অবশেষে বিশ্রাম

বাংলাদেশ ক্রিকেটে বরাবরই আলোচনার মুখ্য বিষয় সাকিব আল হাসান। ক্রিকেট মাঠে পারফর্ম করে হোক কিংবা মাঠের বাইরে বিতর্কিত সব মন্তব্যে। ইদানিং তিনি আবার খেলবেন কি খেলবেন না এমন এক ধুম্রজালের সৃষ্টি করছেন প্রায়শই।

কখনো তিনি কোন নির্দিষ্ট একটা ফরম্যাট খেলতে অনাগ্রহ জানান তো কখনোই পুরো সিরিজ। খোদ সাকিবকে বোঝা যেন এখন এক দায়। এখনকার আলোচনার বিষয় সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে খেলতে চাননা। সে জন্যে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে ছুটি চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি। সম্প্রতি দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে সাকিব গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে এই দলে আমি একজন প্যাসেঞ্জার। যা আমি কখনোই হতে চাই না।’

সদ্য সমাপ্ত হওয়া আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে আলাদা করে নজর কাড়তে পারেননি সাকিব। যে সাকিব ব্যাট বলে সর্বদাই বাংলাদেশের জয়ে রাখতেন অবদান সে সাকিবকে পুরো সিরিজ জুড়েই মনে হয়েছে অন্যমনষ্ক। তিনি যেন মাঠে থেকেও ছিলেন না মাঠে। তিনি যেন খেলার মধ্যে থেকেও ছিলেন না খেলায়। মূলত মানসিকভাবে সাকিব নিজেকে আর ক্রিকেটের সাথে মানিয়ে নিতে পারেছেন না।

তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এমন কারণ দেখিয়ে তিনি ছুটির আবেদন করেছিলেন সাকিব। তাঁর সেই ছুটি মঞ্জুর করেছে বিসিবি। তাঁকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সকল ধরণের ক্রিকেট থেকে ছুটি দিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সর্বোচ্চ সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

এমন সিদ্ধান্তে এতটুকু নিশ্চিতরুপেই বলে দেওয়া যায় সাকিব খেলছেন না দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হওয়া সিরিজে। এর আগে সাকিবের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট সিরিজ খেলা নিয়ে নানানরকমের যদি কিন্তু সমীকরণ সামনে এসেছিলো। সাকিব মূলত প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ না খেলে খেলতে চেয়েছিলেন বর্তমান বিশ্বে চলমান ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট গুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)।

তবে ৩৫ বছর বয়সী সাকিবকে দলে নেয়নি আইপিএলের কোন ফ্রাঞ্চাইজি। অতএব বিসিবি ভেবেছিলো সাকিব হয়ত খেলবেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের টেস্ট সিরিজ। সেই চিন্তা থেকেই সাকিবকে দলে রেখে ঘোষণা করা হয়েছিলো বাংলাদেশের ১৮ সদস্যের টেস্ট দল ও ১৬ সদস্যের ওয়ানডে দল। ওয়ানডে দলে স্বাভাবিকভাবেই সাকিবকে রাখা হয়েছিলো। তবে যেহেতু টেস্ট খেলতে চাননি সাকিব তাই সেই দলে তিনি থাকবেন কিনা তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিলো জল্পনা-কল্পনা।

তবে এখন সাকিবের ছুটি মঞ্জুর করায় তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের কোন ম্যাচই খেলছেন না। তাঁর পরিবর্তে সফরকারী দলে কাকে যুক্ত করবে বিসিবি সে নিয়ে নতুন এক প্রশ্নের জন্ম হলো। আর আদৌ বিসিবি নতুন কোন সদস্যকে দলে অন্তর্ভুক্ত করবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।

১৮ মার্চ ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ। সিরিজে থাকছে তিনটি ওয়ানডে ও দুইটি টেস্ট। ৩১ মার্চ ডারবানের হলউডবেটস কিংসমেডে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম টেস্ট ও আট এপ্রিল সেন্ট জর্জেস পার্কে সিরিজের শেষ টেস্ট ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link