প্রথমে টেস্ট স্কোয়াডে না থাকলেও হঠাতই গুঞ্জন উঠলো ফাস্ট বোলার হাসান মাহমুদ দলের সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাচ্ছেন। এরই মাঝে আরেক পেসার শহিদুল ইসলামের ইনজুরিতে সেই নাচে যুক্ত হলো ঢোলের বাড়ি। একেবারে স্কোয়াডেই যুক্ত করা হলো হাসান মাহমুদকে। এরপরই আবার শোনা গেল আরেক সুর। বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ ধনী বোর্ড শেষ মুহূর্তে একজন ক্রিকেটারকে দল থেকে বাদ দিল খরচ বাঁচানোর জন্য।
হাসান মাহমুদ বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেম গত বছর মার্চে। সেটা আবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ফরম্যাটে। এছাড়া একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলেছিলেন প্রায় বছর দুয়েক। এরপর ইনজুরির কারণে প্রায় এক বছর তিনি মাঠের বাইরে। লম্বা সময় ইনজুরি কাটিয়ে আবার মাঠে ফিরেছেন তিনি। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেও খেলেছেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে।
ওদিকে ক্যারিয়ারের শুরু থেকে হাসান মাহমুদকে বাংলাদেশের পেস আক্রমণের ভবিষ্যত ভাবা হয়। তাই সবসময়ই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নজরে থাকেন এই পেসার। সেজন্যই তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দলে না থাকলে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার একটা গুঞ্জন ছিল। এছাড়া ইনজুরির কারণে টেস্ট খেলতে পারছেন না তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।
আবার স্কোয়াডে থাকা শহিদুল ইসলামও হঠাতই পড়ে যান ইনজুরিতে। আর এতেই কপাল খুলে যায় হাসান মাহমুদের। বাংলাদেশের হয়ে এর আগে কখনো টেস্ট না খেলা এই পেসারকে যুক্ত করা হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট দলে। ফলে ১৬ তারিখ থেকে শুরু হওয়া প্রথম টেস্টের জন্য দেশ ছাড়ার প্রস্তুতিই নিচ্ছিলেন এই পেসার।
তবে বাগরা বাধে দুই তারিখ বিসিবির মিটিং এর পর বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের এক সংবাদ সম্মেলন থেকে। সেখানে সবকিছুর খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেশ হতাশাই প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়া এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকেই খরচ কমানোর সব ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি। সেজন্য প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুও যাচ্ছেননা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে।
খরচ কমানোর জন্য নির্বাচক বা স্টাফদের সফর থেকে বাদ দেয়াটা মেনে নেয়া গেল। কিন্তু একজন তরুণ ক্রিকেটারকে দলে ডেকে এরপর আবার স্রেফ খরচ কমানোর জন্য বাদ দেয়াটা রীতিমত অবিশ্বাস্য। প্রায় বছর খানেক ইনজুরির কারণে খেলার বাইরে থাকা একজন পেসারকে দলে ডাকা হলো, তাঁকে আবার বাদও দিয়ে হলো শুধু টিকিট আর হোটেল খরচ বাঁচানোর জন্য। বিশ্বের অন্যতম ধনী বোর্ড বিসিবির জন্য এরচেয়ে লজ্জাজনক আর কীই বা হতে পারে।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনও বোধহয় এই নিয়ে বেশ লজ্জাতেই আছেন। শুধুমাত্র টাকা বাঁচানোর জন্য একজন সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারকে বাদ দেয়া হলো কেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনিও খানিকটা অবাকই হয়ে যান।
তাঁর কাছেও যেন এর সঠিক কোন উত্তর নেই। বিসিবির সিইও হয়েও তিনি পুরো বোর্ডের দায় নিলেন না। তিনি উত্তরের বললেন অন্য কোন কারণেও তাঁকে বাদ দেয়া হতে পারে, তিনি তাই মনে করেন। প্রশ্ন হচ্ছে তাঁর ভাবনা আর বিসিবির ভাবনায় মিল আছে তো?