ব্যবসায়িক ‘মাস্টারমাইন্ড’ বরুশিয়া

ফুটবল ক্লাবগুলো বরাবরই শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়েই যেন দল সাজাতে ব্যস্ত থাকে। কিন্তু ঠিক খানিকটা যেন বিপরীত বুন্দেসলিগার ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। শিরোপা জয়ের লক্ষ্যের পাশাপাশি এই ক্লাবটি চড়ামূল্যে খেলোয়াড়দের বিক্রি করবার চিন্তাও রাখে। প্রতি মৌসুমেই যেন বড় অফারের অপেক্ষায় থাকে দলটি। নিজেদের সেরা খেলোয়াড়কে ছাড়তেও দ্বিধা করে না বুন্দেসলিগার এই ক্লাব।

  • ইলকে গুন্ডোগান – ২৭ মিলিয়ন, ম্যানচেস্টার সিটি – ২০১৬

২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত জার্মানির মিডফিল্ডার ইলকে গুন্ডোগান বরুশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ একজন ছিলেন। বরুশিয়ার হয়ে গুন্ডোগান ৩টি শিরোপা জেতেন।

২০১১-১২ বুন্দেসলিগা, ২০১১-১২ ডিএফবি পোকাল ও ২০১৩ সালে ডিএফএল সুপার কাপ জেতেন এই জার্মান তারকা। জার্মানির হয়ে ১৫৭ ম্যাচে করেছেন ১৫ গোল। ২০১৬ গ্রীষ্মে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে গুন্ডোগানকে ২৭ মিলিয়ন ইউরোতে বিক্রি করে বরুশিয়া।

  • আবদু দিয়ালো – ৩২ মিলিয়ন, পিএসজি – ২০১৯

সেনেগালের ফুটবলার আব্দু দিয়ালো ২০১৮ সালে বরুশিয়ার সাথে যুক্ত হন। যদিও মাত্র এক মৌসুম খেলার পরই ২০১৯ সালে পিএসজির কাছে তাঁকে বিক্রি করে দেয় বরুশিয়া। ৩২ মিলিয়ন ইউরোতে বরুশিয়া থেকে পিএসজি যান এই সেনেগাল ফুটবলার। বরুশিয়ার হয়ে তিনি গোলের দেখা পেয়েছেন একটি।

  • ম্যাটস হামেলস – ৩৫ মিলিয়ন, বায়ার্ন মিউনিখ – ২০১৬

২০০৯ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত প্রায় সাত মৌসুম বরুশিয়ার জার্সি গায়ে খেলেছেন জার্মানি রক্ষণভাগের এই ফুটবলার। ২০১০-১১ ও ২০১১-১২ তে বরুশিয়ার হয়ে তিনি দুইটি বুন্দেসলিগা শিরোপা জয় করেন।

২০১১-১২ ও ২০১৬-১৭তে জেতেন ডিএফবি পোকাল ও ডিএফএল সুপারকাপসের শিরোপা জেতেন তিন আসরে। ২০১৬ সালে হামেলস ৩৫ মিলিয়ন ইউরোরে বায়ার্ন মিউনিখে যান। অবশ্য ২০১৯ সালে আবার বরুশিয়ায় ফিরে আসেন এই জার্মান তারকা।

  • মারিও গোৎজে – ৩৭ মিলিয়ন, বায়ার্ন মিউনিখ – ২০১৩

ভবিষ্যত সম্ভাবনাময় তারকা তকমা পেয়েছিলেন জার্মান তরুণ ফুটবলার মারিও গোটজে। ২০০৯ সালে বরুশিয়ার হয়ে অভিষেক। চার মৌসুম কাটানোর পর ২০১৩ সালে ৩৭ মিলিয়ন ইউরোতে বায়ার্ন মিউনিখে পাড়ি দেন তিনি।

বরুশিয়ার হয়ে দু’টি করে বুন্দেসলিগা, ডিএফবি পোকালস ও একটি ডিএফএল সুপারকাপের শিরোপা জেতেন তিনি। ডর্টমুন্ডের হয়ে ১০৩ ম্যাচে ১৪ গোল করেছেন এই জার্মান ফুটবলার।

  • হেনরিখ মাখিতারিয়ান – ৪২ মিলিয়ন, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড – ২০১৬

