ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) এবারের আসরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক হিসেবে দেখা যাবে শ্রেয়াস আইয়ারকে। তাঁর অধীনেই খেলবেন আরেক তরুণ তারকা ভেঙ্কটেশ আইয়ার। তবে কোন পজিশনে খেলবেন তিনি? কলকাতার সোশ্যাল আউটলেটে এমন প্রশ্নের মুখোমুখ হয়েছিলেন শ্রেয়াস।
গেলো আসরে নজরকাঁড়া পারফরম্যান্সে আইপিএল মাতিয়েছিলেন তরুন তারকা অলরাউন্ডার ভেঙ্কটেশ আইয়ার। সেখান থেকে উঠে আসেন জাতীয় দলে। এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের জার্সিতে খুব বেশি ম্যাচ না খেললেও নির্বাচকদের পছন্দের তালিকায় যে তিনি আছেন সেটা নিয়ে কোনো সংশয় নেই।
তবে, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পেতে হলে এবারের আইপিএলেও দেখাতে হবে অনবদ্য পারফরম্যান্স। ২৬ মার্চ থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আইপিএলের ১৫তম আসরে শ্রেয়াস আইয়ারের অধীনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলবেন ভেঙ্কটেশ।
গেলো আসরে ওপেনিংয়ে খেললেও জাতীয় দলের হয়ে ভেঙ্কটেশ খেলেছেন ফিনিশিংয়ে। তাই এবারের আসরে কোন ভূমিকায় দেখা যাবে এই তরুন সম্ভাবনাময়ী তারকাকে তা নিয়ে সংশয়ে আছেন অনেকেই। তবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার বলেন, ‘আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি তাকে কোথায় খেলাবো। কোচ এবং ম্যানেজমেন্টের সাথে আলাপ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিবো।’
আইয়ারের এই কথায় প্রশ্ন উঠে তাহলে কি তরুন কিংবা নতুন অধিনায়করাই কি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পাচ্ছে? পাঞ্জাব কিংসের অধিনায়ক মায়াঙ্ক আগারওয়াল, গুজরাট টাইটান্সের হার্দিক পান্ডিয়া, লখনৌ জায়ান্টসের লোকেশ রাহুল, রাজস্থান রয়্যালসের সাঞ্জু স্যামসন, দিল্লী ক্যাপিটালসের ঋষাভ পান্ত ও কলকাতার শ্রেয়াস আইয়ার – প্রত্যেকেই অধিনায়ক হিসেবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা পাচ্ছে। আর এতে করে অধিনায়ক হিসেবেও পরিণত হচ্ছে ভারতের ভবিষ্যত তারকারা।
এদের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে অর্থাৎ জাতীয় দলের হয়ে অধিনায়কত্বের সুযোগ পেয়েছেন রাহুল। লখনৌ জায়ান্টসে রাহুলকে পরামর্শ দিতে দলের মেন্টর হিসেবে আছেন অভিজ্ঞ গৌতম গম্ভীরও। মাঠের ক্রিকেটে রাহুল-আইয়াররা ভূমিকা পালন করলেও পেছনে কোচিং স্টাফ কিংবা ম্যানেজমেন্টের অবদানও নেহায়েৎ কম নয়।
আইপিএলে এখন পর্যন্ত মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রোহিত শর্মা মিলে শিরোপা জিতেছেন মোট নয় বার। গৌতম গম্ভীর দু’বার ও শেন ওয়ার্ন জিতেছেনন একবার। এরপর অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও ডেভিড ওয়ার্নার জিতেছেন একবার করে। আইপিএলের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় পরিসংখ্যানের দিক থেকে খেলোয়াড় হিসেবে সেরা যারা তারাই শিরোপা জয়েয় স্বাদ পেয়েছেন। সেদিক থেকে এবারের আসরে অনেকটাই লো প্রোফাইল অধিনায়কদের দেখা যাবে।
গেলো আসরেই সুরেশ রায়নার খারাপ সময় যাওয়ায় সে জায়গায় রবিন উথাপ্পাকে সুযোগ দেন চেন্নাইর অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। আর সুযোগ পেয়ে দিল্লীর বিপক্ষে কোয়ালিফায়ার ১ এ ৪৪ বলে ৬৩ ও ফাইনালে খেলেন ১৫ বলে ৩১ রানের ইনিংস।
চেন্নাইর ম্যানেজমেন্ট থেকেও জানানো হয় ধোনির অসাধারণ কিছু সিদ্ধান্তের কারণেই চেন্নাইর এই সফলতা। অপরদিকে, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়েও সবচেয়ে সফল রোহিত। চেন্নাইয়ে ধোনির মতো মুম্বাইয়ের ফাইনাল সিদ্ধান্তটা রোহিতই নেন।
একই সাথে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুতেও বিরাট কোহলির সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। চেন্নাই, মুম্বাই কিংবা ব্যাঙ্গালুরুর মতো বাকি দলগুলোতে আসলে অধিনায়করা কতটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে সে নিয়ে অবশ্য সংশয় ছিলো এবং আছেও। তবে সম্প্রতি আইয়ারের কথায় অনেকটাই স্পষ্ট তরুণ অধিনায়কেরাও যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা পাচ্ছে।
ক্রিকেট সাধারণ একটা খেলা যেখানে ২২ জন খেলোয়াড় রান এবং উইকেট নেওয়ার জন্য সেরা চেষ্টা করে কিন্তু দিনশেষে সেরা অধিনায়কেরই জয় হয়!