কারা সেই ১১ জন!

আমরা একটু ভাবার চেষ্টা করলাম যে, কেমন হবে পারে সেই দলটা। আমাদের দলে ৮ ব্যাটসম্যান রেখেছি। আবার দলে ৫ জন জেনুইন বোলার আছে। এর মধ্যে সাকিব ও মাহেদির মত দু জন অলরাউন্ডার আছেন। দলে পেসার রাখা হয়েছে দু জন।

আগামীকাল আবার টি-টোয়েন্টির অঙ্গনে ফিরতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মাঝে কিছুদিন এই ফরম্যাটে একদমই সুখের সময় যায়নি। ফলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটু অন্যরকম কিছু করতে হবে।

আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টির খুব ভালো দল। ফলে তাদের হারাতে হলে একটা আক্রমনাত্মক দল না করলে বিপাকেই পড়তে হবে। আমরা একটু ভাবার চেষ্টা করলাম যে, কেমন হবে পারে সেই দলটা। আমাদের দলে ৮ ব্যাটসম্যান রেখেছি। আবার দলে ৫ জন জেনুইন বোলার আছে। এর মধ্যে সাকিব ও মাহেদির মত দু জন অলরাউন্ডার আছেন। দলে পেসার রাখা হয়েছে দু জন।

  • মুনিম শাহরিয়ার

এই একাদশে সবার আগে নাম লিখে ফেলা উচিত মুনিম শাহরিয়ারের। তিনি ব্যর্থ হতে পারেন, সফল হতে পারেন। পারফরম্যান্স যাই হোক, তার ওপর বাজি ধরতে হবে।

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টিতে অন্যতম বড় একটা দুর্বলতা হলো পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে না পারা। আর তার পেছনের কারণ, আমাদের ওপেনিংয়ে কোনো পাওয়ার হিটার নেই। এই দুর্বলতাটা ঘুচিয়ে দিতে পারেন আনকোরা মুনিম।

বিপিএল এবং ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে মুনিম প্রমাণ করেছেন, তিনি যে কোনো বোলারের বিপক্ষে ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠতে পারেন। মুনিমকে রেখে টি-টোয়েন্টিতে আবারও নাঈম শেখের দিকে হাত বাড়ালে সেটা খুবই রক্ষনাত্মক একটা সিদ্ধান্ত হবে।

  • আফিফ হোসেন ধ্রুব

মুনিমের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ ভারসাম্য তৈরি করতে পারেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ধ্রুব ট্রাডিশনাল স্লগার না। তিনি খারাপ বলকে পিটিয়ে বের করে দিতে পারেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, বাংলাদেশ দল পাওয়ার প্লেতে অনেক ডট বল খেলে ফেলে।

ফিল্ডিং কাছে থাকার পরও এই সময় সিঙ্গেল বের করায় দারুন কার্যকর হবেন আফিফ। এক প্রান্তে মুনিমের আগ্রাসন এবং অন্য প্রান্তে আফিফের রানিং বিটউইন দ্য উইকেট বাংলাদেশকে নতুন এক অভিজ্ঞতা এনে দিতে পারে।

যদিও ম্যানেজমেন্ট তাদের চির মুখস্থ পদ্ধতিতে লিটন দাসকে ওপেনিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

  • সাকিব আল হাসান

বিপিএলের আগে হলে তিন নম্বরে সাকিবের ব্যাটিং নিয়ে আমরা একটা দ্বিধা করতাম। কিন্তু ব্যাটসম্যান সাকিব আবার নিজেকে ফিরে পেয়েছেন। ফলে এই পজিশনে শান্তকে ট্রাই করার চেয়ে সাকিব আল হাসানের ওপরই ভরসা রাখা ভালো।

পাওয়ার প্লেতেই সাকিবকে উইকেটে চলে আসতে হলে তিনি সেটা কাজে লাগাতে পারবেন। আবার পরে আসতে হলে রানের চাকা ঘোরাতে পারবেন।

  • লিটন দাস

লিটনকে ৬ নম্বরেও ব্যাট করানো যেতে পারে। তবে মিডল ওভারই তার জন্য সেরা জায়গা। লিটনকে নিয়ে বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্টের সবচেয়ে বড় ভুল ধারণা হলো, তিনি সব ফরম্যাটে নতুন বলের বোলার। এটা একেবারেই সত্যি না।

কম ওভারের খেলায় লিটনকে ওপরে পাঠানো মানে, তার ও দলের ক্ষতি করা। লিটন অন্ধের মত ব্যাট চালাতে পারেন না। তাকে একটু রয়ে সয়ে শুরু করতে হয়। ফলে তাকে সেরকম একটা সময়েই ব্যাট করতে আনতে হবে। পাওয়ার প্লের চাপ তার ওপর দিলে তিনি ইম্প্রোভাইজ করতে গিয়ে আইট হবেন।

