অনেকদিন হয় এমন দৃশ্য দেখা যায় না। সেই পুরোনো স্মৃতিই ফিরিয়ে আনলো বাংলাদেশ দল। সেই এক দিনে দু বার ব্যাট করতে নামা, সেই টেনে টুনে চার দিনে খেলা নিয়ে যাওয়া এবং সেই প্রতিপক্ষের ছেলেখেলার শিকার হওয়া।
হ্যা, পোর্ট এলিজাবেথে সেই পুরোনো বাংলাদেশই ফিরে এলো যেনো।
প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৩৯ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। এরপর ২১৭ রানে অলআউট হয় তারা। দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশকে ফলোঅন না করিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত ৬ উইকেটে ১৭৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষনা করে। প্রথম ইনিংসে তারা ৪৫৩ রান করেছিলো। ফলে বাংলাদেশের সামনে ৪১৩ রানের লক্ষ্য দাড় করাতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ এই অবিশ্বাস্য লক্ষ্যে ছোটা তো দূরে থাক। শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে ২৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে।
প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রান করার ভেতর দিয়েই কার্যত ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয় আফ্রিকানরা। আর সেই কাজটা আরও ভালোভাবে করে তারা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরে। আগের দিনই বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলো।
গতকাল অবশ্য মুশফিক ও ইয়াসির আলী রাব্বি মিলে একটা মেরাতমের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু রাব্বি ৪৬ রান করে আউট হয়ে যান। এরপরই ভয়ানক কাজটা করেন মুশফিক। মাত্রই জীবন পেয়ে তিনি ম্যাচের এই অবস্থায় আবারও রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে আউট হন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরার হলেও তাই সমালোচনাটা এড়াতে পারেন না এই সাবেক অধিনায়ক। বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২১৭ রানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে ইনটেশন পরিষ্কার ছিলো। যদিও তারা বাংলাদেশকে ফলো অন করাতে পারতো। সেটা না করিয়ে তারা নিজেরা দ্রুত কিছু রান তুলে ফেলতে চায়। তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের আক্রমণ স্বত্ত্বেও ৩৯.৫ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষনা করে দেন ডিন এলগার। তারা দ্বিতীয় ইনিংসে ৪.৪১ রেটে ওভারপ্রতি রান তোলেন।
এরপর আসলে বাংলাদেশের হারটা স্বাভাবিক ব্যাপার। প্রশ্ন ছিলো, বাংলাদেশ ম্যাচটা পঞ্চম দিনে নিতে পারবে কি না। কিন্তু তৃতীয় দিনেই বাংলাদেশ পথ ঠিক করে ফেলেছে।
ইনিংসের তৃতীয় বলেই আবারও শূন্য রান করে ফেরেন ডারবানের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয়; পেয়ার পেলেন তিনি। নাজমুল হাসান শান্তদ ৭ রান করে আউট হন। তামিম দিনের শেষে আউট হন ৭ রান করে। দু প্রান্ত থেকে স্পিন দিয়ে আক্রমণ শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই স্পিনারই নিয়েছেন ৩ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৫৩ ও ১৭৬/৬ (এরউই ৪১, বাভুমা ৩০; তাইজুল ৩/৬৭, মিরাজ ২/৩৪)।
বাংলাদেশ: ২১৭ (মুশফিক ৫১, ইয়াসির ৪৬; হারমার ৩/৩৯) এবং ৯.১ ওভারে ২৭/৩ (মহারাজ ২/১৭)।