স্টোকস অধ্যায়ে স্বাগতম

ক্রিকেটারদের মানসিস্থ স্বাস্থের ব্যাপারটা তখন দিন দিন গুরুত্বর হয়ে উঠছে। এরমাঝেই বায়োবাবলের কারণে সেই সমস্যা আরো প্রকট হলো। তবে পুরো ক্রিকেট দুনিয়া থমকে গেল একটা ঘোষণায়। মানসিক অবসাদের কারণে ক্রিকেট থেকেই বিরতি নিতে চাইলেন বেন স্টোকস। তখন ভাবা হচ্ছি এরপর আদৌ বেন স্টোকস কখনো ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন তো। তিনি ফিরেছেন, এবার ইংল্যান্ডের টেস্ট দলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বটাও এসেছে তাঁর কাঁধে।

জো রুট অধিনায়কত্ব থেকে সরে যাওয়ার পর থেকেই আলোচনাটা হচ্ছিল। কে হবেন সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। সবচেয়ে যোগ্য হিসেবে বেন স্টোকসের নামটাই আসছিল ঘুরে ফিরে। এছাড়া ইংল্যান্ডের টেস্ট একাদশে যে কয়েকজনের জায়গা নিশ্চিত তাঁদের একজন বেন স্টোকস। এছাড়া ইংল্যান্ড ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় পারফর্মারদেরও একজন এই অলরাউন্ডার।

তবে সমস্যা ছিল তিনি আদৌ এই দায়িত্বটা নিতে চাইবে কিনা। গত বছরই মানসিক চাপ কমাতে ক্রিকেট থেকে সরে গিয়েছিলেন। আর এখন টেস্ট দলের দায়িত্ব স্টোকস নিবেন কিনা সেটা ছিল বড় প্রশ্ন। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গুঞ্জনটাই সত্যি হলো। সবচেয়ে যোগ্য লোকটাই ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক হলেন।

তবে বেন স্টোকস এমন একটা সময়ে অধিনায়ক হয়েছেন যখন সাদা পোশাকে ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের অবস্থা একেবারেই শোচনীয়। ইংল্যান্ড শেষ যেই ১৭ টি টেস্ট খেলেছে তাঁর মধ্যে মাত্র একটিতে জয়ের দেখা পেয়েছে। তাঁদের ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথম টানা পাঁচ সিরিজ খেলে একটিতেও জয় পায়নি ইংল্যান্ড। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও এই মুহূর্তে একেবারে তলানির দল ইংল্যান্ড।

সবমিলিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে খুব দ্রতই ইংল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানো প্রয়োজন। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের আভিজাত্যটা ধরে রাখা প্রয়োজন। আর সেই দায়িত্বটাই নিজের কাঁধে তুলে নিলেন বেন স্টোকস। স্টোকসকে ইংল্যান্ডের অধিনায়ম নির্বাচন করার পিছনে সবচেয়ে বেশি জোর ছিল রব কি’র। তিনি বর্তমানে ইংল্যান্ডের পুরুষ ক্রিকেটের ম্যানেজিং ডিরেক্টর।

রব কি বেন স্টোকসের টেস্ট অধিনায়ক হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘বেন স্টোকসকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব তুলে দেয়া নিয়ে আমার মধ্যে কোন দ্বিধা ছিল না। আমরা এখন লাল বলের ক্রিকেটে যে মানসিকতা নিয়ে খেলতে চাই সেটা খুব ভালো ভাবেই তাঁর মধ্যে আছে। আমি খুবই খুশি যে সে এই দায়িত্বটা নিতে রাজি হয়েছে এবং সে এই দায়িত্ব, এই সম্মানটা গ্রহণ করতে প্রস্তুত। সে এই সুযোগটা পাওয়ার সবচেয়ে বড় দাবিদার আসলে।’

স্টোকস অবশ্য এর আগেও একবার ইংল্যান্ডকে টেস্ট ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি টেস্ট ম্যাচে তিনি অধিনায়কত্ব করেছিলেন। এরপর অবশ্য ২০২০ সালে স্টোকস জানিয়েছিলেন তিনি অধিনায়কত্ব করতে আগ্রহী না।

তবে এতকিছুর পরেও এখন ইংল্যান্ড ক্রিকেটের পথপ্রদর্শক হতে পারেন স্টোকস। ইংল্যান্ডের অনেক ইতিহাসে লিখার সাক্ষী এই অলরাউন্ডার। ইংল্যান্ডের একাধিক অবস্মরণিয় সাফল্যের নায়কও এই বেন স্টোকস। তবে অধিনায়ক হিসেবে স্টোকসের সামনে এখন বিরাট একটা পথ পারি দেয়া বাকি। স্টোকসের জন্য এই অধিনায়কত্ব যতটা সম্মানের, ততটা চ্যালেঞ্জেরও।

অধিনায়কত্ব পাওয়া নিয়ে স্টোকস একটা কলামে লিখেন, ‘ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়কত্ব করার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য ভীষণ সম্মানের। এটা অনেক বড় পাওয়া এবং এই শুরুটা করার জন্য আমি খুবই রোমাঞ্চিত।’

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link