ক্ষনে ক্ষনে রঙ বদলানোর ম্যাচে শেষ ওভারের শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে ফরচুন বরিশালকে মাত্র ১ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শিরোপা জিতলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
লক্ষ্যমাত্রা ১৫২! শুরুতেই ফর্মের তুঙ্গে থাকা মুনিম শাহরিয়ারকে হারিয়ে বিপাকে বরিশাল। তবে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন সৈকত আলি। সুনিল নারাইনের ইনিংসকে অনুসরণ করে খেললেন ৫৮ রানের ঝড়ো এক ইনিংস। সৈকতে ৩৪ বলে ৫৮ রানেই জয়ের ভীত পায় বরিশাল। ক্রিস গেইলের সাথে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে গড়েন ৫০ বলে ৭৪ রানের জুটি!
দলীয় ৭৯ রানে সৈকত ফিরলেও তৃতীয় উইকেটে নুরুল হাসান সোহানের সাথে ২৮ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নেন গেইল। দলীয় ১০৭ রানে গেইল ৩১ বলে ৩৩ রানে ফিরলে দ্রুতই ফিরেন সাকিবও। দলীয় ১১৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বরিশাল।
পঞ্চম উইকেটে নাজমুল শান্তর সাথে ১৬ রানের জুটিতে জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে আরিফুলের দুর্দান্ত থ্রো’য়ে সোহান ফিরেন রান আউট হয়ে। শেষ ৩ ওভারে দরকার ছিলো ১৮ রানের। ১৮ তম ওভারের প্রথম বলেই ব্রাভোকে ফেরান নারাইন! ওই ওভার থেকে দেন মাত্র দুই রান! ম্যাচে তখন টান টান উত্তেজনা।
শেষ ২ ওভারে দরকার ছিলো ১৬ রানের, হাতে ৪ উইকেট। ১৯ তম ওভারে নাজমুল শান্তকে ফিরিয়ে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন মুস্তাফিজ! শেষ ওভারে দরকার ছিলো ১০ রানের, ক্রিজে মুজিব উর রহমান ও তৌহিদ হৃদয়। সেখান থেকে শেষ বলে প্রয়োজন ৩ রানের! তবে এক রানের বেশি নিতে পারেননি তৌহিদ হৃদয়! মাত্র ১ রানে হেরে যায় ফরচুন বরিশাল।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সুনীল নারাইনের তাণ্ডবে উড়ন্ত সূচনা করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মুজিব উর রহমান, শফিকুলদের উপর তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র ২১ বলেই ফিফটি তুলে নেন এই ক্যারিবিয়ান তারকা। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ১৩ বলে ফিফটির পর ফাইনালে দেখা পেলেন ২১ বলে ফিফটির!
দলীয় ৪০ রানে সাকিবের শিকার হয়ে মাত্র ৪ রানে ফিরেন লিটন দাস। তবে একপ্রান্তে তাণ্ডব চালাতে থাকেন নারাইন। দলীয় ৬৯ রানে শফিকুল ইসলামের বলে বাউন্ডারি ধরা পড়লে ব্যক্তিগত ২৩ বলে ৫ ছক্কা ও ৫ চারে ৫৭ রানে আউট হন নারাইন!
এরপরই পালটে যায় ম্যাচের চিত্র। মুজিব, ব্রাভোদের দাপুটে বোলিং আর ফিল্ডারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে একে একে উইকেট হারাতে থাকে কুমিল্লা। মাহমুদুল হাসান জয়, ফাফ ডু প্লেসিস, ইমরুল কায়েসরা দ্রুত ফিরলে ৬৯ রানে ১ উইকেট থেকে ৯৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে তখন ব্যাকফুটে কুমিল্লা।
সপ্তম উইকেটে মঈন আলী ও আবু হায়দার রনির ৫৪ রানের জুটি কুমিল্লার প্রাণ ফেরালেও শেষদিকে ব্রাভো-শফিকুলদের বোলিং নৈপুণ্যে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫১ রানের বেশি তুলতে পারেনি কুমিল্লা। মঈন আলী ৩২ বলে ৩৮ ও রনি করেন ১৯ রান। বরিশালের পক্ষে মুজিব ও শফিকুল দু’টি করে উইকেট শিকার করেন!
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স – ১৫১/৯ (২০ ওভার); নারাইন ৫৭(২৩), মঈন ৩৮(৩২), রনি ১৯(২৭); মুজিব ৪-০-২৭-২, শফিকুল ৪-০-৩১-২, ব্রাভো ৪-০-২৬-১।
ফরচুন বরিশাল – ১৫০/৮ (২০ ওভার); সৈকত ৫৮(৩৪), গেইল ৩৩(৩১); নারাইন ৪-০-১৫-২, তানভীর ৪-০-২৫-২।
ফলাফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: সুনীল নারাইন (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স)