অথচ এরকম মিডল অর্ডারে এলে তিনি অনায়াসে ইনিংস বড় করতে পারেন। টিকে গেলে বড় স্কোর করার ফিনিশও করে আসতে পারেন।

  • মুশফিকুর রহিম

স্কোয়াডে মাহমুদুল হাসান জয় থাকলে আমরা হয়তো মুশফিককে একাদশে রাখতাম না। সে ক্ষেত্রে জয় তিন নম্বরে খেলতেন। আর বাকিদের ব্যাটিং অর্ডার এক ধাপ করে পিছিয়ে যেতো। তা না হওয়ায় মুশফিককে খেলাতে হবে।

বিপিএলে মুশফিক খুব খারাপ করেননি। ফলে ৫ নম্বরে তার ওপর ভরসা রাখা যায়।

  • ইয়াসির আলী রাব্বি

এই জায়গাটায় আবার বাংলাদেশের পাওয়ার হিটার দরকার। আর সে ক্ষেত্রে ভালো সমাধাণ হতে পারেন রাব্বি। যদিও ওয়ানডে সিরিজে তার শুরুটা খুব ভালো হয়নি। ফলে মনে হতে পারে, রাব্বিকে দরকার নেই। কিন্তু এই তরুনের ওপর ভরসা রাখতে হবে।

ছয় নম্বরে ব্যাটিং করার ক্ষেত্রে আদর্শ হলো, উইকেটে গিয়ে বল পেটানোর ক্ষমতা থাকতে হবে। সেটা রাব্বির আছে। ভালো একটা ভিত্তি রেখে গেলে রাব্বি স্কোরটাকে অনেক বড় করে ফেলতে পারেন।

  • মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

এই দলের উইক লিংক রিয়াদ। যেহেতু তিনি অধিনায়ক, তাই তাকে আমরা একাদশ থেকে বাদ দিতে পারছি না। প্রশ্ন হলো, তাকে আপনি কোথায় লুকাবেন?

ফিল্ডিংয়ের মতই রিয়াদকে ব্যাটিংয়েও লুকিয়ে রাখাটা দরকার। তার কাছ থেকে এখন আর আগের মত ঝড়ো ইনিংস আশা করা যায় না। ফিটনেস, রিফ্লেক্স সবই কমে এসেছে। তারপরও রিয়াদ খেললে ৭ নম্বরেই খেলা উচিত।

তবে স্কোয়াডে অবশ্যই মোসাদ্দেকের মত কারো থাকা উচিত ছিলো এই জায়গার জন্য। আর সে ক্ষেত্রে রিয়াদের দল থেকে বাদ পড়া এবং সাকিবের অধিনায়কত্ব করাই ছিলো আদর্শ ভাবনা।

  • মেহেদী হাসান

আমরাও জানি, মেহেদী ৮ নম্বরের ব্যাটসম্যান নন। তবে তাঁকে আসলে পিছিয়েই রাখতে হচ্ছে। হয়তো তাকে রিয়াদের আগে ব্যাটিংয়ে পাঠানো যেতে পারে। আবার প্রয়োজন হলে তাকে আপনি টপ অর্ডারেও পাঠিয়ে দিতে পারেন।

মেহেদী এই দলে ভারসাম্য এনে দিতে পারেন তাঁর বোলিং দিয়ে। সাকিবের পাশাপাশি খুবই কার্যকর আরেক জন অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার যোগ্যতা আছে তার।

  • তাসকিন আহমেদ / শরিফুল ইসলাম

উইকেট মিরপুরের বলেই আমরা দলে দু জনের বেশি পেসার রাখার সুপারিশ করছি না। আর সে ক্ষেত্রে এই একটা পজিশন নিয়ে লড়াই হবে তাসকিন আহমেদ ও শরিফুলের ইসলামের মধ্যে।

অভিজ্ঞতার বিবেচনায় তাসকিন একটু এগিয়ে থাকবেন। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিলে শরিফুলও সুযোগ পেতে পারেন।

  • নাসুম আহমেদ

আবারও মিরপুরের উইকেটের কথা বলতে হয়। ট্রাডিশনাল মিরপুরের উইকেট হলে একজন বাড়তি স্পিনার আপনাকে খেলাতে হবে। আর সে ক্ষেত্রে নাসুমই সেরা পছন্দ।

কার্যত স্কোয়াডে বাড়তি স্পিনার হিসেবে খেলার মত আছেন তিনি একাই। ফলে তাকে দলে রাখতে হবে।

  • মুস্তাফিজুর রহমান

মিরপুরের উইকেটে একজন পেসার খেলালেও সেটা মুস্তাফিজ হওয়ার কথা। ফলে তার একাদশে থাকা নিয়ে কোনো প্রশ্নেরই সুযোগ নেই।

মুস্তাফিজ সম্প্রতি অবশ্য খুব ইকনোমিকাল বল করতে পারছেন না। তবে মিরপুরের উইকেট আবার তিনি স্বরূপে ফিরবেন বলেই মনে হয়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...