গত এক দশকে পৃথিবী ঠিক কতখানি বদলে গেছে তা হয়ত শব্দখেলায় বেঁধে ফেলা দুষ্কর। তবে ক্রিকেট অঙ্গনে ভারতের ইতিবাচক উন্নতি নিশ্চয়ই কারো চোখ এড়ায়নি। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ব্যাপক বিস্তার সর্বাত্মকভাবেই ভারতের ক্রিকেট উন্নয়নে প্রভাব ফেলেছে। সেই সাথে সাফল্য এসেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও। তাছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামোর পরিপক্কতা জাতীয় দলের পাইপলাইনকে করেছে সমৃদ্ধ।
একগাদা প্রতিভাবান তারকাদের ভিড়ে অনেক খেলোয়াড়ের জাতীয় দলের ক্যারিয়ার স্থায়ী হয়নি বিগত এক দশকে। ২০১০ সাল থেকে এখন অবধি অল্প সময়ের জন্যে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া খেলোয়াড়দের সংখ্যাটা নেহায়েৎ কম নয়। ওয়ানডেতে একটি ম্যাচ খেলেই বাদ পড়ে যাওয়াদের নিয়েই হবে আজকের আলোচনা।
- সাঞ্জু স্যামসন
প্রথমেই থাকছেন আইপিএলের কল্যাণে ক্রিকেট পাড়ায় দ্যুতি ছড়ানো তরুণ উইকেট কিপার ব্যাটার সাঞ্জু স্যামসন। ২০২১ সালে ভারতীয় ওয়ানডে জার্সিটা গায়ে জড়ানোর সুযোগ পান স্যামসন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই ৪৬ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই এক ম্যাচেই জুটেছে তাঁর কপালে এখন অবধি। এরপর নির্বাচকরা আর বিবেচনা করেননি তাঁকে।
- পারভেজ রাসুল
পৃথিবীর স্বর্গ খ্যাত জম্মু ও কাশ্মীর এর ছেলে পারভেজ রাসুল একজন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে জায়গা পেয়েছিলেন ভারত জাতীয় দলে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি মাত্র ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন পারভেজ।
সেই ম্যাচে ব্যাটিং করার সুযোগ না পেলেও বোলিং কোটা পূর্ণ করে উইকেট নিয়েছিলেন দুইটি। রান দিয়েছিলেন ৬.০০ ইকোনমি রেটে। সেটাই ছিল পারভেজ রাসুলের প্রথম ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচ।
- ফাইজ ফজল
অভিষেক ম্যাচেই সেই ম্যাচ জেতানো পারফর্মেন্স করেছিলেন ফাইজ ফজল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৬ সালে ৫৫ রানে ছিলেন অপরাজিত। তাঁর সেই অনবদ্য পারফর্মেন্সের জোরেই ম্যাচটি জিতেছিল ভারত। কিন্তু অদ্ভুত কারণে তাঁকে আর দলে দেখা যায়নি। এর আগে পরে ভারতের হয়ে কোনো ফরম্যাটেই সুযোগ পাননি তিনি।
- ওয়াশিংটন সুন্দর
অফ স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি মাত্র ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। ম্যাচটিতে নিজেকে খুব একটা মেলে ধরতে পারেননি সুন্দর। ৬৫ রান খরচায় নিয়েছিলেন একটি উইকেট। সেই কারণেই হয়ত ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করে যাওয়া ওয়াশিংটন সুন্দর সুযোগ পাননি জাতীয় দলে।
- মোহাম্মদ সিরাজ
ভারতের হয়ে ১২টি টেস্ট খেললেও মোহাম্মদ সিরাজ খেলেছেন মাত্র একটি ওয়ানডে ম্যাচ। ক্রিকেটের আরেক পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। সেই ম্যাচে দশ ওভার বোলিং করেও একটিও উইকেটের দেখা পাননি মোহাম্মদ সিরাজ।
২০১৯ সালে খেলা সেই ম্যাচে তিনি ৭৬ রান খরচা করেছিলেন। এরপর সিরাজকে আর একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা যায়নি। তবে, জাতীয় দলের হয়ে তিনি দিব্যি টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি খেলে যাচ্ছেন।
- শিভম দুবে
মোহাম্মদ সিরাজের মতো অলরাউন্ডার শিভাম দুবে ভারতের হয়ে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১৯ সালে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্যাট হাতে কেবল নয়টি রান করেছিলেন।
পক্ষান্তরে, বল হাতে খরচ করেছিলেন ৬৭ রান। উইকেটের ট্যালি ছিল ফাঁকা। সেই কারণেই তিনি বাদ পড়ে যান দল থেকে। এরপর তাঁর আর জাতীয় ওয়ানডে দলে ফেরা হয়নি। যদিও, তাঁর ফেরার সুযোগ এখনও ফুরিয়ে যায়নি।