাররাই জেতাতে পারে সেটা দেখতে আপনি ২০১০-১১ এর দিকে মোহাম্মদ আমির কিংবা মোহাম্মদ আসিফের কিছু বোলিং দেখতে পারেন।। একই সাথে ভারতের বর্তমান পেস বোলিং ইউনিট।

ভারত এখন টেস্ট জিতছে অস্ট্রেলিয়ায়, ইংল্যান্ডে, দক্ষিণ আফ্রিকায়, তাতে করে ভারতের ক্রিকেটে শচীন, দ্রাবিড়, লক্ষণরা ছোট হয়ে যাচ্ছে না, তারা পেস বোলার ছিলেন না, তারা তাদের কাজটাই করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link