লিটনের সঙ্গী: নাঈম নাকি মুনিম!

কী এক স্বপ্নের মত ব্যাপার। যেন নিজেও ঠিক বুঝতে পারছেন না কী ঘটছে। শুধু দেখা যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই যেন। মুনিম শাহরিয়ার হয়তো ভাবছেন এটা একটা স্বপ্নই। এই সকালটা হলেই বুঝি সব আবার আগের মত হয়ে যাবে। তবে মুনিম শাহরিয়ার আসলে স্বপ্নটা দেখছে না বরং ময়মনসিংহের এই ছেলেকে নিয়েই এখন স্বপ্ন দেখছে গোটা বাংলাদেশ।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওপেনিং নিয়ে যে সংকট সেটা বাংলাদেশ কাটিয়ে উঠতে চাইছে এই মুনিম শাহরিয়ারের হাত ধরেই। অথচ বছর খানেক আগেও বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায় খুব একটা পরিচিত নাম ছিলেন না মুনিম শাহরিয়ার। গত বছর ডিপিএলে আবাহনীর হয়ে প্রথম নজরটা কাড়লেন। দারুণ একটা মৌসুম কাটিয়েছেন। সেটাও সুযোগ মিলেছিল মূলত লিটন দাসের কারণে।

তবে সেখানেই সংগ্রামটা থামলো না। গত বছর ডিপিএলের অন্যতম সেরা পারফর্মারকে বিপিএলের ড্রাফট থেকে নিল না কোন ফ্র্যাঞ্চাইজ। আবারো হতাশার সাগরে ডুব দিলেন মুনিম শাহরিয়ার। তবে বিপিএল শুরুর আগে তাঁকে দলে ভিড়ায় ফরচুন বরিশাল। সেটাও খুব সম্ভবত খালেদ মাহমুদ সুজনের কারণেই।

তবে বরিশালের হয়েও সহজে সু্যোগটা আসেনি। শুরুর দিকের ম্যাচ গুলোতে বরিশালও অনেক ঘাটে জল খেয়ে তবে মুনিমের দারস্থ হয়। আর এরপরেই পুরো বাংলাদেশ মাত করে দেন এই ওপেনার। হার্ডহিটিং, ফিয়ারলেস ব্যাটিং দিয়ে নজর কাড়েন সবার। মাস দুয়েক আগেও বিপিএলে দল না পাওয়া মুনিমই এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের অপেক্ষায়। \

আগামীকালই মাঠে গড়াচ্ছে আফগানিস্তানের সাথে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। মিরপুরে লিটনের সাথে কে ওপেন করবেন তা এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। অনেকদিন ধরেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে নিয়মিত ওপেন করছেন নাঈম শেখ। তবে তাঁর স্ট্রাইকরেট নিয়ে আছে সমালোচনা এবং পাকিস্তানের বিপক্ষেও এই ওপেনার ছিলেন ফ্লপ। এরপর বিপিএলেও  তবুও স্কোয়াডে আছেন তিনি।

ফলে নাঈম নাকি মুনিম কে ওপেন করতে যাচ্ছেন সেটাই এখন বড় আলোচনা। তবে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন দেখে স্পষ্ট যে মুনিমের ব্যাপারেই বেশি আগ্রহী বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের নেটেও এই ওপেনারকে নিয়ে আলাদা করে কাজ করেছেন ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স। জহুর আহমেদে বিশাল বিশাল সব ছয়ও মেরেছেন তিনি। আজও মিরপুরের ইনডোরে নেটে সবার আগে ব্যাট করতে গেলেন এই ব্যাটসম্যান।

নেটে বোলারদের নানারকম শট খেলছিলেন। দলের সবার বাহবাও পাচ্ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশ দল আগামীকাল মুনিমকে দিয়ে ইনিংস শুরু করতে চায় বলেই জানা যায়। এছাড়া খালেদ মাহমুদ সুজনও মুনিমকে নিয়ে আশার কথা জানিয়েছিলেন বিপিএল ফাইনালের পর।

মুনিমের ব্যাটিং নিয়ে সুজন বলেছিলেন, ‘মুনিম আসলে ফিয়ারলেস ক্রিকেটটা খেলে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে জন্য এমন ব্যাটসম্যান কিন্তু বাংলাদেশে সহজে আসে না যে ১৬০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করতে পারে। আর আমি মনে করিনা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য অভিজ্ঞতা খুব প্রয়োজন। ফলে আজ কিংবা কাল এই ফরম্যাটে তাঁকে নিয়ে ভাবা উচিৎ।’

এছাড়া আজ ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ জানিয়েছেন আগামীকাল ম্যাচে বেশ ভালো ভালো ভাবেই পরিকল্পনায় আছেন মুনিম। তিনি বলেন, ‘মুনিমের ভালো সুযোগ আছে কালকে খেলার। তবে এখনই ঠিক বলতে পারছিনা। আমরা প্ল্যান করবো ব্যাটিং অর্ডারটা কীভাবে সাজানো যায়।’

মূলত পাওয়ার প্লের সময়টা কাজে লাগানোর জন্যই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মুনিমকে প্রয়জোন। বাংলাদেশ মূলত ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে যায় প্রথম ছয় ওভারের সুবিধা কাজে লাগাতে না পেরে। ফলে মুনিম ম্যাচের শুরুতেই প্রতিপক্ষে দলের উপর চাপ তৈরি করবেন এটাই চাওয়া।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link