চট্টগ্রাম টেস্টে চতুর্থ দিনের খেলা চলছে। বাংলাদেশের প্রয়োজন দ্রুত কিছু লিড নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠানো। শেষদিকে আজ এই কাজটা বাংলাদেশের জন্য করে দিতে পারতেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অথচ মিরাজ সেই সময় ফাকা মিরপুরে ফিটনেস ট্রেনিং করছেন। ইনজুরির কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজটাই যে খেলা হলো না এই অলরাউন্ডারের।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ খেলতে গিয়ে আঙুলে চোঁট পেয়েছিলেন তিনি। এরপর প্রায় তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে এই স্পিনারকে। এখন অবশ্য আবার মাঠে ফিরেছেন তিনি। সবাই যখন চট্টগ্রাম টেস্ট নিয়ে ব্যস্ত তখন একাকী মিরপুরে নিজেকে ফিরে পাওয়ার লড়াই করছেন মিরাজ।
যদিও এখনো ব্যাটিং বা বোলিং করার মত অবস্থা হয়নি তাঁর। মিরপুরে শুধুমাত্র ফিটনেস ট্রেনিং করতে শুরু করেছেন মিরাজ। তবে মিরপুরে আবার মিরাজকে দেখে প্রশ্ন জেগেছিল মিরাজের পুরোপুরি ফিট হতে ঠিক কত সময় লাগবে। মিরাজ কী ঢাকা টেস্টে খেলতে পারবেন? এখনো তো চার পাঁচ দিন সময় আছে।
আর মিরাজের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ‘তিন সপ্তাহ তো পুরোপুরি বিশ্রামে ছিল। আর পরশু থেকে আমরা ওর ফিজিও থেরাপি শুরু করেছি। এখন হয়তো আরো পাঁচদিন গেলে বুঝতে পারব ঠিক কী অবস্থায় আছে। আমরা আসলে খুব আস্তে আস্তে কাজটা করছি যেন ও পুরোপুরি ফিট হতে পারে।’
ওদিকে মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ মাঠে নামবে ২৩ তারিখ থেকে। সেই টেস্টে কী তাহলে বল ঘোরাতে পারবেন মিরাজ। যদিও ঢাকা টেস্টে মিরাজকে পাওয়ার এই আশা একেবারেই উড়িয়ে দিলেন বিসিবির এই চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘সাধারণত যতদিন বিশ্রামে ছিল ততদিনই রিহ্যাব করতে হয়। মানে আরো ২১ দিন হয়তো তাঁকে রিহ্যাব করতে হবে। কখনো কখনো কম বেশি হতে পারে। এরপর ব্যাটিং করা বা বোলিং করার প্রসেসটা শুরু হতে পারে। ফলে ঢাকা টেস্টেও আসলে মিরাজকে পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।’
মিরাজের অনুপুস্থিতি মিরপুরের উইকেটে তাই বেশ ভালো ভাবেই ভোগাবে বাংলাদেশকে। কেননা টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এই অলরাউন্ডার। বোলিং এর পাশাপাশি গত এক বছরে ব্যাট হাতেও দারুণ কিছু ইনিংস খেলেছেন।
ফলে ব্যাটিং, বোলিং মিলে এখন বাংলাদেশ দলে মিরাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই পালন করেন। সাত আটে ব্যাটিং করেও গতবছর বাংলাদেশের হয়ে কার্যকরী কিছু ইনিংস খেলেছেন। তিনি থাকলে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপও গভীর হয়। গতবছর ৭ টেস্ট খেলে প্রায় ৩০ গড়ে ৩১৯ রান করেছেন। এই সময়ে একটি সেঞ্চুরিও এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে।
এছাড়া বল হাতে তো ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সফল এই স্পিনার। যদিও দেশের বাইরে তাঁর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বাইরেও বল হাতে নিজেকে প্রমাণ করছেন। গতবছর সাত টেস্ট খেলে পেয়েছিলেন ২৫ উইকেট। এছাড়া এবছরও চার টেস্টে তুলে নিয়েছেন ১৩ উইকেট।
সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে মিরাজের অনুপস্থিতি ভালো ভাবেই টের পাওয়া যাচ্ছে। তবে আশা করা যাচ্ছে আগামী মাসের শুরুতেই পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠবেন মিরাজ। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মিরাজকে নিয়েই হয়তো পরিকল্পনা করতে পারবে বাংলাদেশ দল।