পেসারদের ইনজুরি আর এবারের এশিয়া কাপ দুটো যেন সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাসপ্রীত বুমরাহ, শাহীন শাহ আফ্রিদি, দুষ্মন্থ চামিরা, হাসান মাহমুদদের ইনজুরির কারণে অনুপস্থিতি কিছুটা হলেও হতাশ করেছে এশিয়ার ক্রিকেটপ্রেমীদের।
তবে, বাকিদের তুলনায় পাকিস্থান আছে কিছুটা বেকায়দায়, তাদের সেরা পেসার আফ্রিদির পাশাপাশি মোহাম্মদ ওয়াসিম আর নাসিম শাহও পড়েছেন ইনজুরির কবলে। এমতাবস্তায় কোনো ব্যাকাপ পেসার ছাড়াই পুরো টুর্নামেন্ট শেষ করার ঝুঁকিতে আছে বাবর আজমের দল।
শাহীন শাহ আফ্রিদিকে পাওয়া যাবে না জেনেই একাদশ পাকিস্থান কোচ সাকলায়েন মুশতাক এবং অধিনায়ক বাবর আজম। তার বদলে দলে ডেকে নিয়েছিলেন মোহাম্মদ হাসনাইনকে। টুর্নামেন্ট শুরুর একদিন আগে ইনজুরির থাঁবায় ছিটকে যান আরেক পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিম।
এমন সময়ে এই দু’টো ইনজুরির খবর আসে – যখন এশিয়া কাপের একাদশ ও পরিকল্পনা সব গুছিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে, পাকিস্তান স্বস্তিতে নেই। এমনিতেই প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দী ভারতের কাছে হেরে কিছুটা ব্যাকফুটে আছে পাকিস্থান। সব মিলিয়ে একটা বাজে রকমের জগাখিচুড়ি অবস্থা।
মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে সেই ম্যাচে ইনজুরিতে পড়েন দলের সেরা পেসার নাসিম শাহ। দলের পেসার সংকট এতটাই তীব্র ছিল যে একপর্যায়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ওভার শেষ করেন নাসিম। যদিও বাঁচাতে পারেননি দলকে, হার্দিক পান্ডিয়ার ম্যাজিকে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।
ম্যাচ হারলেও সেদিন প্রশংসিত হয়েছিল তরুণ নাসিম শাহের বোলিং। দুবাইয়ের মরা পিচে রীতিমতো আগুন ঝরিয়েছেন এই পেসার। তার ইনজুরি রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে পাকিস্থান ম্যানেজমেন্টকে। দলে এখন ফিট পেসার আছেন মাত্র চারজন – হারিস রউফ, শাহনওয়াজ দাহানি, মোহাম্মদ হাসনাইন, হাসান আলি। এর মাঝে শেষের দুজন দলে আসেন বাকিদের ইনজুরিতে সুবাদে।
অর্থাৎ এরা দু’জন কোনোভাবেই টিম ম্যানেজমেন্টের প্রথম পছন্দ ছিলেন না। একপ্রকার বাধ্য হয়েই তাদের দলে নিতে হয়েছে। দাহানি আর হাসনাইন দুজনেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নতুন মুখ, অভিজ্ঞ হাসান আলি তো বাজে ফর্মের কারণে দলের বাইরে ছিলেন। হারিস রউফও ঠিক নিজের ছন্দে নেই, দেদারসে রান দিয়েছেন ভারতের সাথে ম্যাচে।
হংকং এর বিপক্ষে ম্যাচে তাই পাকিস্থানকে নির্ভর করতে হবে বেঞ্চের পেসারদের উপর। সে ম্যাচে সহজ প্রতিপক্ষ বিবেচনায় উতরে গেলেও পাকিস্তানকে মূলত কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে টপ ফোরে। হংকংয়ের বিপক্ষে নতুন কোনো ইনজুরি হলে দল সাজানোই কষ্টকর হয়ে যাবে পাকিস্থানের জন্য।
হয়তো হংকং পাকিস্তানের জন্য বড় কোনো সমস্যা হবে না। হয়তো পাকিস্তান সহজেই চলে যাবে সুপার ফোরে। তবে, সংকট অন্য জায়গায়। এভাবে ইনজুরি হতে থাকলে পরের রাস্তাটা কঠিন হতে থাকবে দলটির।
প্রথম সারির পেসারদের ছাড়া ফাইনালের পথটা তাই অনেক দূরেরই মনে হওয়ার কথা বাবর আজমের দলের। প্রতিকূল পরিস্থিতিই জন্ম দেয় নতুন নায়কের আবির্ভাবের, দেখা যাক পাকিস্তানের উত্তরণের নতুন পথের সারথী হন কোন পেসার ।