তামিমরা পরিসংখ্যান কোথায় পান!

ওয়ান্ডারার্সের উইকেটে অসমান বাউন্স দেখে বেশ একটু অসন্তুষ্ট হয়েছেন বাংলাদেশি অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান। বলেছেন, এমনটা জানলে তারা আগে ব্যাট করতেন না। আসলে ওয়ান্ডারার্সের উইকেট নিয়ে তেমন কিছু জানতেন না তামিমরা। তাহলে আগে ব্যাট করলেন কেনো?

তামিম বলেছেন, তিনি নাকি পরিসংখ্যান দেখে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরিসংখ্যানে নাকি তিনি দেখেছেন, এখানে টসে জিতলে লোকেরা আগে ব্যাট করে। শুধু তাই নয়, আগে ব্যাট করে নাকি দলগুলো বেশি জয় পায়।

কী আজব ব্যাপার! পরিসংখ্যান আমাদের একেবারে উল্টো কথা শুনিয়ে দিচ্ছে!

পরিসংখ্যান বলছে, এই ওয়ান্ডারার্সে এ অবধি মোট ৫১টি ওয়ানডে হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৯টি ম্যাচে টসে জেতা অধিনায়ক আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবং বেশিরভাগ সময় হেরেছেন।

এটা ঠিক যে, ওয়ান্ডারার্সে এর আগের সর্বশেষ ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করা দলই ম্যাচটা জিতেছে। কিন্তু ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে যদি হিসাব করা হয়, তাহলে এই মাঠে আরও যে সাত ম্যাচ হয়েছে তাতে মাত্র একবারই জিতেছে আগে ব্যাট করা দল। এবং ওই বিশ্বকাপের পর থেকে এই ম্যাচ পর্যন্ত সময়টায় মাত্র একবারই টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোনো অধিনায়ক। সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন বিরাট কোহলি এবং হেরেছিলেন। ২০১৮ সালের সেই ৬ ম্যাচের সিরিজে এই একটা ম্যাচই তারা হেরেছিলেন।

আরেকটু সাম্প্রতিক তথ্য দেওয়া যাক। শেষ ৭ বছরে ১০ ম্যাচে ৭ বার জিতেছে পরে ব্যাট করা দল।

আচ্ছা, ইদানিংকালের কথা বাদ দেওয়া যাক। ইতিহাস কী বলে?

ইতিহাস বলে যে, এই স্টেডিয়ামে ৫১টি ওয়ানডের মধ্যে ৩০ বারই পরে ব্যাট করা দল জয় পেয়েছে। ২১ বার মাত্র আগে ব্যাট করা দল জিততে পেরেছে। এবং মনে রাখবেন, সেটাও ৭ বছর আগের কথা। তারপরও সে ইতিহাস তামিমের পক্ষে কথা বলছে না।

তাহলে তামিমের পক্ষে কী পরিসংখ্যান আছে? একটা তথ্য তামিমের পক্ষে যাচ্ছে। এই স্টেডিয়ামে টসে জিতলে ম্যাচ হেরে যাওয়ার ইতিহাস বেশি। ৫১ ম্যাচের মধ্যে ২৮ বারই টসে জেতা অধিনায়ক ম্যাচ হেরেছেন। এই ব্যাপারটায় পরিসংখ্যান তামিমকে সঠিক তথ্য দিয়েছে।

এ ছাড়া সব জায়গাতে দেখা যাচ্ছে, গলদ রয়ে গেছে।

এখন প্রশ্ন হলো, এইসব ভুল পরিসংখ্যান তামিমদের কে সরবরাহ করে? তামিম যখন প্রকাশ্যে বলেছেন, তিনি পরিসংখ্যান দেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন; তিনি নিশ্চয়ই মিথ্যে বলেননি। সে ক্ষেত্রে এই ম্যাচে আগে ব্যাটিং নেওয়ার জন্য অবশ্যই বাংলাদেশ দলের এনালিস্টকে জবাবদিহি করা উচিত। যিনি জাতীয় দলের অধিনায়ককে ভুল তথ্য দিতে পারেন, তিনি নিশ্চয়ই দলের উপকার চান না।

আচ্ছা, এমনও তো হতে পারে যে, তামিমরা আসলে ভিন্ন কোনো পরিসংখ্যান দেখছেন, যা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। সেই পরিসংখ্যানটা কী?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link