বাংলা টাইগার্সের হয়ে আজ সারাদিনে নাঈমের আর ব্যাটিং করতে নামা হয়নি। তবে আগামীকাল তার উপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশ টাইগার্সের ভাগ্য। সেজন্যই আজ দিনের খেলা শেষ হলেও রাজশাহীতে তখনো সূর্য ডুবেনি। সারাদিনের উত্তাপ শেষ তখন খানিকটা তেজ হারিয়েছে। সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ইমরুল কায়েসকে নিয়ে ব্যাট করতে নেমে গেলেন নাঈম ইসলাম।
ইমরুল কায়েস অবশ্য নাঈমের সাথে ব্যাট করেননি। নেটে নাঈমকে বোলিং করছিলেন ইমরুল কায়েস। ম্যাচ শেষে প্রায় আধা ঘন্টার মত ব্যাটিং করেছেন নাঈম ইসলাম। এই পুরো সময়টাতেই নাঈমকে বোলিং করে গিয়েছেন ইমরুল কায়েস। নেটে নাঈমকে বিশাল বিশাল সব শট খেলতেই দেখা যায়।
যদিও আগামীকাল সকালে ছক্কা নাঈমকে বাংলাদেশ টাইগার্সের হাল ধরতে হবে। কেননা আজ সারাদিন ব্যাটিং করা সৌম্য আউট হয়ে গিয়েছেন। ফলে দলের স্কোর বড় করতে হলে আগামীকাল এই নাঈমই ভরসা। ওদিকে গতকাল ফিল্ডিং করার সময় বলের আঘাত পেয়েছিলেন এই ক্রিকেটার। সাথে সাথে তাকে হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর ব্যান্ডেজ করে আবার মাঠে এসেছিলেন তিনই।
তবে আঘাতটা মাথার দিকে হওয়ায় তার এই ম্যাচে আবার মাঠে নামা নিয়ে ছিল সংশয়। তবে আজ নেটে নাঈমকে ব্যাটিং করতে দেখে সস্তির নিশ্বাসই পড়েছে বাংলাদেশ টাইগার্সের ড্রেসিং রুমে। সবমিলিয়ে বাংলা টাইগার্সের এই ক্যাম্পে নিজেকে নিয়ে বেশ ভালোভাবেই কাজ করেছেন এই অলরাউন্ডার। মূলত ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেই এই ক্যাম্পে ডাক পেয়েছিলেন নাঈম।
এছাড়া খবরের শিরোনামে তিনি সব সময়ই ছিলেন। ছিলেন না কেবল কোনো কাঠামোতে। কোনো এক অদ্ভুত কারণে দারুণ পারফরম্যান্স থাকার পরও লম্বা সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নিয়ন্ত্রিত কোনো দলে তাঁর ঠাঁই হয়নি। তবে, এবার সেই অচলায়তনটা ভাঙল। একটু দেরিতে হলেও বিসিবি স্মরণ করেছে নাঈম ইসলামকে। জাতীয় দলের ছায়া দল হিসেবে পরিচিত বাংলা টাইগার্স ক্যাম্পে ডাকা হয় বর্ষীয়ান এই ক্রিকেটারকে।
সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। আসরের দ্বিতীয় রান সংগ্রাহক ব্যাটার তিনি। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে ১৫ ম্যাচ খেলে করেছেন ৮৫৯ রান। পেয়েছেন দুটি সেঞ্চুরি ও পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরি। ব্যাটিং গড় ৬৬.০৭। স্ট্রাইক রেট ৭৬.২৮। এর আগে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও রানের মধ্যেই ছিলেন। এই পারফরম্যান্সেরই পুরস্কার পেলেন তিনি এবার।
সর্বশেষ নাঈম যখন জাতীয় দলে খেলেন তখনও ছিলেন সেরা পারফরমারদের একজন। ২০১২ সালে শেষ টেস্ট খেলেন। এর ঠিক আগেই যে টেস্ট ম্যাচটা খেলেন, সেখানেই মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পান ক্যারিয়ারের একমাত্র আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির দেখা। সর্বশেষ ওয়ানডে ২০১৪ সালের মার্চে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই ম্যাচেও ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন। ২০১৩ সালে খেলা শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৭ বলে করেন ১৮ রান। ফলে, পারফরম্যান্সে তাঁর কোনো ঘাটতি ছিল – সেটা বলা যাবে না। বরং টিম কম্বিনেশনের জন্য বাদ পড়েছেন। আর ফেরা হয়নি। অথচ, এই আট-নয় বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের পর রান করে গেছেন।
এখন বাংলা টাইগার্সের হয়ে তার প্রমাণের পালা। বাংলা টাইগার্স ও হাই পারফর্মেন্সের এই ম্যাচের দিকেও বিশেষ নজর রাখছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এমনকি দুই নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন ও আব্দুর রাজ্জাকও রাজশাহীতে বসে ম্যাচটি দেখছেন। ফলে নাঈমের সামনে কাল বড় সুযোগ নিজেকে আরেকবার যোগ্য প্রমাণ করার।