এবছর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন। তবে তারচেয়েও নজর কাড়া ছিল ডেথ ওভারে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর বোলিং। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যেই সময়টা ব্যাটসম্যানরা রীতিমত রাজত্ব করেন সেই সময়েই বোলার মৃত্যুঞ্জয়ের আসল ক্যারিশমাটা দেখা যায়। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেও শেখ জামালের হয়ে সেই একই ম্যাজিক।
ক্রিকেটপাড়ায় বেশ পরিচিত নামই ছিলেন। ২০২০ সালে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। তবে ইনজুরির কারণে সেই বিশ্বকাপটা খেলতে পারেননি। তবুও তাঁকে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্বপ্ন ছিল। মৃত্যুঞ্জয় সেই স্বপ্ন পূরণ করতে শুরু করেছেন।
বিপিএলে দারুণ একটা মৌসুম কাটানোর পর এবার ডিপিএলেও নজর কাড়ছেন এই পেসার। ডিপিএলে শেখ জামালের হয়েও তাঁকে দেখা যাচ্ছে ডেথ ওভারেই। প্রতি ম্যাচেই শেষ দিকে বোলিং করতে এসে তুলে নিচ্ছেন উইকেট। ডেথে বোলিং করেও বেশ হিসেব করেই রান খরচ করছেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে মৃত্যুঞ্জয়ের এই অনবরত প্রমাণ করে চলা নিয়ে খেলা৭১ এর সাথে কথা বলেছেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। নিজের পারফর্মেন্স নিয়ে তিনি বলেন,’ হ্যাঁ ভালো হচ্ছে, তবে উন্নতির জায়গাও অনেক আছে বলে মনে করছি। আমি আসলে এভাবে প্রতিটা লিগেই ভালো খেলে যেতে চাই। এটা আমি পুরো ক্যারিয়ারেই জুড়েই করে যেতে চাই। এই এক দুই টুর্নামেন্ট খেলে হারিয়ে যেতে চাই না।‘
মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী দ্রুত হারিয়ে যাবেন না এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটও বিশ্বাস করে। বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্পেও রাখা হয়েছে এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ডেথ ওভারে তাঁর বোলিং ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ভাবাতে শুরু করেছে। জাতীয় দলের পরিকল্পনায়ও খুব ভালো ভাবেই আছেন এই অলরাউন্ডার।
তবে ডেথ ওভারেই এমন অবিশ্বাস্য বোলিং কীভাবে করছেন এই পেসার সেই প্রশ্ন আসে। ডেথ ওভারে ব্যাটসম্যানদের সাথে মাইন্ডগেমটা তিনি দারুণ উপভোগ করেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া ডেথ বোলিংয়ে তাঁর এই সাফল্য নিয়ে তিনি বলেন,’ ওই সময়টায় ব্যাটসম্যানদের সাথে মাইন্ড গেমের একটা ব্যাপার তো থাকেই। এছাড়া আমার ইয়োর্কারটা ভালো হয়, স্লোয়ার করার চেষ্টা করি, কাটারটাও পারি। ফলে তিন চারটা ভ্যারিয়েশন মিলিয়ে এবং ব্যাটসম্যানদের পড়ে ভালো করার চেষ্টা করি।‘
ডেথ ওভার পুরনো বলে এই মুহূর্তে ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে কার্যকর বোলার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তবে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর কাছ থেকে চাওয়াটা আরেকটু বেশি। নতুন বলেও তাঁকে প্রমাণ করা চাই। এছাড়া ব্যাট হাতেও তিনি যথেষ্ট কার্যকর হতে পারেন। সেটা পারলে বাংলাদেশ একজন ভালো পেস বোলিং অলরাউন্ডার পাবে।
এছাড়া ইনজুরির কারণে গত কয়েকমাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারছেন না মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ফলে রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশের একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার প্রয়োজন। যদিও সেজন্য নতুন বলে ও ব্যাট হাতেও নিজেকে প্রমাণ করতে হতো মৃত্যুঞ্জয়কে।
তবে ডিপিএলে ব্যাট হাতে খুব বেশি সুযোগ পাননি। আবার উইকেটের কারণে পেসারদের হাতে নতুন বল তুলে দেয়ার ভরসাও করেনা দলগুলো। সেই আক্ষেপের কথাই বলছিলেন মৃত্যুঞ্জয়। তিনি বলেন, ‘এই দলে আসলে আমার আগে জিয়া ভাই (জিয়াউর রহমান) নামেন। ফলে ব্যাট হাতে আমার সুযোগ খুব কম। এছাড়া নতুন বলেও আসলে বল করার সুযোগ খুব কম পাওয়া যায়। আমাদের উইকেটে নতুন বলে স্পিনাররাই শুরু করে। আমাকে আসলে শেষের জন্যই রেখে দেয়া হয়।’