নতুন একটি চার দলীয় টুর্নামেন্টের ভাবনার কথা রমিজ রাজা আগেই জানিয়েছিলেন। নতুন এই টুর্নামেন্ট নিয়ে পরিকল্পনা সাজিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। আগামি সপ্তাহে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) এক সভায় আনুষ্ঠানিক ভাবে এই চারদলীয় টুর্নামেন্টের প্রস্তাব রাখা হবে। আইসিসির এই সভায় পিসিবির বর্তমান চেয়ারম্যান রমিজ রাজা এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করবেন।
সিরিজটি আয়োজন করা গেলে তা থেকে ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হবে বলে আশা পিসিবির! অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত ও পাকিস্তান – এই চার দল নিয়ে প্রতি বছরই একবার করে আয়োজন করা হবে টুর্নামেন্টটি। প্রতি বছরই পরিবর্তন হবে আয়োজক দেশ। অর্থাৎ চার দলই পর্যায়ক্রমে আয়োজক দেশ হিসেবে খেলবে। গ্রুপ পর্বে প্রতিটি দল একবার করে পরস্পরের বিপক্ষে খেলবে। গ্রুপ পর্বে ম্যাচ হবে মোট ৬টি।
অবশ্য টুর্নামেন্টের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে আইসিসির হাতেই। যদিও এই টুর্নামেন্ট সফল ভাবে মাঠে গড়াবে কিনা তা নিয়েও আছে শংকা। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) পক্ষ থেকে সম্মতির আভাস পাওয়া গেলেও দুই দেশের রাজনৈতিক দ্বদ্বের কারণে ভারত সরকার থেকে এই টুর্নামেন্টের জন্য অনুমতি পাওয়া যাবে কিনা সে নিয়েও আছে সংশয়।
যদিও বর্তমানে আইসিসির এফটিপি অনুযায়ী ঠাসা সূচিতে এই সিরিজ আয়োজন করতে বিপাকে পড়ার সম্ভাবনাও আছে। যদিও পিসিবি এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য সম্ভাব্য সময়ও নির্ধারণ করেছে বলে জানা যায়। তবে আইসিসির সভায় সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের সময় উল্লেখ করে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তাব রাখবে পিসিবি এমনটাই জানান পিসিবির এক কর্মকর্তা।
চলতি বছর জানুয়ারিতেই এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের ব্যাপারে জানিয়েছিলেন পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজা। তিনি বলেন, আইসিসির সব সদস্য দেশই এতে আর্থিকভাবে লাভবান হবে। গেল জানুয়ারিতে এক টুইট বার্তায় রমিজ বলেছিলেন, ‘আইসিসির কাছে একটি প্রস্তাব রাখবো পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ডকে নিয়ে প্রতি বছর চারদলীয় একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজন করার। এর জন্য আলাদা একটা আর্থিক মডেল থাকবে, আইসিসির নিয়মে মুনাফা ভাগাভাগি হবে।’
সেই লক্ষ্যেই এবার আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রস্তাব রাখবে পিসিবি। চার দলীয় টুর্নামেন্ট আরও আকর্ষণীয় করতে এতে হতে পারে তিন ম্যাচের ফাইনালও। যদিও এ ব্যাপারে প্রস্তাবে আইসিসি রাজী হলে তবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয় পিসিবির পক্ষ থেকে।
পিসিবির এক কর্মকর্তা জানান, ‘এই প্রস্তাবের মাধ্যমে আইসিসি এবং সদস্যদেরকে উৎসাহিত করছি। এবং বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বীতার মাঝে নতুন এক ইভেন্ট আয়োজন করে তার মাধ্যমে ক্রিকেটে নতুনত্ব আনতে চাচ্ছি। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের আকৃষ্ট করা যাবে। ক্রিকেটের উন্নয়ন এতে আরও তরান্বিত হবে। এবং আর্থিকভাবে সদস্য দেশগুলো বেশ লাভবান হবে। এটা যে শুধু একটা প্রাসঙ্গিক বিষয় এমন না। এই টুর্নামেন্ট পুরো ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পাবে বলে মনে করি। পাকিস্তান ভারতের বিপক্ষে খেলবে বা ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলবে এটা সমর্থকরাও চায়।’
২০১২-১৩ সালের পর কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেনি ভারত-পাকিস্তান। রাজনৈতিক রেষারেষির কারণে আইসিসির বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট ছাড়া এই দুই দলের লড়াইটা দেখা যায় না। তবে চারদলীয় টুর্নামেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন দ্বদ্বের অবসান হতে পারে বলে আসা পিসিবির। যদিও এই টুর্নামেন্টের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বড় অংকের আর্থিক ফায়দা। তবে রমিজ রাজার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে কিনা তা সময়ই বলে দিবে!