আর্মেনিয়ার উইঙ্গার হেনরিখ মাখিতারিয়ান ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত তিন মৌসুম খেলেছেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে।

দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর ২০১৬ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছ থেকে মাখিতারিয়ানের জন্য অফার পায় ডর্টমুন্ড। ৪২ মিলিয়ন ইউরোতে ইউনাইটেডে চলে যান তিনি। ১৪০ ম্যাচে ৪১ গোল করেছেন তিনি বরুশিয়ার জার্সি গায়ে।

  • পিয়েরে-এনরিক আউবামেয়াং – ৬৩.৭৫ মিলিয়ন, আর্সেনাল – ২০১৮

গ্যাবনের তারকা ফুটবলার পিয়েরে-এনরিক আউবামেয়াং ২০১৩ সালে ডর্টমুন্ড থেকে ৬৩.৭৫ মিলিয়ন ইউরোতে পাড়ি জমান আর্সেনালে। প্রায় সাড়ে চার মৌসুম ডর্টমুন্ডের হয়ে খেলেছেন এই ফরোয়ার্ড।

২০১৭-১৮ মৌসুমে আর্সেনালের কাছে আউবামেয়াংকে বিক্রি করে ক্লাবটি। ডিএফবি পোকাল, সুপারকাপ সহ মোট ৩টি শিরোপা তিনি ডর্টমুন্ডের হয়ে জয় করেন। ২১৩ ম্যাচে তাঁর গোলের সংখ্যা ১৪১টি।

  • ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক – ৬৪ মিলিয়ন, চেলসি – ২০১৯

বরুশিয়ার হয়ে ২০১৬ সালে অভিষেক হয় ক্রিস্টিয়ান পুলিসিকের। সেখানে তিন মৌসুম খেলেন।

দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর ২০১৯ সালে চেলসির কাছ থেকে প্রস্তাব আসে আক্রমণভাগের এই খেলোয়াড়ের জন্যে। তিন মৌসুমে ডর্টমুন্ডের হয়ে একটি শিরোপা জেতেন পুলিসিক। ১২৭ ম্যাচে ১৯ গোল করেন তিনি।

  • আর্লিং হাল্যান্ড – ৭৫ মিলিয়ন, ম্যানচেস্টার সিটি – ২০২২

বেশ আলোচনার মধ্যে দিয়েই চলতি বছর ২০২২ সালে ডর্টমুন্ড ছেড়ে ম্যানচেস্টার সিটিতে পাড়ি জমালেন আর্লিং হাল্যান্ড। ২০২০ সালে ডর্টমুন্ডে যোগ দেন তিনি।

প্রায় আড়াই বছর খেলার পর ৭৫ মিলিয়ন ইউরোতে ম্যানচেস্টার সিটিতে পাড়ি দেন তিনি। ৮৯ ম্যাচে দলের হয়ে ৮৬ গোল করেন এই তারকা ফুটবলার।

  • জাডন সানচো – ৮৫ মিলিয়ন, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড – ২০২১

ইংলিশ উইঙ্গার জাডন সানচো ২০১৭ সালে ম্যানচেস্টার সিটি থেকে যোগ দেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। চার মৌসুম ডর্টমুন্ডের হয়ে খেলেন তিনি। দুই শিরোপাও জেতেন।

২০২০-২১ মৌসুমে ডিএফবি পোকালে সর্বোচ্চ গোল স্কোরারও ছিলেন তিনি। চার বছরে ১৩৭ ম্যাচে করেন ৫০ গোল। এরপর ২০২১ সালে ৮৫ মিলিয়ন ইউরোতে তা কে কিনে নেয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

ওসমান ডেমবেলে – ১৪০ মিলিয়ন, বার্সেলোনা – ২০১৭

ফ্রান্সের উইঙ্গাগার ওসমান ডেমবেলে ২০১৬ সালে রেনেস ছেড়ে যোগ দেন ডর্টমুন্ডে। এক মৌসুমে ১০ গোল করেন, সেই সাথে ডিএফবি পোকালও জেতেন দলের হয়ে। ২০১৭ গ্রীষ্মে ১৪০ মিলিয়ন ইউরোতে তাঁকে দলে ভেড়ায় বার্সেলোনা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link