টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরটা বেশ ভালো ভাবেই জমে উঠেছিল। অন্তত ফাইনাল ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ও ভারতের লড়াই পুরো ক্রিকেট বিশ্বের নজর কেড়েছিল। এবারো টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপে দারুণ কিছু ম্যাচ দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া।
এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও দেখা গিয়েছে দারুণ কিছু ইনিংস। লাল বলের ক্রিকেটের এই লড়াইয়ে ব্যাটাররা নিজেদের সেরাটাই দেখাচ্ছেন। কেউ কেউ পুরো সময়টা জুড়েই নিজেদের ক্লাস দেখিয়ে চলেছেন। সব মিলিয়ে চলমান এই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা ইনিংস গুলোকে এক করে দেখা যেতে পারে।
- টম লাথাম (নিউজিল্যান্ড)
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম টেস্ট হারের পর নিউজিল্যান্ডেরও একটা জবাব দেয়ার ছিল। সফরকারী বা বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচাতে ক্রাইস্টচার্চে তাঁদের জিততেই হতো। আর সেই ম্যাচে কিউইদের আগ্রভাগের সেনানি হয়ে আসেন টম লাথাম।
প্রথম দিন সকালেই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। লাঞ্চের পর আবার যেন প্রথম থেকেই শুরু করলেন। তাঁর এই ইনিংস গিয়ে থেমেছিল পরের দিন দ্বিতীয় সেশনে। লাথাম খেলেছিলেন ৩৭৩ বলের মহাকাব্যিক এক ইনিংস। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ২৫২ রান।
- বাবর আজম (পাকিস্তান)
এই একটা ইনিংস দিয়েই হয়তো অনুমান করা যায় বাবর আজপম ঠিক কত বড় মাপের ব্যাটসম্যান। করাচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টের পঞ্চম দিন। এর উপর প্রথম ইনিংসে ১৪৮ রানে অল আউট হয়ে যাওয়ার লজ্জা। চতুর্থ ইনিংসে পাকিস্তানের সামনে ৫০৬ রানের বিশাল এক টার্গেট ছুড়ে দিল অজিরা।
তারপর মাঠে এলেন বাবর আজম। চতুর্থ ইনিংসে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের সপ্তম সর্বোচ্চ ইনিংস। বাবর আজমের ৪২৫ বলের সেই ইনিংস পাকিস্তানকে ম্যাচ বাঁচাতে সাহায্য করেছিল। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল মোট ১৯৬ রান।
- আজহার আলী (পাকিস্তান)
করাচিতে বাবর আজমের সেই ইনিংস আগে নজর কেড়েছিলেন আজহার আলীও। রাওয়ালপিন্ডিতে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে সেই ইনিংস পাকিস্তানকে জয় এনে দিয়েছিল।
সেই ম্যাচে এই ব্যাটার বাইশ গজে ছিলেন ৫৩৫ মিনিট। বেশিরভাগ সময়েই তাঁর সাথে ছিলেন ইমাম উল হক। ইমামের ব্যাট থেকেও এসেছিল ১৫৭ রান। ওদিকে আজহার আলী ব্যাটিং করেছিলেন প্রায় দ্বিতীয় দিনের শেষ পর্যন্ত। সবমিলিয়ে ৩৬১ বল খেলে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ১৮৫ রান।
- জো রুট (ইংল্যান্ড)
লর্ডসে জো রুটের সেই ইনিংস প্রমাণ করেছিল তিনি শুধু ইংল্যান্ড ক্রিকেটেরই সেরা নন বরং আধুনিক ক্রিকেটের সেরাদের একজন। ইংল্যান্ড মাত্র ২৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর বাইশ গজে নেমেছিলেন।
রুট নেমে পুরোটা দিন ব্যাটিং করলেন, একপ্রান্ত আগলে রাখলেন। ভারতের বিপক্ষে সেই ইনিংসটিতে ছিলেন শেষ পর্যন্ত। ৩২১ বলে খেললেন ১৮০ রানের অপরাজিত ইনিংস।
- রবীন্দ্র জাদেজা (ভারত)
রবীন্দ্র জাদেজার জন্য মোহালি বেশ স্বরণীয় এক স্টেডিয়ামই। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে মাত্র ষষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে এক টেস্টে ১৫০ এর বেশি রান ও ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন এই মোহালিতেই।
শ্রীলঙ্কাকে প্রায় একাই হারিয়ে দিয়ে মোহালিতে মোট তিনবার ম্যান অব দ্য ম্যাচের অ্যাওয়ার্ড জিতেন এই অলরাউন্ডার। সবমিলিয়ে ২২৮ বলে তাঁর ব্যাট থেকে এসছিল ১৭৫ রানের অপরাজিত ইনিংস।