ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের এটাই বিস্ময়। এখানে অনভিষিক্ত কোনো আড়ালে থাকা লাইমলাইটহীন ক্রিকেটারও চাইলে নিজের সামর্থ্য দিয়ে আলোটা কেড়ে নিতে পারেন। ২০২২ সালেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বেশ কয়েকজন অনভিষিক্ত ক্রিকেটার পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে এতটাই উজ্জ্বল ছিলেন যে, তাঁরা দ্রুত ভারতের জাতীয় দলেও চলে আসতে পারেন।
সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলে দুটো নতুন দলের উত্থানের সাথে নতুন নতুন ক্রিকেটারদের জন্য আরও বেশি সম্ভাবনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এমনকি এই সুযোগ বেওয়াল্ড ব্রেভিসের মতো কিছু বিদেশি ক্রিকেটারের ভাগ্যও খুলেছে। কিছু ক্রিকেটার ভালো খেলে ফ্রাঞ্চাইজিদের কাছে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে এসেছেন। তাদের নিয়ে চাইলে দিব্যি একটা একাদশই বানিয়ে ফেলা যায়, সেটাও কেবল অনভিষিক্ত ভারতয়ি ক্রিকেটারদের নিয়েই।
- রাহুল ত্রিপাঠি
২০২২ এর আইপিএল রাহুল ত্রিপাঠির জন্য একটি দুর্দান্ত মৌসুম ছিল। তিন নম্বরে ব্যাট করতে গিয়ে তিনি মোট ৪০০ রান করেন। তার ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক দিকটি ছিল তার স্ট্রাইক রেট, যা হলো প্রায় ১৫৮। তিনি অধিনায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন এবং ভবিষ্যতে নেতৃত্বের যোগ্যতা রাখেন।
- যশস্বী জ্যাসওয়াল
সাবেক অনূর্ধ্ব ১৯ তারকা যশস্বীও একজন ওপেনিং ব্যাটার। আইপিএল জার্নির শুরুটা অতটা চমকপ্রদ না হলেও, তিনি ঘুরে দাড়িয়েছিলেন। ফিরে এসে কয়েকটি ভালো সরবরাহ দিয়েছেন।
- রজত পাতিদার
দল প্লে অফে পৌঁছানোর পরে রজত পতিদার আরসিবি–র তারকা বনে গিয়েছিলেন। এলিমিনেটরে সেঞ্চুরি উপহার দিয়ে দলকে একাহাতে জিতিয়েছেন এই ক্রিকেটার। ক্যারিয়ারের প্রথম মৌসুম হওয়া সত্ত্বেও তিনি ব্যাটিং দ্যুতি ছড়িয়েছেন।
- তিলক ভার্মা
সর্বশেষ আইপিএলের এই মৌসুমে মোট ৩৯৭ রান করেন তিলক। মুম্বইয়ের পরাজয় সত্ত্বেও তরুণ খেলোয়াড় তিলক ভার্মা তাঁর ব্যাটিং দিয়ে ভক্তদের মন জয় করেছেন।
- জিতেশ শর্মা (উইকেটরক্ষক)
পাঞ্জাব কিংসের ব্যাটিং লাইন আপে জিতেশ শর্মা ছিলেন দুর্দান্ত নির্বাচন। লোয়ার মিডল-অর্ডারে কিছু চমৎকার জুটি গড়ে তিনি এটি প্রমাণ করেছেন। তাছাড়া উইকেট কিপিং এর দক্ষতা তো আছেই তাঁর ঝুলিতে।
- শাহবাজ আহমেদ
অনভিষিক্ত একাদশে শাহ্বাজ আহমেদ থাকবেন অল-রাউন্ডার হিসেবে। পশ্চিমবঙ্গের এই অলরাউন্ডার ব্যাটিং–বোলিং উভয় বিভাগেই সম্মান দক্ষতা দেখিয়েছেন। আইপিএল-২২ এর প্রথমার্ধে তিনি বেশি সাফল্য পেয়েছিলেন।
- রাহুল তেওয়াতিয়া (অধিনায়ক)
রাহুল তেওয়াতিয়া যদিও খুব বেশি বোলিং করেননি, কিন্তু তিনি এই মৌসুমের অন্যতম সেরা ফিনিশার ছিলেন। তিনি গুজরাটকে অসম্ভাব্য পরিস্থিতি থেকে বেশ কয়েকবার টেনে তুলে জিততে সাহায্য করেছিলেন। আইপিএলের প্রতিটি মৌসুমেই তিনি ভালো ব্যাটিং দিয়ে নাম কুড়িয়েছেন। ভারতের স্কোয়াডে আগেও তিনি জায়গা পেয়েছিলেন, ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। হয়তো, ভবিষ্যতে সুযোগও মিলবে।
- সাঁই কিশোর
আইপিএলের একদম শেষার্ধে গুজরাট টাইটানের একাদশে আসেন সাই কিশোর। তবে দুর্দান্ত বোলিং এর জন্য তিনি তার জায়গা পাকা করে রেখেছেন।
- মহসিন খান
মহসিন খানকে আইপিএলের এই সিজনের একটি আবিষ্কার বলা যায়। তিনি লখনউ সুপার জায়ান্টস এর হয়ে খেলেছেন। তিনি পাওয়ারপ্লেতে খুব ভালো বোলিং করেন।
- আর্শদ্বীপ সিং
আইপিলের সর্বশেষ আসরে আর্শদ্বীপ ভালো পারফর্ম করেছেন। বিশেষ করে ডেথ ওভারে তিনি ছিলেন অনন্য। এর কারণে, তিনি এ বছর ভারতীয় জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন।
- উমরান মালিক
উমরান মালিকও আর্শদীপ এর মতো সম্প্রতি ভারতীয় জাতীয় দলে নাম লিখিয়েছেন। এবার দেখার পালা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কেমন ভূমিকা রাখতে পারেন তিনি! তাঁকে ঘিরে অবশ্য আশার শেষ নেই ভারতের। গতির ঝড় তুলে এরই মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তিনি।